শিশু সজীবের বাকি দেহ উদ্ধার,পরিচয় মিলেছে গণপিটুনিতে নিহত যুবকের

    নেত্রকোনায় মাথা কাটা শিশু সজীবের (৮) বাকি দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে নেত্রকোনা পৌর শহরের কাটলী এলাকায় কায়কোবাদ খানের নির্মাণাধীন ভবনের তিনতলা থেকে শিশুটির বাকি দেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

    পরে সজিবের বাবাকে খবর দেওয়া হয়। তিনি এসে ছেলের মরদেহ শনাক্ত করেন।

    পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে থেকে একটি ধারালো কাটার (কাগজ কাটায় ব্যবহৃত হয়) উদ্ধার করেছে। ধারণা করা হচ্ছে এই কাটার দিয়েই তাকে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে।

    সজীবের মাথা ছিন্ন করে ব্যাগে নিয়ে যাওয়ার সময় যে যুবক গণপিটুনিতে নিহত হয়েছেন তাঁর পরিচয় মিলেছে।

    নিহত যুবকের নাম রবিন (২২)। পেশায় রিকশাচালক রবিন নেত্রকোনা পৌর শহরের কাটলি এলাকার একলাছ উদ্দিনের ছেলে। অন্যদিকে নিহত সজীবের পরিবারও একই এলাকার একটি বাসায় ভাড়া থাকে। সে আরেক রিকশাচালক রইছ উদ্দিনের ছেলে। রইছের গ্রামের বাড়ি জেলার বারহাট্টা উপজেলার সাহতা গ্রামে।

    গণপিটুনিতে নিহত যুবক রবিন

    সজীব আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা থেকে কাটলি এলাকার ভাড়াবাসা থেকে নিখোঁজ ছিল।

    নেত্রকোনা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাজুল ইসলাম ও স্থানীয় লোকজন জানান, আজ দুপুর ১টার দিকে শহরের কাটলি এলাকা দিয়ে রবিন হাতে ব্যাগ নিয়ে দৌঁড়াচ্ছিলেন। এলাকায় তাঁকে নতুন মনে করে স্থানীয় লোকজন তাঁর নাম-পরিচয় জানতে চান। রবিন আমতা আমতা করতে থাকলে লোকজন জিজ্ঞাস করেন, তাঁর ব্যাগের ভেতরে কী আছে? রবিন বলেন, তাঁর ব্যাগের ভেতরে ভাঙারির জিনিস আছে। তাঁকে সন্দেহ হলে ওই ব্যাগটি দেখতে চায় স্থানীয়রা। কিন্তু তিনি ব্যাগটি না দেখাতে চাইলে স্থানীয়রা ব্যাগ নিয়ে টানা-হেঁচড়া করতে থাকে। একপর্যায়ে ব্যাগের ভেতর থেকে শিশুর কাটা মাথা ছিটকে পড়ে।

    এর পরই রবিনকে ধাওয়া দেয় লোকজন। একপর্যায়ে শহরের নিউটাউন এলাকার অনন্তপুকুর পাড়ে তাঁকে পিটুনি দেয় এলাকাবাসী। এতে ঘটনাস্থলেই রবিনের মৃত্যু হয়।

    পরে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে সজীবের কাটা মাথা ও রবিনের লাশ উদ্ধার করে নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালে পাঠায়।

    অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আশরাফুল আলম জানান, শিশুটিকে কোথায় হত্যা করা হয়েছে তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। কতজন এই হত্যায় জড়িত তাও জানা যায়নি। কেন এই হত্যাকাণ্ড তা বের করতে পুলিশ তদন্তে নেমেছে। এ ঘটনায় কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।

    বিএম/এমআর