পদত্যাগে রাজি থেরেসা মে

    আন্তর্জাতিক মেইল : অবশেষে পদত্যাগে রাজি হয়েছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে। ব্রেক্সিট চুক্তিতে সমর্থনের বিনিময়ে পদত্যাগে রাজি হয়েছেন তিনি। তিনি বলেছেন, ব্রেক্সিট চুক্তি পাস হলে পরবর্তী ধাপ- ইইউ’র সঙ্গে ভবিষ্যৎ সম্পর্ক নির্ধারণের সমঝোতায় তিনি থাকবেন না।

    বুধবার নিজ দলের সংসদ সদস্যদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকে থেরেসা মে এ ঘোষণা দেন। তবে পদত্যাগের কোনো দিনক্ষণ উল্লেখ করেননি তিনি।

    হাউস অব কমন্সের লিডার অ্যান্ড্রিয়া লিডসম বলেন, পর্যাপ্ত সমর্থন নিশ্চিত করা গেলে বৃহস্পতিবার (আজ) অথবা শুক্রবার ব্রেক্সিটচুক্তি নিয়ে তৃতীয় দফা ভোটাভুটির আয়োজন হতে পারে। কট্টর ব্রেক্সিটপন্থী এই নেতা বলেন, ভবিষ্যৎ সম্পর্ক নিয়ে বিবাদ দূরে রেখে আপাতত বিচ্ছেদ নিশ্চিত করা জরুরি।

    টোরি দলের একজন পার্লামেন্ট সদস্য রয়টার্সকে বলেছেন, চুক্তিটি পাস হলে থেরেসামে পদ ছেড়ে যাবেন। অর্থাৎ তিনি চুক্তি পাস হওয়ার পর আর দায়িত্বে থাকবেন না।

    টোরি দলের আরেক পার্লামেন্ট সদস্য বলেছেন, পদত্যাগের কোনো দিনক্ষণ টেরিজা মে জানাননি, তবে তিনি ‘যথা শিগগিরই’ দায়িত্ব ছাড়বেন।

    রক্ষণশীল দলের আরেক পার্লামেন্ট সদস্য জানিয়েছেন, বৈঠকে মে বলেছেন, ব্রেক্সিটের পরবর্তী পর্যায়ের আলোচনার দায়িত্ব উত্তরসূরির হাতেই দিতে যাচ্ছেন মে।

    যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্ট ব্রেক্সিটের নিয়ন্ত্রণ কেড়ে নেওয়ায় ভীষণ উদ্বেগে পড়েন ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ দলের কট্টর ব্রেক্সিটপন্থীরা। ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে বিচ্ছেদের সুযোগ হাত ছাড়া হওয়ার আশঙ্কা তাদের।

    সে কারণে ‘মন্দের ভালো’ হিসেবে প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে’র সম্পাদিত ব্রেক্সিট চুক্তিতে সমর্থনের ইঙ্গিত দিচ্ছেন তারা। কিন্তু এই সমর্থনের বিনিময়ে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে থেরেসা মে’র পদত্যাগ দাবি করেন তারা। ইইউ’র সঙ্গে সমঝোতার পরবর্তী ধাপ ভবিষ্যৎ সম্পর্ক নির্ধারণের দায়িত্বে ব্রেক্সিটপন্থী কোনো প্রধানমন্ত্রীকে দেখতে চান।

    এর আগে গত সোমবার এক প্রস্তাব পাসের মাধ্যমে যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্ট সংসদীয় কার্যবিধির নিয়ন্ত্রণ কেড়ে নেয়। এরপর থেকে ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ দলের কট্টর ব্রেক্সিটপন্থী আইনপ্রণেতাদের সংগঠন ‘ইউরোপিয়ান রিসার্চ গ্রুপে’র (ইআরজি) নেতারা নড়েচড়ে বসেন।

    এদিকে বুধবার সংসদের কার্যবিধির নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার সুযোগ কাজে লাগিয়েছেন সর্বদলীয় আইনপ্রণেতারা। এদিন ব্রেক্সিট বিষয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠের সমর্থন যাচাইয়ে ১৬টি বিকল্প প্রস্তাব উত্থাপিত হয়।

    এসবের মধ্য থেকে স্পিকারের বাছাই করা ছয়টি প্রস্তাবের ওপর গতকাল সন্ধ্যায় ভোটাভুটির কথা। এসব ভোটে চূড়ান্ত কোনো ফল না মিললে আগামী সোমবারও একই ধরনের ভোটাভুটির আয়োজন করবে পার্লামেন্ট।

    এর আগে ফেব্রুয়ারি মাসের শুরুর দিকে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়, মার্চ মাসেই পদত্যাগ করছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে। খবরে বলা হয়, মার্চ মাসে ব্রেক্সিট চুক্তি পাস হতে পারে। আর তা পাস হয়ে গেলে প্রধানমন্ত্রীত্বের পদ ছাড়তে পারেন।

    বিএম/রনী/রাজীব