মালদ্বীপে আজ পবিত্র জুমাতুল বিদা ও লাইলাতুল কদর

    মোহাম্মদ মাহামুদুল হাসান কালাম,মালদ্বীপ প্রতিনিধি : পবিত্র জুমাতুল বিদা আজ। রমজান মাসের শেষ জুমাবার। অধিক ফজিলতপূর্ণ একটি দিন। ইসলামী চিন্তাবিদদের মতে, সপ্তাহের দিবসসমূহের মধ্যে শুক্রবার সর্বশ্রেষ্ঠ। রমজানের জুমাগুলো অন্যান্য জুমার দিবস অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ। রমজানের প্রতিটি দিন তার আগের দিন অপেক্ষা অধিক ফজিলতপূর্ণ। তাই রমজানের শেষ জুমা সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যমন্ডিত। জুমাতুল বিদার মাহাত্ম অত্যধিক। রমজান মাসের সর্বোত্তম দিবস হলো জুমাতুল বিদা।

    মালদ্বীপের রাজধানী মালে জাতীয় Masjid Al Sultan Muhammad Thakurufaanu Al Auzam Grand মসজিদে জুমাতুল বিদার নামাজে বিপুলসংখ্যক মুসল্লি নামাজ আদায় করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
    মালদ্বীপ সহ মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশে আজ জুমাতুল বিদা ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা মাসব্যাপী সিয়াম সাধনায় আজ শেষ শুক্রবার জুমার নামাজ আদায় করে মাহে রমজানকে বিদায় সম্ভাষণ জানাবেন।
    এদিকে রমজানের শেষ জুমাবারকে সারাবিশ্বের মুসলমানরা আল কুদ্স দিবস হিসেবেও এ দিনটি পালন করে থাকেন। তাদের মতে, এ দিনটি মুসলমানদের কাছে বিশেষ তাৎপর্য এ জন্য যে, এদিনে আল্লাহর নবী হযরত দাউদ (আ.)-এর পুত্র হযরত সুলাইমান (আ.) জেরুজালেম নগরী প্রতিষ্ঠা করেন। আল্লাহর মহিমা তুলে ধরতে তিনি সেখানে মুসলমানদের প্রথম কিবলা মসজিদ আল-আকসা পুনর্নির্মাণ করেন। মক্কার মসজিদে হারাম, মদিনার মসজিদে নববীর পর মুসলমানদের তৃতীয় পবিত্রতম স্থান হচ্ছে এই বায়তুল মোকাদ্দাস বা মসজিদ আল-আকসা।
    প্রতিবছর রমজান মাসের শেষ শুক্রবারে বিশ্বের মুসলমানরা ইসরাইলের কবল থেকে বায়তুল মোকাদ্দাসকে মুক্ত করার জন্য নতুন শপথ নিয়ে থাকেন। এজন্য রমজান মাসের শেষ শুক্রবারকে আল কুদ্স দিবসও বলা হয়। এদিনে বিশ্বের মুসলমানরা মুসলিম উম্মার ঐক্য, তাদের উন্নয়ন, আল কুদ্সের মুক্তির জন্য আল্লাহ্র দরবারে বিশেষ প্রার্থনা করে থাকে।
    আজ শুক্রবার শেষ জুমা যথাযোগ্য মর্যাদা ও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মাধ্যমে পালনের জন্য ধর্মপ্রাণ মুসলমান মসজিদের পানে ছুটবেন। শিশু থেকে বৃদ্ধ সবাই আল্লাহর সান্নিধ্য লাভ ও অধিক পুণ্যের আশায় মসজিদে হাজির হবেন। জুমার নামাজে শরিক হয়ে মহান সৃষ্টিকর্তার নিকট নিজেদের পাপমোচনের জন্য দোয়া করবেন। রমজান মাসকে কোরান নাজিলের মাস বলা হয়েছে। তাই এ মাসে অধিক পরিমাণ কোরান তেলাওয়াত করে থাকে সবাই,
    অন্যদিকে মালদ্বীপে আজ ২৬শে রমজান লাইলাতুলকদরের রাত্রি আমাদের দেশের নিয়ম অনুযায়ী, কিন্তু মালদ্বীপে রমজানের শেষ ১০ দিন প্রতিদিন রাত্রী ২টা থেকে ৩ট পযন্ত তাহাজ্জত নামাজ পরে কদরের রাত্রী তালাশ করে।
    আমাদের দেশে সাধারণত মানুষ শুধু রমযানের ২৭ তারিখ রাত জেগে ইবাদত বন্দেগী করে এবং এ রাতকেই লাইলাতুল কদর ধারণা করে। কিন্তু এ ধারণা, কিন্তু মালদ্বীপ সহ মধ্যপ্রাচ্যের অনেক দেশে শেষের দশ দিন রাত জেগে লাইলাতুলকদর তালাশ করে,
    আয়েশা (রা.) হতে বর্ণিত হাদীসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, “তোমরা রমযানের শেষ দশকের বেজোড় রাত্রিগুলোতে লাইলাতুল ক্বদর অনুসন্ধান করো।” (বুখারী)
    তবে শেষ সাত দিনের বেজোড় রাতগুলোতে লাইলাতুল কদর হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
    এ মর্মে আরও হাদীস রয়েছে। কোন কোন সালাফে-সালেহীন ২৭তম রাত লাইলাতুল কদর হওয়ার অধিক সম্ভাবনাময় বলে উল্লেখ করেছেন। সাহাবীগণের মধ্যে ইবনে আব্বাস (রা.), মুআবিয়া (রা.), উবাই ইবনে কা’ব (রা.) এর মতামত থেকে এটাই বুঝা যায়।
    কিন্তু নবীজি (সা.) থেকে এভাবে নির্দিষ্ট করে লাইলাতুল কদর হওয়ার কোন হাদীস নেই। তাই উপরোক্ত সাহবীদের কথার উপর ভিত্তি করে বড় জোর সাতাশে রাতে লাইলাতুল কদর হওয়াকে অধিক সম্ভাবনাময় বলা যেতে পারে। নিশ্চিতভাবে বলা সম্ভব নয়।
    লাইলাতুল কদর কখনো ২১, কখনো ২৩, কখনো ২৫, কখনো ২৭ আবার কখনো ২৯ রাতে হতে পারে।
    সুতরাং শুধু ২৭ তারিখ নয় বরং কোন ব্যক্তি যদি রমযানের শেষ দশকের উপরোক্ত পাঁচটি রাত জাগ্রত হয়ে ইবাদত-বন্দেগী করে তবে নিশ্চিতভাবে লাইলাতুল কদর পাবে। তাই তারা শেষের দিকে রাজ জেগে। লাইলাতুলকদর তালাশ করে।