আজ কুতুপালংয়ে ৫ লাখ রোহিঙ্গার উপস্থিতিতে শরণার্থী সমাবেশের প্রস্ততি

    কক্সবাজার জেলার উখিয়া কুতুপালং ক্যাম্পে বেশ কয়েকদিন যাবত প্রস্ততি চলছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় শরণার্থী সমাবেশের।  এই সমাবেশে ৫ লাখ রোহিঙ্গার উপস্থিতি নিশ্চিত করতে কাজ বিভিন্ন শরাণার্থী শিবিরের নেতারা।

    এ বড় আয়োজনের নেপথ্যে মদদ দিচ্ছে বিভিন্ন এনজিও। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ ১০ কর্মসূচি নির্ধারণ করা হয়েছে সমাবেশের জন্য। কুতুপালং ক্যাম্পের নিকটবর্তী মাঠে একটি বিশাল মঞ্চ তৈরি করছে রোহিঙ্গারা।

    রোববার (২৫ আগস্ট) মিয়ানমার সেনা ও নাটালা বাহিনীর নির্যাতনে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের ২ বছর পূর্ণ হবে। রোহিঙ্গা ঢলের দুই বছর পূর্তিতে এসে বড় ধরনের শোডাউনের জন্য প্রস্তুত মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত এই শরণার্থীরা। কুতুপালংয়ের ৪ নম্বর ক্যাম্পের বর্ধিত অংশের মাঠে এই সমাবেশ আহ্বান করেছেন রোহিঙ্গারা। এ সমাবেশে উখিয়ার ২২টি ক্যাম্পের সব রোহিঙ্গাদের জড়ো করতে তৎপর রয়েছেন নেতারা।

    সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত এ সমাবেশে পাঁচ লাখ রোহিঙ্গার সমাবেশ ঘটানোর পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন আয়োজকরা।

    জাতিসংঘের কিছু সংস্থা ও দেশি-বিদেশি এনজিওগুলোর সহযোগিতায় এবারের বর্ষপূর্তি উদ্যাপনে ভিন্ন মাত্রা যোগ হবে বলে জানা গেছে। কারণ তারা সমন্বিতভাবে ২২ আগস্টের রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন পরিকল্পনা বানচাল করতে সক্ষম হয়েছিল।

    রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে গত ১৫ দিন ধরে রোহিঙ্গা নেতারা ডোর টু ডোর কাজ করেছেন। রোহিঙ্গা নেতারা সব ক্যাম্পে ২৫ আগস্ট ব্যাপকভাবে পালন করতে সাধারণ রোহিঙ্গাদের সম্পৃক্ত করতে এ উদ্বুদ্ধকরণ সভা-সমাবেশ করেছে বলে জানা গেছে। রোহিঙ্গাদের দেশি-বিদেশি কিছু সংগঠনের নির্দেশনা ও পরিকল্পনা অনুযায়ী ক্যাম্পগুলোতে রোহিঙ্গা নেতা ও মাঝিরা দিবসটি পালনে অধিক তৎপরতা চালাচ্ছে। এবার সব ধরনের নারী, শিশু ও পুরুষদের সম্মিলিতভাবে প্রতিটি ক্যাম্প নিজ নিজ নেতা ও মাঝিদের নেতৃত্বে মিছিল, মিটিং ও বিক্ষোভ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলে রোহিঙ্গারা জানায়।

    আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস নামক সংগঠনের চেয়ারম্যান মুহিব উল্লাহ বলেন, বিশ্ববাসীর সামনে রোহিঙ্গাদের দাবি তুলে ধরতে চাই আমরা। জানিয়ে দিতে চাই, মিয়ানমারে আমাদের নাগরিকত্ব ফিরিয়ে দিতে হবে এবং ভিটেমাটি ফিরিয়ে আমাদের প্রত্যাবাসন করতে হবে। রোহিঙ্গাদের নিজস্ব রীতির সাদা পোশাকে সমাবেশে উপস্থিত হতে বলা হয়েছে বলে জানান এই রোহিঙ্গা নেতা।

    সমাবেশ ঘিরে প্রায় এক হাজার আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েনের অনুরোধ জানানো হয়েছে বলেও জানান রোহিঙ্গা নেতারা।

    তারা জানান, সবার হাতে থাকবে পতাকা, ব্যানার-পোস্টার ও প্ল্যাকার্ড। দোয়া মাহফিল হবে নিহত রোহিঙ্গাদের জন্য।

    কুতুপালংয়ের লম্বাশিয়ায় ১ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ রফিক বলেন, সর্বস্তরের রোহিঙ্গাদের পক্ষ থেকে এ সমাবেশ ডাকা হয়েছে।

    উখিয়া থানার ওসি মো. আবুল মনসুর বলেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে ২৫ আগস্ট পালন উপলক্ষে সংশ্লিষ্ট ক্যাম্পের ইনচার্জরা দেখভাল করবেন।

    উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. নিকারুজ্জামান চৌধুরী বলেন, এখনো এ ব্যাপারে সরকারের কোনো নির্দেশনা পাওয়া যায়নি। কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের সাথে আলোচনা করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানান।

    বিএম/এমআর