এটা নিছক হত্যাকাণ্ড, অপরাধী যত প্রভাবশালী হোক ব্যবস্থা

    বিএম ডেস্ক : রাজধানীর বনানীর বহুতল ভবন এফআর টাওয়ারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড কোনো দুর্ঘটনা নয়। বরং এটি গাফিলতির মাধ্যমে সংঘটিত একটি হত্যাকাণ্ড। এ ঘটনার জন্য যেসব আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া দরকার তাই নেওয়া হবে বলে মন্তব্য করেছেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।

    শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে এফআর টাওয়ার পরিদর্শনে আসেন মন্ত্রী। এসময় পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।

    পরে উপস্থিত সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, এ দুর্ঘটনার জন্য যারা দায়ী তারা যত প্রভাবশালী হোক না কেন আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। এমনকি রাজউকের কেউ জড়িত থাকলেও তাকে আইনের আওতায় আনা হবে।

    দায়ীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনে ফৌজদারি মামলা করা হবে বলেও জানান মন্ত্রী।

    তিনি আরো বলেন, আগুন লাগার ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আমি স্পষ্ট করে বলছি, আমাদের তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে। আগের তদন্ত প্রতিবেদনে কি সুপারিশ ছিল আর সেগুলো বাস্তবায়নের দায়িত্ব যাদের ওপর ছিল তারা কেন সেগুলো বাস্তবায়ন করেনি সেগুলোও আমরা খতিয়ে দেখব।

    এফআর টাওয়ার ২৩ তফা করার অনুমোদন ছিল কিনা এমন প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, ভবনটিকে ১৯৯৬ সালে ১৮ তলা ভবন নির্মাণের অনুমোদন দেয়া হয়েছিল। ২০০৭ সালে তারা রাজউকে একটি নথি দাখিল করে ২৩ তলা করার। কিন্তু তাদের সেই নথি অনুমোদনের পক্ষে কোনো দলিল রাজউকে ছিল না। কারা এ কাজের সঙ্গে জড়িত ছিল, তারা যদি রাজউকের লোকও হন, আমরা ছাড় দেব না।

    মন্ত্রী মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠনের কথা জানান। ত্রুটির জন্য যে বা যারাই অর্থাৎ প্রতিষ্ঠান, মালিক বা সংশ্লিষ্ট লোকজন সবাইকে শাস্তি দেওয়া হবে।

    মন্ত্রী বলেন, এ ভবনটির (এফ আর টাওয়ার) আশপাশে যেসব বহুতল ভবন আছে সেগুলোর ব্যাপারেও খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। অনুমোদিত অংশের বাইরে ভবন ভাঙার সুযোগ থাকলে ভেঙে ফেলা হবে।

    বৃহস্পতিবার দুপুরে বনানীর ১৭ নম্বর রোডে ২২ তলা এফআর টাওয়ারের নবম তলায় আগুন লাগে। আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ২০টি ইউনিট কাজ করে। এদের সঙ্গে যোগ দেন সেনা, বিমান ও নৌবাহিনীর সদস্যরা। এলাকার সাধারণ মানুষও উদ্ধারকাজে অংশ নেন। উদ্ধারকাজে অংশ নেয় ৫টি হেলিকপ্টার। বালি-পানি দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা চালানো হয়। হেলিকপ্টারগুলো বাতাস দিয়ে ধোঁয়া সরানোর চেষ্টা করে। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ৬ ঘণ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।

    সন্ধ্যায় একাংশের আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার পর ফায়ার সার্ভিসকর্মী ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ভবনের বিভিন্ন ফ্লোরে প্রবেশ করেন। সেখানে আহত ও নিহতদের উদ্ধার করে নিচে নামিয়ে আনেন।

    এদের অনেকেই দগ্ধ হয়েছেন। ধোঁয়ার কারণে অজ্ঞান হয়েও মারা গেছেন কেউ কেউ। আবার জীবিতও অনেককে উদ্ধার করা হয়।

    বিএম/রনী/রাজীব