হাসপাতালের দশফুট দুরত্বে ফিলিং স্টেশন,পাশে গ্যাস সিলিন্ডার রিফুলিং গোডাউন : দুর্ঘটনার আশংকা এলাকাবাসির

    বিশেষ প্রতিবেদন : চট্টগ্রামে গত বছরের ১৬ ফেব্রুয়ারি নগরীর পাঁচলাইশ থানা সংলগ্ন কাতালগঞ্জ এলাকায় উদ্বোধন হয় অত্যাধুনিক সুযোগ সুবিধা সম্পন্ন বেসরকারী হাসপাতাল পার্কভিউ।

    উদ্বোধনের পর থেকে ওই হাসপাতালে এখন শত শত রোগী চিকিৎসা নিচ্ছে। চিকিৎসার দিক থেকে উন্নত হলেও দুর্ঘটনার ঝুঁকিতে রয়েছে হাসপাতালটি। প্রতিনিয়ত জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চিকিৎসা গ্রহণ করছে রোগীরা।

    হাসপাতালটির মাত্র দশফুট দুরত্বে ফিলিং স্টেশন। তার পাশেই মজুদ রয়েছে কয়েক হাজার গ্যাস সিলিন্ডার। খান ব্রাদার্স নামে এ সিএনজি রিফুয়েলিং স্টেশন ও পেট্রোল পাম্পটি আগে থেকেই ছিলো।

    সাধারণ রোগী ও এলাকাবাসীদের প্রশ্ন এমন দুটি ঝুঁকিপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের পাশে কিভাবে এত বড় একটি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের অনুমোদন পেল। প্রশ্নটি দীর্ঘদিন ধরে ঘুরপাক খেলেও সম্প্রতি ঢাকার ভয়াবহ দুটি ট্রাজেডি এলাকাবাসীদের মনে নতুন করে উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এনিয়ে স্থানীয় জনগণের মাঝেও সৃষ্টি হয়েছে বিরুপ প্রতিক্রিয়া।

    সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পার্ক ভিউ হাসপাতালের ডানে ফিলিং স্টেশন, বামে আরেকটি বড় দালান। পাশে কোন জায়গা ফাঁকা নেই। হাসপাতাল থেকে রোগী নামানোর জন্য নেই যথাযথ অগ্নি নির্বাপন বা জরুরি বর্হিগমন পথ।

    এদিকে খান ব্রাদাসের ফিলিং স্টেশনের পেছনে শহরের প্রায় এলাকার গ্যাস সিলিন্ডারগুলো রিফুয়েল করা হয় ওমেরা কোম্পানীর গ্যাস সিলিন্ডার প্রতিষ্ঠানে। যেখানে মজুদ থাকে কয়েক হাজার সিলিন্ডার। এতে ঢাকার মত বড় ধরনের দুর্ঘটনা ও প্রাণহানীর আশংকা করছে এলাকাবাসী ও পার্ক ভিউ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীর স্বজনরা।

    রোগীদের জন্য হাসপাতালটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ জানিয়ে প্রতিবেদকের কাছে ক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশ করেন স্থানীয়রা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, পুরো এলাকাটি এমনিতেই ঘনবসতি এলাকা। এলাকাবাসী এতোদিন ঝুঁকিতে ছিল ফিলিং স্টেশন ও গ্যাস সিলিন্ডার মজুদ কারখানার উপর। তার উপর গত বছর বহুতল বিশিষ্ট হাসপাতাল হওয়ায় ঝুঁকির মাত্রা আরো তীব্র হয়। তারা বলেন, সবসময়ই আতঙ্কে থাকি। পাশের হাসপাতালের রোগিরাও এ ঝুঁকির বাইরে নয়। এ বিষয়ে যথাযথ কতৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন এলাকাবাসী।

    পার্ক ভিউ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীর স্বজন মো. আলী জানান, সাধারণ এলাকায় আগুন লাগার চাইতেও একটি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানে অগ্নিকান্ডের ঘটনা অনেক ভয়াবহতা পাবে। যদি কোন বড় দুর্ঘটনা ঘটে অনেকের প্রাণহানি ঘটবে।

    তারা মনে করেন হাসপাতালে এমন অনেক রোগী আছে যারা নিতান্তই বিছানার সঙ্গি। ঘটনা ঘটলে তারা কিভাবে বের হবে? বিপদ ঘটলে নিচে দাড়িয়ে রোগীদের পুড়ে যাওয়া দৃশ্য মোবাইলে ভিডিও ধারণ বা ছবি তোলা ছাড়া আর কিছুই করার থাকবে না।

    সচেতনতার অভাবে এবং অর্থ উপার্জনের লোভে আমরা যত্রতত্র প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলব আর ঘটনা ঘটেল ফায়ার ব্রিগেডের সমালোচনা করবো এটাইতো সচরাচর হয়ে আসছে।

    স্থানীয় একজন আইনজীবি প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়ে প্রতিবেদককে বলেন, এ ধরণের ঝুঁকিপূর্ণ দুটি প্রতিষ্ঠানের পাশে কিভাবে হাসপাতাল তৈরির অনুমোদন পেল?

    হাসপাতালের অনুমোদনের বিষয়ে জানতে পার্কভিউ হাসপাতালের মহাব্যবস্থাপক জিয়াউর রহমান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. এটিএম রেজাউল করিমকে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করে পাওয়া যায়নি।

    বিএম/তাইফুল/রাজীব…