বীচের কাঁকড়া খেয়ে প্রিমিয়ারের ছাত্রের মৃত্যু! অসুস্থ একজন হাসপাতালে

    চট্টগ্রাম মেইল : নগরীর পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত (সি-বীচে) বেড়াতে গিয়ে ভ্রাম্যমান দোকানের কাঁকড়া ভাজা খেয়ে এক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় গুরুতর অসুস্থ হয়ে নগরীর শিশু হাসপাতালের আইসিউতে চিকিৎসাধীন আছেন। তার অবস্থাও আশংকাজনক বলে জানা গেছে।

    নিহত শিক্ষার্থীর নাম মাহফুজুর রহমান (২২)। তিনি নগরীর চান্দগাঁও থানার বহদ্দারহাট এক কিলোমিটার এলাকার বাসিন্দা এবং প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। সে তার বাবা মায়ের একমাত্র সন্তান বলে জানা গেছে।

    শুক্রবার রাত ৮টার দিকে নগরীর আগ্রাবাদস্থ মা ও শিশু হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় গুরুত্বর আসুস্থ মাহফুজুর রহমানের অপর এক বন্ধু শিশু হাসপাতালের আইসিইউতে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রয়েছে।

    রাতে মাহফুজের মৃত্যুর পর বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলেও পুলিশ জানায় তারা এ ব্যাপারটি সম্পর্কে কিছুই জানে না।

    শনিবার (২০ এপ্রিল) জোহরের নামাজের পর নগরীর বহদ্দারহাট এক কিলোমিটারে ইসমাইল হাজি জামে মসজিদে মাহফুজের জানাজা অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছে একটি সুত্র।

    নিহতের পরিচিত সালাউদ্দিন সিকদার শিবলু তার ফেসবুক আইডিতে জানিয়ে লিখেছেন, শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) বিকালে দুই বন্ধু সি-বীচে ঘুরতে গেলে সেখানকার এক দােকানে কাঁকড়া ভাজা খান। একটু পরই তাদের খারাপ লাগতে শুরু করে। শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায় মাহফুজের আর তার বন্ধুর নাকে মুখে ফেনা চলে আসে।

    সিএনজি বেবীটেক্সীতে করে তাদের দুজনকে দ্রুত আগ্রাবাদের মা ও শিশু হাসপাতালের আনার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক চিকিৎসক মাহফুজকে মৃত ঘোষণা করে। অন্যজন আইসিইউতে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ভর্তি আছে।

    তবে বিষাক্ত কাকঁড়া খেয়ে মৃত্যুর বিষয়ে সালাউদ্দিন শিকদার শিবলুর ওই পোস্টে অনেকে পক্ষে বিপক্ষে মতামত দিয়েছেন সুব্রত সেন নামে একজন লিখেছেন- কাকড়া কখনো বিষাক্ত হয় না। ওর (মাহফুজুর রহমান) এলার্জি ছিল, অইটা থেকে হইসে। যাদের এলার্জি আছে তাদের শরীর সামুদ্রিক প্রাণী নিতে পারে না। অনেক সাইড ইফেক্ট হয়। তার থেকেও বড় কথা, সে নিশ্চয়ই অন্য কিছু খেয়েছিল সাথে। কারন এলার্জি অবশ্যই ডেঞ্জারাস তবে তা মৃত্যু ডেকে আনে এমন সম্ভাবনা ১০%।  কাকড়া খেয়ে দুনিয়াতে কেউ মারা গেসে আমার ২৫ বছরের ইতিহাসে, আমার বাবার ৬০ বছরের ইতিহাসে কেউ শুনে নাই

    সিনিয়র সাংবাদিক এজাজ মাহমুদ পোষ্টটি শেয়ার করে লিখেছেন- কারো কারো মতে কাকড়া বিষাক্ত নয়। রান্নায় ব্যবহার করা উপাদানের বিষক্রিয়ায় যুবকের মৃত‌্যু হতে পারে। সী বীচের রাস্তার পাশের দোকানগুলোর খাওয়া স্বাস্থ্যসম্মত নয় বলে অনেকের অভিযোগ আছে।

    সাংবাদিক কাউসার খান বলেছেন, “পতেঙ্গায় আমারও একদিন কাঁকড়া খেয়ে খুব খারাপ লেগেছে। পুরো রাত ঘুমাতে পারিনি। পুরো শরীর ফুলে গিয়েছিল। রাতে চার বার গোসল করতে হয়েছে। তারপর ঘুমায়ে ছিলাম। ওদিন মনে করেছিলাম আমি মারা যাবো। বিপদজনক কাঁকড়া।”

    সাংবাদিক শামসুল হুদা মিন্টু বলেছেন, “বিষাক্ত কাঁকড়া খেয়ে মৃত্যুর ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। গত কয়েকমাস আগে ক’জন ব্যাংকার বন্ধু পতেঙ্গা এসে কাঁকড়া খেয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে একজন অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাৎক্ষণিকভাবে নগরীর মেডিকেল সেন্টারে আনা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।”

    এদিকে এ ব্যাপারে রাতে পতেঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উৎপল বড়ুয়ার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ ধরণের কোন অভিযোগ আমরা পায়নি।  কেউ আমাদের জানায়নি।

    বিএম/রাজীব..

    আরো খবর :: ব্রয়লার মুরগির মাংস খেয়ে একই পরিবারের ৭ জন হাসপাতালে