দূর্ণীতির সন্ধানে অনলাইনে সরব রুহুল আমিন : ফে’বুকের তথ্যে ফার্মেসীতে অভিযান

    বিপুল পরিমাণ সরকারি ওষুধ জব্দ : তিন ফার্মেসী সিলগালা

    রাজীব সেন প্রিন্স : দুর্ণীতি গ্রস্থ লোক ও অসাধু ব্যবসায়িদের চিহ্নিত করে সাধারণ মানুষকে প্রতারণার হাত থেকে বাঁচাতে সার্বক্ষনিক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ অনলাইনে সরব থাকেন হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুহুল আমিন।

    সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যেখানে অন্যায়, ভেজাল পণ্য ও দুর্ণীতির গন্ধ পাচ্ছে সেখানেই ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযানের মাধ্যমে দুর্ণীতি গ্রস্থ ও অসাধু ব্যাক্তিদের শাস্তি প্রদানের ব্যবস্থা করছেন।

    বুধবার সন্ধ্যায় এক ব্যক্তির ফেসবুকে তিনি জানতে পারেন সরকারি বিনামূল্যে বিতরণের ঔষধ হাটহাজারীর বিভিন্ন ফার্মেসিতে অবাধে বিক্রি হচ্ছে। তথ্যটি পাওয়ার সাথে সাথেই তড়ি ঘড়ি অভিযানের ব্যবস্থা নেন রুহুল আমিন। রাত ৯টায় অভিযানিক দল নিয়ে পৌছে যান ওই ফার্মেসিতে। সেখানে উপস্থিত হয়ে সরকারি ঔষধ বিক্রির বিষয়টি হাতেনাতে প্রমাণ পাই।

    উপজেলার বাস স্ট্যান্ড সংলগ্ন মেখল রোডে ‘নিউ মেডিসিন হাউস’ নামের এ ফার্মেসীতে অভিযান চালিয়ে সরকারি বিনামূল্যে বিতরণের ১২ ধরনের ওষুধ, চার ধরনের জন্মবিরতিকরণ পিল ও সরঞ্জামের পাশাপাশি বেশকিছু নিষিদ্ধ যৌন উত্তেজক ও বিদেশি ওষুধ জব্দ করা হয়।

    উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুহুল আমিন বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্থদের কাছ থেকে অসাধু ব্যাক্তিদের বিভিন্ন তথ্য পাচ্ছি। অভিযানে গিয়ে অনলাইনে পাওয়া তথ্যের সত্যতাও মিলছে। ভাল লাগছে সাধারণ মানুষের মাঝে এ ধরনের সচেতনতা দেখে।

    তিনি সাধারণ মানুষের উদ্দ্যেশে বলেন, দুর্ণীতি কিংবা অসাধু ব্যাক্তিদের নানা অনিয়মের তথ্য নির্ভয়ে দিতে পারেন। আমি তথ্য দাতার পরিচয় গোপন রেখে দূর্ণীতি বন্ধে অভিযান চালিয়ে সাধারণ মানুষকে প্রতারণার হাত থেকে রক্ষা করার চেষ্টা করব।

    তিনি বলেন, বুধবার সন্ধ্যায় হাটহাজারী এলাকার এক বাসিন্দা সাধারণ মানুষের জন্য বিনামুল্যে বিতরণের সরকারি ওষুধ ফার্মেসীতে রেখে অবাধে বিক্রি করছে বলে আমাকে তথ্য দেন।

    তার দেয়া তথ্য পেয়ে বুধবার রাত পৌণে ৯টার সময় অভিযান পরিচালনা করা হয়। সেখানে হাতে নাতে প্রমাণ পাওয়ায় ফার্মেসীটি থেকে ১১ হাজারেরও বেশি বিভিন্ন ঔষধ জব্দ করার পাশাপাশি ফার্মেসীটি সিলগালা করে দেওয়া হয়। অভিযানের সময় দোকানের মালিককে পাওয়া যায়নি বলে জানান রুহুল আমিন।

    এদিকে রাতের কয়েক ঘন্টা বিরতি দিয়ে বৃহস্পতিবার থেকে ফের অভিযানে নামে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুহুল আমিন।

    ফেসবুকের অপর এক পাঠকের দেয়া তথ্য নিয়ে বৃহস্পতিবার দুপুর ১টা থেকে উপজেলার মিরের হাট এলাকায় অভিযান শুরু করে। বিকাল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে দুটি ফার্মেসীতে বিপুল পরিমাণ সরকারি বিনামূল্যে বিতরণের ঔষধ পাওয়া যায়।

    বৃহস্পতিবারের অভিযানের বিষয়ে রুহুল আমিন বলেন, গোপন তথ্যে খবর পেয়ে হাটহাজারী পৌরসভাধীন মিরেরহাট এলাকার তারেক মেডিকেল হল ও পৌর সদরের মেসার্স আলম ফার্মেসিতে তল্লাশি চালালে সেখান থেকে উদ্ধার হয় বিপুল পরিমান সরকারী ঔষধ। এসব ঔষধ জব্দ করার পাশাপাশি সেখান থেকে নিষিদ্ধ বেশ কিছু ভারতীয় ঔষধও হেফাজতে নেওয়া হয় এবং নিষিদ্ধ ঔষধ বিক্রির দায়ে ফার্মেসী দুটি সিলগালা করে দেওয়ার কথা জানিয়েছেন ইউএনও।

    গত দুদিনে পৃথক অভিযানে জব্দ করা ঔষধের মধ্যে রয়েছে এ্যাজিথ্রোমাইসিন, সিপ্রোফ্লক্সাসিন, কিলম্যাক্স, ক্ল্যামক্স, লুমনা, ক্লপিড, সেফিক্সিন, মেট্রাডিন, ফ্লুক্লোক্সিলিন, অমিডন, কনসুকন, পডিডোন, সুখী, আপন, টাইসিল, নিরাপদসহ ভারতের বিভিন্ন ব্রান্ডের বেশ কিছু ঔষুধ।

    সাধারণ জনগণের অধিকার বঞ্চিত করে বিভিন্ন বেসরকারি ফার্মেসীতে অবাধে এসব সরকারি ঔষধ বিক্রির বিষয়ে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করে হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুহুল আমিন বলেন যেসব অসাধু ঔষুধ ব্যবসায়ি বিপুল অর্থ উপার্জনের লোভে পড়ে সাধারণ জনগণের অধিকার বঞ্চিত করছে তাদের প্রত্যেককে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হবে এবং সাধারণ মানুষকে প্রতারণার হাত থেকে রক্ষা করতে দুর্ণীতিবাজদের বিরুদ্ধে তার অভিযান অব্যাহত থাকবে।

    বিএম/রাজীব সেন…