সরকার এখন অফ দ্য লুটেরাস, বাই দ্য লুটেরাস, ফর দ্য লুটেরাস

    বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বর্তমান সরকার সম্পর্কে বলেছেন, আগে সরকারের ডেফিনেশন ছিল, ‘আগে সরকার ছিল অব দ্য পিপল, বাই দ্য পিপল, ফর দ্য পিপল। এখন হয়েছে অফ দ্য লুটেরাস, বাই দ্য লুটেরাস, ফর দ্য লুটেরাস।

    এছাড়া আর কিছু নেই। এ সরকারের তৃণমূল থেকে উপর পর্যন্ত লুটপাট চলছে। টিআর কাবিখা থেকে শুরু করে একেবারে মেগা প্রজেক্ট পর্যন্ত সব জায়গায় ভাগবাটোয়ারা চলছে।

    মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের বিএনপিপন্থি গবেষণা প্রতিষ্ঠান ন্যাশনালিস্ট রিসার্স সেন্টার আয়োজিত ‘আমার দেশ আমার শিল্প’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

    আয়োজক সংগঠনের পরিচালক বাবুল তালুকদারের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য রাখেন- বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, বরকতউল্লাহ বুলু, যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার টিএস আইয়ুব।

    বিএনপি মহাসচিব বলেন, একাত্তরে স্বাধীনতা যুদ্ধে আমরা যখন অংশ নিয়েছিলাম, তখন আমাদের একটি স্বপ্ন ছিল স্বাধীন সার্বভৌম সম্মৃদ্ধ বাংলাদেশের। সেই সম্মৃদ্ধ বাংলাদেশের পূর্ব শর্ত হচ্ছে সম্মৃদ্ধ শিল্প। জনগণের কর্মসংস্থান ও জীবন যাত্রার মান উন্নত হবে। স্বাধীনতার পর থেকেই আমাদের উচ্চাকাঙ্খা ছিল আমাদের শিল্প সামনের দিকে এগিয়ে যাবে। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রপরিচালনার দায়িত্ব নেয়ার পর দেশের পোশাক শিল্পে বিপ্লবের সূচনা করেছিলেন। এদেশের চামড়া শিল্পও সে সময় থেকেই যাত্রা শুরু করেছিল। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে চামড়া শিল্প এখন ব্যাপকভাবে বিপাকে পড়েছে। একই সঙ্গে ১৯৭২-৭৫ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের যে সরকার ছিল, তাদের তথাকথিত সমাজতন্ত্রের মূল বিষয় ছিল পুরোপুরিভাবে লুটপাট।

    তিনি বলেন, অত্যন্ত সুচারুরূপে কারসাজি করে দাম না দিয়ে চামড়া নষ্ট করে আমাদের দেশের চামড়া শিল্পকে ধ্বংস করে ফেলা হচ্ছে। বলা হচ্ছে, চামড়া রপ্তানি করা হবে। আর এর মধ্যে দিয়ে ট্যানারিগুলো বন্ধ হয়ে যাবে। যার ফলে কর্মসংস্থানের বিশাল ক্ষতি হবে। একই সঙ্গে চামড়া শিল্পের ভবিষ্যৎ নষ্ট হয়ে যাবে।

    মির্জা ফখরুল বলেন, পত্র-পত্রিকা ও বিভিন্ন জায়গায় খবর পাওয়া যাচ্ছে বাংলাদেশের বেনাপোল থেকে মাত্র একশত কিমি দূরে বানতলা নামক এক স্থানে ভারত সরকারের ছোট একটি চামড়া শিল্প কারখানা ছিল। সেটাকেই এখন নতুন করে বড় আকারে ওই দেশের সরকার একটি লেদার সিটি গড়ে তুলেছে। সেখানে পশ্চিম বঙ্গ সরকার আশি হাজার কোটি টাকা নতুন করে বিনিয়োগ করেছে। ইতালী থেকে বিনিয়োগকারী আনা হয়েছে। পশ্চিম বঙ্গের মূখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় সেটা উদ্ভোধন করেছেন। ভারতেরই কয়েকটি পত্রিকাতে এসব খবর বেরিয়েছে, এসব খবরের প্রতি আমাদের দৃষ্টি আকর্ষিত হয়েছে । ভারতের কানপুরের সব ট্যানারী বন্ধ হয়ে গেছে। সেখানকার ট্যানারী মালিকরা নতুন করে বাংলাদেশের সীমান্তের ওই স্থানে এসে নতুন করে ব্যবসা শুরু করেছে। পশ্চিমবাংলার অর্থনীতিতে এটা নতুন অধ্যায়ের শুরু হয়েছে।

    তিনি বলেন, জানি না কতদূর সত্য, শুনতে পারলাম এই যে মেগা প্রকল্প মেট্রোরেল ও এলিভেটেট এক্সপ্রেসওয়ের টিকেটিং ব্যবস্থাপণার দায়িত্বও সরকারের লোকেদের দেয়া হচ্ছে। প্রতিটি স্টেশন তাদের লোকদের মধ্যে ভাগ করে দেয়া হচ্ছে। চিন্তা করে দেখুন, কি অবস্থা দাড়াবে ! অথচ এটা হওয়ার কথা ছিল আন্তর্জাতিক টেন্ডারের মাধ্যমে বিদেশিদের।

    জেনেছি, বিদেশিদের নাকি বাধ্য করা হয়েছে, এ প্রকল্পের একেকটি ব্যবস্থপনার দায়িত্বও সরকারের লোকজনদের দিতে। এই যদি অবস্থা হয়, তাহলে এটা লুটপাট ছাড়া আর কিছু নয়।

    বিএনপি মহাসচিব বলেন, দেশকে বাঁচাতে হলে দেশপ্রেমিক নেতাকে ফিরিয়ে আনতে হবে। খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে নিয়ে আসতে হবে। সম্পূর্ণ জনগণের ম্যান্ডেট নেয়া সরকার প্রতিষ্ঠা করতে আবার নতুন নির্বাচন করতে হবে। যে নির্বাচনের মধ্যদিয়ে জনগণের একটি পছন্দের সরকার দেশে প্রতিষ্ঠিত হবে। এজন্য প্রথম প্রয়োজন নির্বাচন কমিশন ভেঙ্গে দেয়া এবং নির্বাচনকালীন সময়ের জন্য একটি নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠা করা। যাদের কাজ হবে দেশে একটি অবাদ সুষ্ঠু নির্বাচন করা। এর বাইরে বাংলাদেশের জনগণের সংকট উত্তোরণ ও আশা আকাঙ্খা পূরণের কোনো বিকল্প নেই।

    বিএম…