ঘাতক পরিবারের সদস্যকে মনোনয়ন দিয়েছে বিএনপি : হাছান

    রংপুর উপ-নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়নের বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতার হত্যাকারী পরিবারের লোককে বিএনপি দলীয় প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেয়ায় কারও অবাক হওয়ার কিছু নেই।

    আজ রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে এক আলোচনা সভা শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান এবং তার পত্নী বেগম খালেদা জিয়া কেবল বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের শুধু আশ্রয়ই দেয়নি, তারা খুনিদের রাজনৈতিকভাবে পুনর্বাসিতও করেছেন।

    মন্ত্রী বলেন, জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের বিদেশের চাকরি দিয়ে তাদের পুরস্কৃত করেছেন এবং তাদের দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে এবং বিদেশে আশ্রয় নিতে সহায়তা করেছেন।

    ‘জিয়া, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের খুনিদের শুধু আশ্রয়-প্রশ্রয়ই দেননি, রক্ষার কাজও করেছেন, সংসদে ‘ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ’ পাস কওে তিনি খুনিদের বিচারের পথ বন্ধ করেছেন। আর বেগম খালেদা জিয়া আরো একধাপ এগিয়ে ১৫ ফেব্রুয়ারির তথাকথিত নির্বাচনের পরে একজন খুনিকে সংসদে বিরোধী নেতা বানান এবং তার গাড়িতে জাতীয় পতাকা তুলে দেন।’

    আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান বলেন, ‘সুতরাং, বিএনপি বঙ্গবন্ধুর ঘাতক পরিবারের একজনকে দলীয় প্রার্থী মনোনীত করেছে, এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই এবং এটি তাদের বিষাক্ত রাজনৈতিক নীল নকশার একটি অংশ। তবে, এটি রাজনৈতিক শিষ্টাচার বহির্ভুত।’

    এরআগে, মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির মিডিয়া, প্রচার ও ডকুমেন্টেশন উপ-কমিটির সভায় তথ্যমন্ত্রী বক্তৃতা করেন।

    বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী, তথ্য প্রতিমন্ত্রী ড. মো. মুরাদ হাসান এবং কমিটির সদস্যগণ সভায় উপস্থিত ছিলেন। তথ্য সচিব আবদুল মালেক সভা পরিচালনা করেন।

    সংসদে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য নিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের মন্তব্যের সমালোচনা করে ড. হাছান বলেন, এধরণের মন্তব্য রাজনৈতিক শিষ্টাচার বহির্ভূত। তার ক্রমাগত মিথ্যাচারের কারণে তাকে অনেকেই ‘মিথ্যা ফখরুল’ বলেন। তিনি এমন মিথ্যাচারের করেছেন যে কিনা নিজেই নিজের রেকর্ড ভঙ্গ করেছেন।’

    ‘বিএনপির রাজনীতিই মিথ্যার ওপরে প্রতিষ্ঠিত’ উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘বেগম জিয়া ১৯৮২ সালে ক্ষমতাসীন এরশাদ সাহেবের কাছ থেকে দু’টি বাড়ি ও দশ লাখ টাকা নিয়েছেন।

    তথ্যমন্ত্রী প্রশ্ন করেন, কেন তিনি (বেগম খালেদা জিয়া যদি এরশাদের অবৈধ ক্ষমতা দখলের বিরোধিতাই করতেন, তবে, কেন তিনি এরাশাদের কাছ থেকে দু’টি বাড়ি এবং অর্থ নিয়েছিলেন?’
    ডা. হাছান বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংসদে তিক্ত সত্য বলেছেন এবং এই সত্য বিএনপি নেতাকে আহত করেছে।

    বেগম জিয়ার স্বাস্থ্য নিয়ে বিএনপি নেতার অভিযোগের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিএনপি তার স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে অপরাজনীতি করে বেগম জিয়াকেই অপমান করেছে।

    তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি নেত্রী বেগম জিয়া দু’বারের প্রধানমন্ত্রী এবং বিরোধীদলীয় নেতা হিসেবে একবার দায়িত্ব পালন করেছেন। সরকার খালেদা জিয়ার সর্বোচ্চ চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য সুবিধা নিশ্চিত করেছে। তারপরও বেগম জিয়ার স্বাস্থ্য নিয়ে বিএনপি যেভাবে অপরাজনীতি করছে, তাতে বেগম জিয়াকেই খাটো করা হচ্ছে। বেগম জিয়ার হাঁটু ও কোমরের পুরনো ব্যথা নিয়ে রাজনীতি করা বিএনপি এবং বেগম জিয়া উভয়ের জন্যই লজ্জাকর। অন্যকোনো ইস্যু না পেয়ে তারা বেগম জিয়ার হাঁটু ও কোমরের পুরনো ব্যথাকেই ইস্যু করার চেষ্টা করছে।’

    সভায় তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্বের সকল শোষিতের পক্ষে ছিলেন। তাঁর শোষণহীন বিশ্ব গড়ে তোলার স্বপ্নকে সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে ঢাকাসহ বিশ্বের প্রধান আটটি শহরে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আয়োজন করা হবে।’

    বিএম/এমআর