জনগণের ভোটে জিয়া রাষ্ট্রপতি হয়েছিলেন : মোশাররফ

    জাতীয় সংসদে গতকাল বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেয়া বক্তব্যের প্রতিবাদ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

    জিয়াউর রহমানকে বৈধ রাষ্ট্রপতি বলা যায় না- প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যকে নাকচ করে দিয়ে মোশাররফ বলেন, ‘২৯ ডিসেম্বর রাতে ভোট ডাকাতির মতো নয়, জনগণের ভোটেই জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রপতি হয়েছিলেন।’

    সোমবার বিকালে জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের ৪১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত শোভাযাত্রার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

    খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘কোনো কারণ ছাড়াই রবিবার সংসদে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জিয়াউর রহমানকে কটূক্তি করেছেন। তিনি বলেছেন, প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান নাকি অবৈধ রাষ্ট্রপতি ছিলেন।

    আমি বলতে চাই, ১৯৭৮ সালের জুন মাসে সাধারণ নির্বাচনের মাধ্যমে এদেশের জনগণ ভোট দিয়ে জিয়াউর রহমানকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত করেছিলেন। আওয়ামী লীগের মতো ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচন ২৯ ডিসেম্বর রাতে ডাকাতি করে নয়।’

    রবিবার সংসদে সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের মৃত্যুতে আনা শোক প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পঁচাত্তরে জাতির পিতার হত্যার পর জিয়া ক্ষমতা দখল করেন। তাকে অনুসরণ করে এরশাদ প্রথমে মার্শাল ল’ জারি করেন। এরপর নিজেই ক্ষমতা দখল করেন। হাইকোর্ট এই দুজনের ক্ষমতা দখলকে অবৈধ ঘোষণা করেছেন। এর ফলে এই দুজনের কাউকেই বৈধ রাষ্ট্রপতি বলা যায় না।’

    এ বিষয়ে মোশাররফ বলেন, ‘যারা জিয়াউর রহমানকে অবৈধ বলেন তাদের মনে দুর্বলতা রয়েছে। এ সরকার অনির্বাচিত রাতের অন্ধকারের ভোট ডাকাতি করে ক্ষমতায় টিকে আছে। যেহেতু তারা অবৈধ তাই নিজেদের দোষ অন্যের ওপরে চাপানোর চেষ্টা করছে। তারা আজ যে অবৈধভাবে ক্ষমতায় রয়েছে সেটিকে তারা ধামাচাপা দিতে চায়। তাদের নিজেদের দোষ অন্যের ওপর চাপাতে চায়। অন্যদিকে, জিয়াউর রহমান বাকশালের পরিবর্তে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। আওয়ামী লীগের রেকর্ড হচ্ছে গণতন্ত্রকে হত্যা করা। বিএনপির রেকর্ড হচ্ছে গণতন্ত্রকে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা।’

    ‘আমরা যখন মহিলা দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করছি, তখন গণতন্ত্রের মাতা খালেদা জিয়া একটি মিথ্যা মামলায় অন্যায়ভাবে কারাবন্দী। এই ধরনের মামলায় যদি কেউ সাজাপ্রাপ্ত হয়ে থাকে হাইকোর্ট থেকে সাত দিনের মধ্যে তিনি জামিনে মুক্তি লাভ করে থাকেন। কিন্তু খালেদা জিয়া দেড় বছরের ওপরে এ ফ্যাসিবাদী সরকারের কারাগারে নির্যাতিত হচ্ছেন। ’

    মহিলা দলের নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘জনগণ এ অবৈধ সরকারের হাত থেকে মুক্তি চায়। আর এই মুক্তি এনে দিতে পারে একমাত্র বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের নেতাকর্মীরা। তাই মহিলা দলের ওপর অনেক দায়িত্ব রয়েছে।’

    পরে মহিলা দলের শোভাযাত্রাটি নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে শুরু হয়ে নাইটিঙ্গেল মোড় ঘুরে ফের বিএনপি কার্যালয়ের সামনে গিয়ে শেষ হয়। এসময় মহিলা দলের নেতাকর্মীরা খালেদা জিয়ার মুক্তি চেয়ে বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দেন।

    শোভাযাত্রায় মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস, সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ, সিনিয়র সহ-সভাপতি নূর জাহান ইয়াসমিন, সহ-সভাপতি জেবা খান, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হেলেন জেরিন খান, মহানগর উত্তরের সহ-সভাপতি মেহেরুন্নেসা হক, সাধারণ সম্পাদক আমেনা খাতুন, যুগ্ম-সম্পাদক রাবেয়া আলম, মহানগর দক্ষিণের সভাপতি রাজিয়া আলিম, সাধারণ সম্পাদক শামসুন্নাহার ভূইয়া, যুগ্ম-সম্পাদক রোকেয়া চৌধুরী বেবী, নিলুফার ইয়াসমীন প্রমুখ অংশ নেন।

    বিএম/এমআর