মানবাধিকার সংগঠনের আড়ালে ইয়াবা ব্যবসা, চালানসহ ধরা সভাপতি

    চট্টগ্রাম মেইল : প্রাইভেট কার (ঢাকা মেট্রো-খ ১৩-২১৮৪)’র সামনে লাগানো ছিলো সোসাইটি ফর এস্টাবলিমমেন্ট অ্যান্ড ইমপ্লিমেনটেশন অব হিউম্যান রাইটস নামের একটি মানবাধিকার সংগঠনের লোগোযুক্ত স্টিকার। গাড়ির ভেতরে রয়েছেন সংগঠনের সভাপতি। কক্সবাজার থেকে ফিরছেন বিশেষ কার্য সম্পাদন করে। তবে কোন মানবাধিকার সংশ্লিষ্ট কাজ নয়, মূলত প্রায় তিন কোটি টাকার অধিক মূল্যের ইয়াবার বড় একটি চালান নিয়েই তিনি চট্টগ্রাম হয়ে ঢাকা যাচ্ছেন।

    কিন্তু তার এ বিশেষ কর্মযজ্ঞে ঘি ঢেলে পণ্ড করে দিয়েছে র‌্যাবের বিশেষ একটি টিম। বুধবার (০৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পটিয়া উপজেলার আমজুরহাট এলাকায় বিশেষ চেকপোস্ট বসিয়ে ইয়াবার চালানসহ গুণী এ মানবাধিকার সংগঠনের সভাপতিকে তার প্রাইভেট কার চালকসহ আটক করা হয়। উদ্ধার করা হয় তিন কোটি চার লক্ষ টাকা মূল্যের ৬০ হাজার ৮শ পিস ইয়াবা। জব্দ করা হয়েছে মাদক পরিবহনে ব্যবহৃত প্রাইভেট কারটিও।

    আটককৃতরা হলেন, ফরিদপুর জেলার সদর উপজেলা এলাকার শফি উদ্দিনের ছেলে মো. নাছিবুর রহমান প্রকাশ নাছিব (৪২) ও তার প্রাইভেট কার চালক পিরোজপুর জেলার ভান্ডারিয়া এলাকার মো. আলমগীরের ছেলে মো. রাশেদ (২৭)। আটকের পর নাছিব নিজেকে সোসাইটি ফর এস্টাবলিমমেন্ট অ্যান্ড ইম্পিমেনটেশন অব হিউম্যান রাইটস নামের একটি মানবাধিকার সংগঠনের সভাপতি বলে দাবী করেন।

    তথ্যটি নিশ্চিত করে আটক নাছিব মানবাধিকার সংগঠনের নাম ব্যবহার করে দীর্ঘদিন ধরে ইয়াবা ব্যবসা পরিচালনা করে আসছেন বলে জানিয়েছেন র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) এর সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) মো. মাশকুর রহমান।

    তিনি বলেন, তাদের কাছে আগে থেকে তথ্য ছিলো একটি প্রাইভেট কারে কতিপয় মাদক ব্যবসায়ি কক্সবাজার থেকে ইয়াবার একটি বড় চালান সংগ্রহ করে চট্টগ্রাম হয়ে ঢাকার উদ্দ্যেশে রওনা দিয়েছে। এ সংবাদে ৪ সেপ্টেম্বর বেলা সাড়ে ১২টার সময় চট্টগ্রাম জেলার পটিয়া আমজুর হাট এলাকার মক্কা মার্কেটের সামনে বিশেষ চেকপোস্ট স্থাপন করে র‌্যাবের আভিযানিক টিম।

    এ সময় কক্সবাজার হতে চট্টগ্রামের দিকে আসা প্রাইভেট কারের গতিবিধি সন্দেহ হলে গাড়িটি থামানোর সংকেত দিলেও গাড়িটি সংকেত অমান্য করে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। পরে ধাওয়া দিয়ে গাড়িটি আটক করে নাছিব ও তার চালক রাশেদকে আটক করা হয়। পরে তাদের দেয়া তথ্যমতে প্রাইভেট কারটি তল্লাশী করে গাড়িতে থাকা ল্যাপটপ, সাউন্ড বক্স এবং ব্যাগের ভিতরে বিশেষ কৌশলে লুকানো অবস্থায় ৬০ হাজার ৮শ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়।

    র‌্যাবের সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) মো. মাশকুর রহমান জানান, আটকের পর দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তারা দীর্ঘদিন ধরে কক্সবাজারের মাদক ব্যবসায়ীদের সাথে যোগসাজশে কম মূল্যে ইয়াবা সংগ্রহ করে তা ভিন্ন ভিন্ন কৌশলে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মাদক ব্যবসায়ীদের কাছে অধিক মূল্যে বিক্রি করে আসার কথা স্বীকার করে। দুজনের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবসাথা গ্রহণের জন্য পটিয়া থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানান র‌্যাবের এ কর্মকর্তা।

    বিএম/রাজীব প্রিন্স..