ছাগল ছিনতাই মামলার প্রধান আসামি থানা ছাত্রলীগ সভাপতি

    ছাগল ছিনতাইয়ের অভিযোগে ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। এ ঘটনায় মোহাম্মদপুর থানার ছাত্রলীগ সভাপতি মুজাহিদ আজমী তান্নাসহ মোট নয়জনকে আসামি করা হয়েছে। অভিযুক্তরা সবাই ক্ষমতাসীন দলের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত বলে জানা গেছে।

    এ বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গণেশ গোপাল বিশ্বাস (জিজি বিশ্বাস)।

    এদিকে মামলার আসামি মোহাম্মদপুর থানার ছাত্রলীগ সভাপতি মুজাহিদ আজমী তান্নার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার ফোন নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়।

    ওসি জানিয়েছেন, ঈদের আগের দিন (গত ১১ আগস্ট) সাইফুল ইসলামসহ যশোরের বেশ কয়েকজন ছাগল ব্যবসায়ী ২১২টি ছাগল নিয়ে ঢাকায় আসেন। মোহাম্মদপুরে ঢোকার পর তাদেরকে জিম্মি করা হয়। সেই সঙ্গে তাদের ছাগলগুলো আটকে দেয়া হয়। এ ঘটনায় মোহাম্মদপুর থানায় পৃথক দুটি মামলা হয়েছে। র‍্যাব পুলিশের কাছে মামলাটি হস্তান্তর করেছেন বলে জানিয়েছেন তিনি। এরমধ্যে ছাগল ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম চাঁদার দাবিতে ছাগল ছিনতাইয়ের অভিযোগে একটি মামলা করেছেন।

    মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গত ১১ আগস্ট একদল ব্যবসায়ী যশোরের বারোবাজার পশুরহাট ও ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ থেকে ছোটবড় বিভিন্ন রঙের মোট ২১২টি ছাগল নিয়ে বিক্রির উদ্দেশে রাজধানীতে আসেন। ছাগলসহ ট্রাকটি ঢাকার মোহাম্মদপুরের বাবর রোডের জহুরি মহল্লা এলাকায় পৌঁছালে তাদের আটকে চাঁদা দাবি করে স্থানীয় ছাত্রলীগের কয়েকজন কর্মী। বাদানুবাদের এক পর্যায়ে ছাগলগুলোকে ট্রাক থেকে নামিয়ে একটি ক্লাব ঘরে ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম, বাবু খান, শেখ সোলেমান, মো. নুরুজ্জামান, ফারুক বিশ্বাস, মোহাম্মদ মাসুদ মণ্ডলকে আটকে রাখেন।

    এ সময় র‌্যাব-২ এর একটি টহল দল নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে অনুমোদনহীন পশুর হাট তদারকি ও ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করছিল। খবর পেয়ে দলটি ঘটনাস্থলে যায় ও জিম্মিদশা থেকে ব্যবসায়ীদের উদ্ধার করে। ভুক্তভোগীরা তিন ছিনতাইকারীকে শনাক্ত করেন। তারা হলেন- ইয়াসির আরাফাত, জাহিদুল ইসলাম ও মো. রায়হান।

    র‌্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে হাতেনাতে আটকরা জানায়, এ ছিনতাইচেষ্টার ঘটনার মূলে ছিলেন মোহাম্মদপুর থানার ছাত্রলীগ সভাপতি মুজাহিদ আজমী তান্না। এছাড়া জসিম (২২), ইয়াসির আরাফাত (২৮), রায়হান (২৭), জাহিদ (২৯), রাতুল (২২), তানভীর (২০), হীরা (২০), তন্ময় (২৫) ও পারভেজ নামে কয়েকজনের নাম জানায় তারা। তাদের সঙ্গে আরও ৫-৬ জন জড়িত। অভিযুক্তরা লাইসেন্স ছাড়া অবৈধভাবে ওয়াকিটকি ব্যবহার করছিলেন এবং নিজেদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য বলে পরিচয় দিয়ে আসছিলেন।

    মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিজি বিশ্বাস বলেন, ওই ঘটনায় র‌্যাব-২ এর পক্ষ থেকে একটি টেলিযোগাযোগ আইনে মামলা হয়েছে। আর চাঁদার দাবিতে জিম্মি করে ছাগল ছিনতাই চেষ্টার ঘটনায় পৃথক আরেকটি মামলা হয়েছে। তিনজনকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেফতারে চেষ্টা চলছে।

    বিএম/এমআর