বিএম ডেস্ক : কক্সবাজারের টেকনাফে পুলিশ ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)’র সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে চারজন নিহত হয়েছে। শুক্রবার (১ মার্চ) ভোরে টেকনাফের হোয়াইক্যংয়ের বরতলী এলাকায় পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে দুইজন নিহত হয়েছে। নিহতরা মাদক ব্যবসায়ী ছিল বলে পুলিশ দাবি করেছে। এদিকে টেকনাফের নাজিরপাড়া মগপাড়া এলাকায় বিজিবির সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে আরও দুই জন নিহত হয়েছে।
পুলিশ সূত্র জানায়, নিহত দুইজন হলেন নজির আহমদ (৩৩) ও গিয়াস উদ্দিন। নজির টেকনাফ পৌরসভার জালিয়াপাড়ার আবদুল জলিলের ছেলে। তিনি ডাকাত আবদুল হাকিম ডাকাতের ছোট ভাই। আর গিয়াস উদ্দিন হোয়াইক্যং নয়াপাড়ার হাজি জাকরিয়া ছেলে। বন্দুকযুদ্ধের ঘটনায় চার পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। তারা হলেন-এসআই সুজিত চন্দ্র দে, এএসআই খায়রুল, কনস্টেবল এরসাদুল ও বেলাল উদ্দিন।
পুলিশ জানায়, হোয়াইক্যংয়ের বরতলী এলাকায় ইয়াবা বেচাকেনা হচ্ছে এমন গোপন খবর পেয়ে পুলিশের একটি দল ওই এলাকায় অভিযান চালায়। এসময় পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করে মাদক ব্যবসায়ীরা। পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়। পরে পাচারকারিরা পিছু হটলে ঘটনাস্থল থেকে ওই দুই জনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। তাদের টেকনাফ হাসপাতালে নিয়ে গেল জরুরি বিভাগের চিকিৎসক কক্সবাজারে রেফার করেন। কক্সবাজার নিয়ে যাওয়ার পথে তারা মারা যায়।
ঘটনাস্থল থেকে ৩টি দেশীয় অস্ত্র, ৪ রাউন্ড কার্তুজ, ২৩টি গুলির খোসা ও ৬ হাজার পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়েছে।
ঘটনা সত্যতা নিশ্চত করে টেকনাফ মডেল থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ বলেন, ‘লাশ দুটি ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রক্রিয়া চলছে।’
এদিকে টেকনাফ ২ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল আছাদুদ জামান চৌধুরী জানান, শুক্রবার ভোরে টেকনাফের নাজিরপাড়া মগপাড়া এলাকায় ইয়াবা পাচারের খবর পেয়ে টেকনাফ ২ বিজিবির একটি দল সেখানে অভিযান চালায়। এসময় বিজিবিকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় চোরাকারবারিরা। বিজিবিও এসময় পাল্টা গুলি চালায়। পরে ঘটনাস্থল থেকে দুটি গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করা হয়। তবে লাশ দুটি পরিচয় পাওয়া যায়নি। ঘটনাস্থল থেকে এক লাখ পিস ইয়াবা ও একটি অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
অনেক জল্পনা-কল্পনার পর মাদক চোরাচালানের ‘স্বর্গরাজ্য’ হিসেবে পরিচিত কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলায় গত ১৬ ফেব্রুয়ারি শতাধিক ইয়াবা ব্যবসায়ী প্রশাসনের কাছে আত্মসমর্পণ করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার শপথ নেন। পরে তাঁদের কারাগারে পাঠানো হয়।
দেশে মাদকবিরোধী অভিযান শুরুর পর জেলায় প্রায় প্রতিদিনই ‘বন্দুকযুদ্ধে’ সন্দেহভাজন মাদক কারবারিদের হতাহতের ঘটনা ঘটছে। এ সময় ‘বন্দুকযুদ্ধে’ শুধু কক্সবাজারেই ৪২ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে টেকনাফ উপজেলাতেই নিহতের সংখ্যা ৩৯ জন। তাঁদের মধ্যে ২৫ জন টেকনাফের বিভিন্ন গ্রামের বাসিন্দা। রয়েছেন দুজন জনপ্রতিনিধিও।
বিএম/রনী/রাজীব