২৮ মার্চ শুরু হচ্ছে ৩য় আন্তর্জাতিক সুফি উৎসব

    চট্টগ্রাম মেইল : চট্টগ্রামের এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে আগামী ২৮ ও ২৯ মার্চ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে দু’দিন ব্যাপি ৩য় আন্তর্জাতিক সুফি উৎসব। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সহযোগীতায় হাটখোলা ফাউন্ডেশনের আয়োজনে অনুষ্ঠানের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় থাকবে মিডিয়া গ্রাফি।

    এ উপলক্ষে আজ রোববার সকালে কর্পোরেশনের কে বি আবদুচ ছাত্তার মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে অনুষ্ঠিতব্য সুফি উৎসবের আয়োজনের সার্বিক প্রস্তুতি নিয়ে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন উৎসবের সভাপতি ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আলহাজ্ব আ জ ম নাছির উদ্দীন।

    এতে উৎসব আয়োজনের সদস্য সচিব ইউসুফ মোহম্মদ,চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শুকলাল দাশ, শিল্পী ইকবাল হায়দার, মো. জহিরুল আলম, দাউদ আবদুল্লাহ লিটন, মিডিয়া গ্রাফি’র প্রধান নির্বাহী মিল্টন দাশ বিজয় উপস্থিত ছিলেন।অনুষ্ঠানটি সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। অনুষ্ঠানের সার্বিক নিরাপত্তা বিধানের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অনুলোধ করা হয়েছে।

    লিখিত বক্তব্যে মেয়র বলেন,চট্টগ্রাম নগরীকে পরিচ্ছন্ন, সুন্দর, মনোরম ও বসবাসযোগ্য উন্নত শহর হিসেবে গড়ে তোলার পাশাপাশি সুস্থ সংস্কৃতি চর্চার মাধ্যমে মানুষের মধ্যে সুকুমার বৃত্তি জাগ্রত করা গেলে এ নগরী একদিন জঙ্গীবাদ মুক্ত অন্যতম নগরী হিসেবে গড়ে উঠবে।

    মেয়র শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। যিনি নিরন্তর সংগ্রাম ও আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে নিজস্ব বাসভূমি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। আয়োজিত ‘৩য় আন্তর্জাতিক সুফি উৎসব-এর মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হচ্ছে গান ও সুরের মাধ্যমে দেশব্যাপী সাংস্কৃতিক সৌহার্দ্য, সম্প্রীতি ও সহনশীলতা বৃদ্ধি করা, যা মানুষের আত্মার অন্যতম খোরাক।

    উৎসব আয়োজনে যেটি অনুঘটক ও প্রেরণা হিসেবে কাজ করেছে তা হল, আধ্যাত্মিক বাউল ও লোক গানের সুরের মাধ্যমে শান্তির বাণী প্রচার যা অনেক ক্ষেত্রে মুখের ভাষায় প্রকাশ অসম্ভব- যেটি এ উৎসবের অন্তর্নিহিত তাৎপর্যও বহন করে।

    ভাষা আন্দোলন ও স্বাধীনতার মূল আদর্শ ও চেতনা ছিল গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ, বাঙালি জাতীয়তাবাদ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং ধর্মনিরপেক্ষতাকে সমুন্নত রাখা। সে একই আদর্শ ও চেতনাকে ধারণ করে স্বাধীনতা অর্জনের এ মাসে উৎসবটি আয়োজিত হতে যাচ্ছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

    সংবাদ সম্মেলনে সিটি মেয়র আরো বলেন, আগামী ২৮ ও ২৯ মার্চ ‘জীবনের জন্য সংগীত’(গঁংরপ ভড়ৎ খরভব) প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে ২ (দুই)দিনব্যাপী, ‘৩য় আন্তর্জাতিক সুফি মিউজিক উৎসব’এর আয়োজন করা হয়েছে। এ উৎসবে বাংলাদেশসহ মোট পাঁচটি দেশ অংশগ্রহণ করতে যাচ্ছে। উৎসবে অংশগ্রহণকারী অন্য চারটি দেশ হচ্ছে- ভারত, ইরান, মিশর ও নেপাল। উৎসবে বাংলাদেশ থেকে প্রায় ৫০ জন ও বিদেশ থেকে ৪১ জনসহ সর্বমোট ৯১জন সুফি ও লোকসংগীত শিল্পী ও সাধক অংশগ্রহণ করবে।

    এতে অংশগ্রহণকারী বিদেশি দলের সংখ্যা ৫টি। আগামী ২৮ মার্চ বিকাল সাড়ে ৩ টায় উৎসবের উদ্বোধন করা হবে। উদ্বোধনের পর পরই সুফি সংগীতের মূর্ছনায় মঞ্চ মাতাবেন ইরানের একটি সুফি মিউজিক দল, সুফি নৃত্য পরিবেশন করবেন মিশরের শিল্পী মোহামেদ গারেব ও তাঁর দল, নেপালের কুটুম্বা, ঝুমুর গান করবেন পশ্চিমবঙ্গের শিল্পী আত্রেয়ী মজুমদার, শিল্পী ফারজানা করিম ও তার দল, ইকবাল হায়দার প্রমুখ।

    উৎসবের ২য় দিনেও যথারীতি বিকাল ৩-৩০টা থেকে অনুষ্ঠান চলবে। এ দিনে সুফি সংগীত পরিবেশনে থাকবেন ভারতীয় সুফি শিল্পী কবিতা শেট, সুফি নৃত্য পরিবেশন করবেন মিশরের শিল্পী মোহম্মেদ গারেব, শিল্পী হাসান সিহাবী, ফকির সাহাবুদ্দিন, দীপঙ্কর দে প্রমুখ।

    জাতির জনকের স্বপ্নের সোনার বাংলা বাস্তবায়নে তাঁরই সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দক্ষ ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বাংলাদেশ উন্নয়নের মহাসড়কে দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলছে। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আছে বিধায় টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা ২০৩০ এবং রূপকল্প ২০৪১ যথাসময়ে বাস্তবায়ন অসম্ভবপর হবে না। উন্নত বাংলাদেশ গড়ার সাথে সাথে সংস্কৃতিমনা, অসাম্প্রদাকি এবং মানবিক বাংলাদেশ বিনির্মাণও জরুরি।

    দেশব্যাপী সুস্থ সংস্কৃতি চর্চা ও বিকাশের পাশাপাশি চট্টগ্রামেও সংস্কৃতি চর্চার একটি বাতাবরণ তৈরি করার প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য বলে তিনি মন্তব্য করেন।

    বিএম/রাজীব…