সীতাকুণ্ডের সুস্বাদু লাল পেয়ারা রপ্তানি হচ্ছে বিদেশে

    কামরুল ইসলাম দুলু, সীতাকুণ্ড প্রতিনিধি : সীতাকুণ্ড উপজেলার বাড়বকুণ্ডের পাহাড়ে উৎপাদিত সুস্বাদু লাল পেয়ারা এখন দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে। সীতাকুণ্ডে পেয়ারা চাষ করেই এখানকার অধিকাংশ মানুষের জীবণ-জীবিকার একমাত্র অবলম্বন।

    বাড়বকুণ্ড এলাকার প্রায় ২০ কিলোমিটার পাহাড়ী অঞ্চল জুড়ে গড়ে উঠেছে পেয়ারা বাগান। অনেকে বংশানুক্রমিক পাহাড়ে পেয়ারা চাষ করে আসছে। আষাঢ় থেকে ভাদ্র-এই তিন মাস এলেই চাষিদের চোখে-মুখে আনন্দের চিহ্ন দেখা যায়। এখানকার লোকজন পেয়ারা চাষ করে বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখছে। সরকারি উদ্যোগ ও সহযোগিতায় এখানকার পেয়ারা চাষীরা দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারবে।

    সীতাকুণ্ডে দুই ধরনের পেয়ারার চাষ হলেও বাড়বকুণ্ডের লাল পেয়ারা চাষে কৃষকদের উৎসাহ বেশি। স্থানীয় চাষীদের ভাষায় এই পেয়ারার নাম ‘আঞ্জির পেয়ারা’। এই পেয়ারার বৈশিষ্ঠ্য হচ্ছে, বাইরে হলুদ অথবা সবুজ আর ভেতরটা লালচে গোলাপী, আকারে খুব একটা বড়না হলেও স্বাদে অতুলনীয়। যে কোনো পেয়ারাতেই ভিটামিন ‘সি’ থাকলেও লাল পেয়ারায় ‘সি’ এর সাথে অতিরিক্ত আছে ভিটামিন ‘এ’।

    প্রায় ২০ কিলোমিটার পাহাড়ি এলাকায় পেয়ারার চাষ হলেও একমাত্র বাড়বকুণ্ড এলাকায় স্বল্প পরিসরে চাষ হওয়া লাল পেয়ারার সু-স্বাদু আর নজরকাড়া রঙের কারণে ইতোমধ্যে খ্যাতিলাভ করেছে।

    কৃষিবিদদের মতে, লাল পেয়ারা একটি বিশেষ প্রজাতির পেয়ারা, তাই আর্কষণীয়। আর চাষীদের কথায়, চাহিদা এবং লাভ দুটোই আছে তাই চাষ করি। বাড়বকুণ্ড পাহাড়ে গেলে বাগানে চাষীদের ব্যস্ততা দেখে মনে হয় সারাদেশেই যদি লাল পেয়ারা চাষ হতো এই পেয়ারা রফতানি করেই দেশ হয়ত কোটি কোটি টাকা আয় করত।

    বাড়বকুণ্ডের লাল পেয়ারাকে ঘিরে এখানকার বাজারগুলো জমজমাট থাকে। খুব ভোরে চট্টগ্রাম মহানগরীর অবস্থানের কারণে সেখান থেকে পাইকাররা এসে এই পেয়ারা নিয়ে যায়। শুধু মহানগরীর নয়, আশপাশের অনেক উপজেলা এমনকি বাস-ট্রেনেও হকারদের বাড়বকুন্ডর ‘লাল পেয়ারা’ বলে চিৎকার করে পেয়ারা বিক্রি করতে দেখা যায়।

    উপজেলার বাড়বকুণ্ড, মোহন্তের হাট, শুকলাল হাট, কুমিরা বাজার ও দারোগারহাট বাজার সরেজমিনে দেখা যায়, প্রতিদিন ভোর থেকে চাষিরা দলে দলে বাগান থেকে পেয়ারা তুলে পেয়ারার ভার কাঁধে নিয়ে আসতে থাকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক সংলগ্ন বাজারগুলোতে। পাইকারি ব্যবসায়ীরা এখান থেকে কম মূল্যে কিনে ট্রাকযোগে বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যাচ্ছে।

    ৪০ শতক জায়গায় পেয়ারা বাগান করতে জঙ্গল পরিস্কারসহ খরচ হয় ৩০ হাজার টাকা। তিন বছর পর ফলন ধরতে শুরু করলে মাত্র তিন মাসে ৭০ হাজার টাকার পেয়ারা বিক্রি করেন বলে জানান পেয়ারা চাষী মো. নুরুল আবছার।

    বিএম/আরএসপি..