জাদুকরি প্রতিভা : বাড়িতে দুধ ঢুকে ৮০ লিটার বের হয় ২৫০ লিটার

    চট্টগ্রাম মেইল : চট্টগ্রামে হাটহাজারী উপজেলার এক বাড়িতে জাদুকরি প্রতিভাবান ব্যাক্তির সন্ধান পেয়েছে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুহুল আমিন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক ব্যাক্তির দেয়া তথ্য অনুসন্ধানে গিয়ে বৃহস্পতিবার তিনি নিজ চোখে ঘটনাস্থলের আলামত দেখে বিস্ময় প্রকাশ করেন।

    প্রতিভাবান ব্যাক্তিটির নাম আরিফ হোসাইন। বরিশালের চন্দ্রমোহন এলাকার এ বাসিন্দা দীর্ঘদিন ধরে হাটহাজারীর আমান বাজার এলাকায় একটি ফ্যামিলি বাসা ভাড়া নিয়ে তার এ প্রতিভার বিকশিত করে আসছে। বাড়িতে বসেই এক লিটার আসল দুধকে তিনগুন করার ক্ষমতা রাখে আরিফ হোসাইন। মূলত সকলের চোখে ধুলো দিয়ে প্রতারণার সাথে ভেজাল দুধের কারখানা তৈরি করেছে আরিফ।

    জানা যায়, চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার আমান বাজার (জয়নাব ক্লাবের পাশে) মোতালেব ভবনের দোতলায় ফামিলি একটি ঘর ভাড়া নিয়ে আরিফ গড়ে তুলে তার এ ভেজাল দুধের কারখানা।

    গোসলের পানি পাওডারের সাথে মিশিয়ে তৈরি হচ্ছে খাটি গরুর দুধ

    এক ভাগ খাঁটি দুধে দুই গুন পানি ও পাউডার ব্লেন্ড করে তিনগুন খাটি গরুর দুধ তৈরিতে বেশ পারদর্শী বরিশালের আরিফ হোসাইন। ৮০ লিটার দুধকে ২৫০ লিটারে রুপান্তর করে গরুর খাটি দুধের নামে স্থানীয় বিভিন্ন মিস্টির দোকানে সরবরাহ করত। পাশাপাশি এলাকায় সাধারণ ক্রেতাদের কাছে খুচরায় এসব ভেজাল দুধ বিক্রি করে আরিফ।

    হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুহুল আমিন বলেন, বুধবার রাতে ফেসবুকের ইনবক্সে তথ্য পেয়ে বৃহস্পতিবার সকালে অভিযান পরিচালনা করি। অভিযানে গিয়ে জানতে পারি প্রতিদিন বাড়িতে ঢুকছে দুই কন্টেইনার (৮০ লিটার) তরল দুধ আর বের হচ্ছে ৮ কন্টেইনার (২৫০ লিটার) হয়ে। বাকিটা প্রতিভার স্ফুরণ। মিল্ক পাউডারের কারিশমা।

    রুহুল আমিন বলেন, এ কারিশমা সম্পর্কে প্রতারণাকারি আরিফ প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে সে বাড়িতে বসেই পাউডার ব্লেন্ড করে দুই গুণ পানি মিশিয়ে গরুর দুধ বিক্রি করে। তবে ভেজাল দুধ হিসেবে যেন কেউ চিনতে না পারে বা বুঝতে না পারে তার জন্য সে দুই ভাগ ভেজাল দুধের সাথে প্রতিদিন এক ভাগ খাটি গরুর দুধ মিশিয়ে থাকেন।

    অভিযোগ স্বীকার করে নেওয়ায় তাকে প্রথমবারের মত সতর্ক করে দিয়ে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করে ভ্রাম্যমান আদালত। তাছাড়া অভিযানে ২৫০ লিটার দুধ ও ৩৭ কেজি মিল্ক পাউডার জব্দ করা হয়। জব্দকৃত তরল দুধগুলো এতিমখানায় দিয়ে দেয়ার কথা জানিয়েছে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুহুল আমিন।

    এসব ভেজাল দুধ পানে কি ধরনের শারিরীক ক্ষতি হতে পারে এমন প্রশ্নে রুহুল আমিন বলেন, ক্ষতিকর দিকটা বুঝতে কিছুটা সময় লাগবে। তবে বিশেষজ্ঞ এক চিকিৎসক মুঠোফোনে জানিয়েছেন এসব ভেজাল দুধ মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর। এসব দুধ খেলে পেটের পীড়া, ডায়রিয়ার পাশাপাশি কিডনি রোগে আক্রান্ত হওয়ারও সম্ভাবনা থাকে।

    বিএম/রাজীব সেন প্রিন্স…