প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য জাতীয় কর্ম পরিকল্পনা ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার সুরক্ষা আইন-২০১৩ বান্তবায়নে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি সাইটসেভার্সের আবেদন।
সাইটসেভার্স প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও আইনের প্রয়োগ মেনে চলার লক্ষ্যে জাতিসংঘ এবং তার সদস্য রাষ্ট্রের প্রতি আহবান জানাচ্ছে। এ লক্ষ্যে সাইটসের্ভাস বিশ্বের ১৯৩ টি দেশের সাথে বাংলাদেশেও একটি আবেদন দাখিলে সম্পৃক্ত হয়েছে। এই আবেদনের মাধ্যমে জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্র বাংলাদেশ সরকারের নিকট প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন ২০১৩ এবং জাতীয় কর্ম পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য বিনীত আহবান জানাচ্ছে।
এই উপলক্ষে, সাইটসের্ভাস বাংলাদেশ কান্ট্রি অফিস ১৫ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯ তারিখে জাতীয় প্রেস ক্লাবে আবেদনটির কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশে শুরু করে। সাইটসেভার্স বাংলাদেশের কান্ট্রি ডরিক্টের খন্দকার আরফিুল ইসলামের সভাপতিত্বে উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমিন এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে অভিনয় শিল্পী অধোরা খান।
সাইটসের্ভাস বিশ্বাস করে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য জাতীয় কর্ম-পরিকল্পনা প্রয়োগ দেশের সকল ধরনের প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সমর্মযাদা ও অধিকার, র্পূণ অংশগ্রহণ ও সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে বিশেষ ভুমিকা রাখবে। প্রতিবন্ধী মানুষ সমাজ ও রাষ্ট্রে বিভিন্ন ধরণের বৈষম্যের শিকার হয়। যদিও বাংলাদশে সরকার প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও র্কমসংস্থান প্রভৃতি ক্ষেত্রে কাজ করছে, প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন ২০১৩-এর কার্যকরী বাস্তবায়নের জন্য সরকারের পাশাপাশি অন্যান্য বেসরকারী ও উন্নয়ন সংস্থাকেও ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। ২০৩০ সালের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রাকে (এসডিজি) সামনে রেখে, ২০২০ সালের মধ্যে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের উন্নয়ন, অংশগ্রহণ ও সুরক্ষা নিশ্চিতে বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে।
“Equal World” বা “সমতার বিশ্ব” প্রচারণায় লক্ষ্য করা গেছে বিশ্বের অনেক দেশেই প্রতিবন্ধী ব্যক্তিগণ সমাজের বিভিন্ন র্কমকাণ্ডে অংশ গ্রহণে বাধা প্রাপ্ত হন এবং তারা চুড়ান্ত বৈষম্যের শিকার হন।
খন্দকার আরফিুল ইসলাম, কান্ট্রি ডরিক্টের সাইটসেভার্স বাংলাদশে কান্ট্রি অফিস, প্রেস ক্লাবে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এ প্রসংগে বলেন, “শুধু বাংলাদেশে নয়, সারা বিশ্ব প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা স্কুলে যেতে, চাকরি খুঁজে পেতে, স্বাস্থ্যসেবা নিতে এবং রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করতে বৈষম্যের শিকার হন। এমনকি তাদের অধিকারকে অস্বীকার করা হয়। যেকোনো বিবেচনাতেই এই ধরণের বৈষম্যে বড় ধরনরে অন্যায়।”
প্রতিবন্ধী ব্যাক্তিদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আমাদের এই আবেদনের দুটি সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য আছে। প্রথমটি সম্প্রতি জাতিসংঘ র্কতৃক স্বীকৃত প্রতিবন্ধী ব্যাক্তিদের জন্য কৌশলগত কাঠামোটি কার্যকর ও নিশ্চিত করা এবং দ্বিতীয় জাতীয় পর্যায়ে আমাদের সরকারকে প্রতিবন্ধী ব্যাক্তিদের জন্য প্রণীত আইন বাস্তবায়ন এবং প্রতিবন্ধী ব্যাক্তিদের অর্ন্তভুক্তীকরণ প্রতিশ্রুতি পূরণ করার জন্য অনুসর্মথনের আহবান জানানো।
জাতীয় প্রসে ক্লাবের সাধারন সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমিন প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, “আমরা বিশ্বজুড়ে প্রতিবন্ধী ব্যাক্তিদের অধিকারগুলোর প্রতি ব্যাপক সর্মথন আদায় করতে চাই। আমি বাংলাদশেরে গণমাধ্যম ব্যাক্তিত্বদের প্রতিবন্ধী মানুষের গল্প বিশেষ ভাবে প্রচারের আহবান জানাই, যাতে এবিষয়ে সমাজে সচেতনতা তৈরি হয় ও বৈষম্যও দূর হয়।”
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি অভিনেত্রী শিল্পী অধোরা খান সমাজের প্রতিষ্ঠিত ব্যাক্তিবর্গ, সেলেব্রেটি ও ব্যবসায়ীদের প্রতিবন্ধী ব্যাক্তিদের অধিকার সুরক্ষা নিশ্চিত করার পাশাপাশি বিভিন্ন র্কমকাণ্ডে তাদের অর্ন্তভুক্ত করতে আহ্বান জানান।
বিশ্বব্যাপী ঘোষীত জাতসিংঘের ““Equal World” বা সমতার বিশ^” আবেদনে বাংলাদশে, ক্যামেরুন, ঘানা, গিনি, ভারত, আয়ারল্যান্ড, কেনিয়া, মালাউই, মালি, নাইজরিয়া, পাকিস্তান, সনেগাল, সিয়েরা লিওন, তানজানিয়া এবং উগান্ডার সরকারকে এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কর্ম পরিকল্পনা বাস্তবায়নে বিশেষ আহ্বান করা হয়েছে।
ডিসেম্বর ৩, ২০১৯ পর্যন্ত এই প্রচারণার স্বাক্ষর সংগ্রহ করা হবে। স্বাক্ষর সংগ্রহ শেষে জাতিসংঘ এবং এর সকল সদস্য রাষ্ট্রগুলোতে এই আবেদন পেশ করা হবে।
অনুষ্ঠান শেষে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন কামরুল হাসান।
“Equal World বা সমতার বিশ্ব আবেদন এ অংশ নিতে ক্লিক করুন। www.sightsavers.org/equalworld