স্ত্রীর পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত পলান সরকার

    সাহিত্য মেইল : স্ত্রীর কবরের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন একুশে পদক প্রাপ্ত ‘বইওয়ালা’ পলান সরকার। আজ শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। এর আগে সকালে রাজশাহীর বাঘা উপজেলার হারুনুর রশিদ শাহ দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে পলান সরকারের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।

    জানাজার আগে জেলা প্রশাসক এসএম আব্দুল কাদের ও জেলা পুলিশ সুপার মো. শহীদুল্লাহসহ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের উদ্যোগে তার মরদেহে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়। একুশে পদকপ্রাপ্ত বইপ্রেমী পলান সরকার শুক্রবার দুপুরে ৯৮ বছর বয়সে বাঘার বাউসায় নিজ বাড়িতে বার্ধক্যজনিত কারণে মারা যান।

    সামাজিকভাবে অবদান রাখার জন্য ২০১১ সালে তিনি রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ সম্মান ‘একুশে পদক’ পান। পলান সরকার রাজশাহী জেলার ২০টি গ্রামে গড়ে তুলেছিলেন অভিনব শিক্ষা আন্দোলন।

    নিজের টাকায় বই কিনে তিনি পড়তে দিতেন পিছিয়ে পড়া গ্রামের মানুষকে। প্রতিদিন ভোরে ঘুম থেকে উঠে কাঁধে ঝোলাভর্তি বই নিয়ে বেরিয়ে পড়তেন। মাইলের পর মাইল হেঁটে একেকদিন একেক গ্রামে যেতেন। বাড়ি বাড়ি কড়া নেড়ে আগের সপ্তাহের বই ফেরত নিয়ে নতুন বই পড়তে দিতেন। এলাকাবাসীর কাছে তিনি পরিচিত ‘বইওয়ালা দুলাভাই’ হিসেবে।

    পলান সরকার ১৯২১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর নাটোর জেলার বাগাতিপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার আসল নাম হারেজ উদ্দিন। ২০১৪ সালের ২০ সেপ্টেম্বর ‘ইমপ্যাক্ট জার্নালিজম ডে’ উপলক্ষে সারা বিশ্বের বিভিন্ন ভাষার দৈনিকে তার উপর প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

    পলান সরকার মৃত্যুকালে ছয় ছেলে, তিন মেয়ে ও নাতি-নাতনিসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। এর আগে গত ২১ ডিসেম্বর তার স্ত্রী রাহেলা বেগম (৮৫) মারা গেছেন। ছেলে হায়দার আলী জানান, বার্ধক্যজনিত রোগে কিছু দিন ধরে তার বাবা শয্যাশায়ী ছিলেন। শনিবার সকাল ১০টায় বাউসা গ্রামে তার নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

    তার মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

    আরো : পলান সরকার আর নেই

    বিএম/রাজীব…