কাউকে ইতিহাস বিকৃত করতে দেয়া হবে না : প্রধানমন্ত্রী

    জাতীয় মেইল : স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস আর কাউকে বিকৃত করতে দেয়া হবে না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বুধবার বিকেলে, বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আওয়ামী লীগের আয়োজিত স্বাধীনতা দিবসের আলোচনায় একথা বলেন তিনি।

    আলোচনা সভার বক্তব্যের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এই সংগঠন সৃষ্টির মূল লক্ষ্যই ছিলো বাঙালি জাতিকে বৈষম্যের হাত থেকে রক্ষা করা। আওয়ামী লীগের শেখর বাংলার মানুষের মধ্যে ছিল, তাই সামরিক শাসকরা বহু চেষ্টা করেও এই দলকে ধ্বংস করতে পারেনি বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

    এ সময়, এই সংগঠনকে আরও সুসংগঠিত করার জন্য নেতাকর্মীদের প্রতি আহবান জানান আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।

    তিনি আরও বলেন, ‘দেশের মানুষকে স্বাধীনতার চিন্তায় উদ্বুদ্ধ করেছিলেন বঙ্গবন্ধু। আর সে লক্ষ্যে ধাপে ধাপে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় স্বাধীনতার দিকে এগিয়েছিলেন তিনি।’

    শেখ হাসিনা বলেন, ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট বিলিয়ে গড়ে ওঠা দলগুলো ক্ষমতায় না থাকলে বিলীন হয়ে যায়। বাকশালে নয়, দেশের গণতন্ত্র হত্যা হয়েছিল জিয়ার সামরিক শাসনামলে।

    সামরিক বাহিনী ও বেসামরিক ক্ষেত্রের বৈষম্যর চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘পাকিস্তানের সংখ্যাগরিষ্ঠ বাঙালির বিরুদ্ধে শোষণ নিপীড়ন চালিয়েছে সংখ্যালঘিষ্ঠ পশ্চিমারা। পূর্ব বাংলা থেকে অর্থ নিয়ে পশ্চিম পাকিস্তানের মরুভূমিতে ফুল ফোটানো হতো। এর বিরুদ্ধে প্রথম প্রতিবাদ করেছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।’

    প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা পাট-চা-তামাক বিদেশে রফতানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতাম। সব নিয়ে যেতো পাকিস্তানিরা। পাকিস্তান রাজধানী পরিবর্তন করেছে বারবার। একটা ছিল করাচি, এরপর ইসলামাবাদ এরপর পিন্ডি। যতবার রাজধানী পরিবর্তন হয়েছে তার অর্থ আমাদের কাছ থেকে নিয়েছে। টাকা দিতে হতো আমাদের আর ভোগ করত তারা।’

    বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু যখন দেশের অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য নানা পদক্ষেপ নিতে শুরু করেন তখনই দেশি-বিদেশি চক্র তাকে সপরিবারে হত্যা করেছে। আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করে দেয়াই ছিলো চক্রান্তকারীদের মূল লক্ষ্য। একটি গোষ্ঠী তখন চাটুকারিতা করে তাদের সহযোগিতা করেছে।’

    স্বাধীনতা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পরে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণার মাধ্যমে ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ থেকে বাঙালি স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং মিত্রবাহিনীর সহযোগিতায় ১৬ ডিসেম্বর স্বাধীনতা অর্জিত হয়। ৯৬ হাজার পাকিস্তানি সৈন্য আত্মসমর্পণ করে। এরপর বঙ্গবন্ধু স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের পর মিত্রবাহিনীকেও দেশে ফেরত পাঠান। এটা সম্ভব হয়েছে বঙ্গবন্ধুর মতো একজন স্বাধীনচেতা নেতা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর মতো একজন নেতা ছিলেন বলে। বিশ্বের কোনও দেশে মিত্রবাহিনী যুদ্ধের পর ফেরত যায়নি, শুধু বাংলাদেশেই এটা সম্ভব হয়েছে।’

    তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসার পর গণতন্ত্রিক ভাবে অর্থনৈতিক মুক্তির মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। ক্ষমতার লোভে গড়ে ওঠা দল কখনো দেশে গণতন্ত্র দিতে পারে না বলেও মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।

    এ সময়, দলের নেতাকর্মীদের দেশপ্রেম নিয়ে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলতে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।

    বিএম/রনী/রাজীব