আজ রাতে বন্ধ হচ্ছে ২০ লাখ সিম

    বিএম ডেস্ক : বৃহস্পতিবার রাতে পাঁচটি অপারেটরের ২০ লাখ ৪৯ হাজার সিম বন্ধ করে দেওয়া হবে। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২টার পর নিষ্ক্রিয় করা হবে এই সিমগুলো।

    আর এই সিমগুলো হচ্ছে জাতীয় পরিচয়পত্রের বিপরীতে একজন গ্রাহকের নামে নিবন্ধন করা ১৫টির বেশির তালিকায় থাকা সিম। তবে করপোরেট গ্রাহকের ক্ষেত্রে সেটা প্রযোজ্য হবে না।

    বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) জানিয়েছে, একজনের জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার করে অসংখ্য সিম কেনার ফলে অপরাধ প্রবণতা তৈরি হচ্ছে। সেটা থেকে রক্ষা পেতে অতিরিক্ত সিম বন্ধ করা হচ্ছে।

    বিটিআরসি আরও জানিয়েছে, বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম নিবন্ধনের পর সকল গ্রাহকের তথ্য বিটিআরসি’র কাছে রয়েছে। কেন্দ্রীয় তথ্য ভাণ্ডারের মাধ্যমে জানা যাচ্ছে, একজনের এনআইডি দিয়ে কতটি সিম চালু করা হয়েছে।

    বিটিআরসির সিনিয়র সহকারী পরিচালক মো. জাকির হোসেন খান বলেন, ২৬ এপ্রিল মধ্যরাত থেকে এক এনআইডির ১৫টির বেশি সিম নিষ্ক্রিয় হয়ে যাবে।

    বিটিআরসি জানায়, অতিরিক্ত সিমের মধ্যে গ্রামীণফোনের চার লাখ ৬১ হাজার, বাংলালিংকের চার লাখ ৫৫ হাজার, রবি’র চার লাখ ১৯ হাজার এবং টেলিটকের চার লাখ ৮৭ হাজার সিম বন্ধ করা হবে।

    বিটিআরসি সর্বশেষ ব্যক্তি পর্যায়ে সিমের সর্বোচ্চ সংখ্যা নির্ধারণ করে দিয়ে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী একজন গ্রাহকের প্রি-পেইড, পোস্ট পেইড মোবাইল অপারেটর নির্বিশেষে সিম/রিমের সর্বমোট সংখ্যা ১৫ নির্ধারণ করা হয়েছে। এখন থেকে এই সীমার বাইরে কোনো গ্রাহক সিম নিবন্ধন করতে পারবেন না।

    এখন থেকে উক্ত সীমার বাইরে কোনো গ্রাহক (করপোরেট গ্রাহক ব্যতীত) সিম/রিম নিবন্ধন করতে পারবেন না। তবে গ্রাহকের সুবিধার্থে কোন সিমগুলো চালু রাখা হবে তার সুযোগ দিয়েছে বিটিআরসি।

    এ সংক্রান্ত নির্দেশনায় বলা হয়েছে, এরইমধ্যে যেসব গ্রাহক উক্ত সীমা (১৫টির বেশি) অতিক্রম করেছেন সেসব গ্রাহককে আগামী ২৬ এপ্রিলের মধ্যে সংশ্লিষ্ট মোবাইল ফোন অপারেটরের কাস্টমার কেয়ার সেন্টারে নিজে হাজির হয়ে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে অতিরিক্ত সিম/রিম নিষ্ক্রিয় করার জন্য অনুরোধ করা যাচ্ছে।

    উক্ত সময়সীমার পর সব গ্রাহকের সর্বোচ্চ সীমার অতিরিক্ত সিম/রিম কমিশন নির্ধারিত পদ্ধতির ভিত্তিতে বন্ধ করে দেয়া হবে। প্রয়োজনীয় সিম বন্ধ হওয়ার আগেই সিমের সংখ্যা নির্ধারিত সীমার মধ্যে নিয়ে আসার অনুরোধ জানিয়েছে বিটিআরসি।

    বিটিআরসি জানায়, এখন থেকে নির্ধারিত সীমার বাইরে কোনো গ্রাহক (করপোরেট গ্রাহক ছাড়া) সিম নিবন্ধন করতে পারবেন না। করপোরেট গ্রাহকের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র কোনো প্রতিষ্ঠানের পক্ষে উক্ত প্রতিষ্ঠানের জন্য সিম/রিম ক্রয়ের জন্য অনুমোদিত ব্যক্তি (পয়েন্ট অব কন্টাক্ট) উক্ত সর্বোচ্চ সীমার আওতামুক্ত থাকবেন।

    নিবন্ধিত সিমের সংখ্যা জানারও সুযোগ করে দিয়েছে বিটিআরসি। গ্রাহক তার নামে কতসংখ্যক সিম রয়েছে তা *১৬০০১# ডায়াল করে ফিরতি রিপ্লাই অনুসরণ করে বিনামূল্যে সংখ্যা জানা যাবে।

    ২০১৬ সালের ১২ জুন সরকারের নির্দেশনায় গ্রাহক প্রতি ২০টি সংযোগ নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছিল। পরবর্তীতে এই সংখ্যা কমিয়ে ৫টি নির্ধারণ করে সরকার। এরপর ২০১৭ সালে ১৫টি নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছিল।

    বিটিআরসির সর্বশেষ মার্চের হিসেবে দেখা গেছে দেশে মোট ১৫ কোটি ৯৭ লাখ ৮০ হাজার সিমের মধ্যে গ্রামীণফোনের ৭ কোটি ৪০ লাখ ৫৩ হাজার, রবির ৪ কোটি ৭৩ লাখ ৪১ হাজার, বাংলালিংকের ৩ কোটি ৪৩ লাখ ৭২ হাজার এবং টেলিটকের ৪০ লাখ ১৪ হাজার সিমের গ্রাহক রয়েছে।

    বিএম/রনী/রাজীব