সংবাদ সম্মেলন
    ওয়াসার ডিএমডির বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ : ভীত্তিহিন দাবি গোলাম হোসেনের

    চট্টগ্রাম মেইল : চট্টগ্রাম ওয়াসার উপ ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোলাম হোসেনের বিরুদ্ধে মুসল্লিদের উপর হামলার ইন্ধন ও সরকারি উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তার প্রভাব খাটিয়ে ২০ বছর ধরে স্থানীয় একটি মসজিদ এবং মাদ্রাসার সভাপতির পদ দখল করে রাখার অভিযোগ উঠেছে।

    তাছাড়া জামায়াত শিবিরের রাজনীতির সাথে সক্রিয় থেকে ফটিকছড়ি উপজেলার সুন্দরপুর ইউনিয়নের বড়ছিলোনিয়া হরিণাদিঘী মাদ্রাসায় জঙ্গি তৎপরতায় সহায়তা ও তাদের অর্থের যোগানদাতা হিসেবেও ডিএমডি গোলাম হোসেনের সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে অভিযোগে বলা হয়।

    বুধবার (১২ জুন) দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে এস রহমান হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন ফটিকছড়ি উপজেলার সুন্দরপুর ইউনিয়নের বড়ছিলোনিয়া হরিণাদিঘীর বাসিন্দা ও স্থানীয় ছাত্রলীগ রাজনীতির সাথে জড়িত কয়েকজন যুবক।

    সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সিরাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, ফটিকছড়ি উপজেলার সুন্দরপুর ইউনিয়নের বড়ছিলোনিয়া হরিণাদিঘী এলাকায় ঈদের দিন নামাজ পড়া না পড়াকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগ নেতার উপর হামলা চালিয়েছে কতিপয় জামায়াত শিবিরের ছেলেরা। চট্টগ্রাম ওয়াসার উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক (প্রশাসন) গোলাম হোসেনের নির্দেশে ফারুক নামে এক শিবির নেতা ছাত্রলীগ নেতা সায়মনের উপর হামলা চালিয়েছে বলে দাবি করে সিরাজ।

    সংবাদ সম্মেলনে শিরু আক্তার বলেন, ওয়াসার ডিএমডি গোলাম হোসেন প্রভাব খাটিয়ে ২০ বছর ধরে ওই এলাকার বায়তুল নুর জামে মসজিদের সভাপতি পদটি আঁকড়ে ধরে তার পছন্দের ঈমাম মাওলানা শামসুদ্দিনকে দিয়ে অর্থ আত্মসাৎ করে আসছে। বিষয়টি প্রত্যক্ষ হলে এলাকাবাসীর আপত্তিতে সামাজিক অনুদানে প্রতিষ্ঠিত মসজিদটি থেকে গত ৫ বছর আগে চাকরিচ্যুত করা হয় মাওলানা শামসুদ্দিনকে।

    কিন্তু মসজিদ কমিটির সভাপতি গোলাম হোসেন গত ঈদের দিন ওই ইমামকে দিয়ে আবারও নামাজ পড়ানোর চেষ্টা করলে এলাকাবাসীরা ক্ষিপ্ত হয়ে নামাজ পড়াতে বাধা দেন। ফলে গোলাম হোসেনের লোকজন স্থানীয় মুসল্লিদের ওপর হামলা চালায়।

    ঘটনার দিন হামলার শিকার সায়মন বলেন, চাকুরিচ্যুত ঈমামের পিছনে নামাজ পড়বোনা বলাতে গোলাম হোসেনের নির্দেশে শিবির নেতা ফারুক আমাকে ছুরিকাঘাতে আহত করে। তিনি বলেন, এ ঘটনার রেশ ধরে ঈদের পর দিন পরিকল্পিত ভাবে দা ছুরি লোহার রড নিয়ে গোলাম হোসেনের নির্দেশে ফটিকছড়ির সুন্দরপুর ইউনিয়ন যুবলীগ নেতা ইসমাইল হোসেন জুনুর উপরও সশস্ত্র হামলা চালায় শিবির নেতা কর্মীরা। বর্তমানে সে হাসপাতালে চিকিৎসাধিন।

    গোলাম হোসেনের বিরুদ্ধে জামায়াত ও শিবির সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে অভিযোগের সত্যতা জানতে চাইলে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছাত্রলীগ নেতা রাশেদ বলেন, সরকারের একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা হয়েও জামায়াতের শীর্ষনেতা কাদের মোল্লা এবং নিজামীর ফাঁসির রায়ের বিরুদ্ধে জামায়াতের পক্ষ নিয়ে মিছিল করেছেন গোলাম হোসেন। যেটা অত্যন্ত লজ্জাজনক। এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্ট সকল প্রশাসন অবগত আছেন।

    দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় এতোগুলো অনিয়ম জানা স্বর্ত্তেও কেউ কেন মুখ খুলেনি কিংবা হামলার ঘটনায় থানায় কেন অভিযোগ করেনি? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে ছাত্রলীগ নেতা সাজ্জাদ জানান, সরকারি উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তার প্রভাব খাটিয়ে এবং তার সন্ত্রাসী বাহিনীর চাটুকারিতায় থানা ও প্রশাসন তাদের নিয়ন্ত্রণ হয়ে গেছে। তবে বিষয়টি আমরা জনপ্রতিনিধিদের অবহিত করেছি। তারা আমাদের আশ্বস্থ করেছেন।

    সংবাদ সম্মেলনে অন্যন্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন হামলায় আহত মো. সাইমন, তার চাচা সিরাজুল ইসলাম, ছাত্রলীগ নেতা রাশেদ উদ্দিন, মো. সাজ্জাদ হোসেন, কামরুল হুদা, আনোয়ার হোসেন, কামাল উদ্দিন, মো. জাবেদ, দিদারুল আলম ও আলমনারা বেগম প্রমূখ।

    তবে সংবাদ সম্মেলনের সকল অভিযোগ ভিত্তিহীন উল্লেখ করে উল্টো সংবাদ সম্মেলন আয়োজকরাই ওইদিন মসজিদে হামলা চালিয়েছে বলে মন্তব্য করেন চট্টগ্রাম ওয়াসার উপ ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোলাম হোসেন। তাছাড়া মসজিদ মাদ্রাসাটির নিয়ন্ত্রণ নিতেই শিবির ও জঙ্গির তকমা লাগিয়ে তারা উদ্ভট অভিযোগ সৃষ্টি করছে বলে মন্তব্য তার।

    বিএম/রাজীব..