বিএম ডেস্ক : সুলতান হাসানাল বলকিয়ার আমন্ত্রণের তিনদিনের সরকারি সফরে ব্রুনেই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানানো হয়েছে।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ভিভিআইপি ফ্লাইটে রোববার স্থানীয় সময় দুপুর আড়াইটায় তিনি ব্রুনেইয়ের রাজধানী বন্দর সেরি বেগওয়ানে পৌঁছালে দেশটির যুবরাজ হাজী আল মুহতাদি বিল্লাহ তাকে স্বাগত জানান।
বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হয়, দেওয়া হয় লাল গালিচা সংবর্ধনা। ব্রুনেইয়ের রয়্যাল গার্ডের একটি চৌকস দল প্রধানমন্ত্রীকে গার্ড অব অনার দেয়। এ সময় দুই দেশের জাতীয় সংগীত বাজানো হয়।
এরপর মোটর শোভাযাত্রা করে প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে যাওয়া হয় দ্য এম্পায়ার হোটেল অ্যান্ড কান্ট্রি ক্লাবে। তিন দিনের এই সরকারি সফরে প্রধানমন্ত্রী এই হোটেলেই অবস্থান করবেন।
এর আগে রোববার (২১ এপ্রিল) সকাল ৮টায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বিজি-১৪০৫ ফ্লাইটে ব্রুনেই দারুস সালামের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়েন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ব্রুনেইয়ের সুলতান হাজি হাসানাল বলকিয়ার আমন্ত্রণে শেখ হাসিনার এই সফরে দুই দেশের মধ্যে কয়েকটি সমঝোতা স্মারক সই হওয়ার পাশাপাশি বিনিয়োগের পথ খুলবে বলে সরকারের তরফ থেকে আশা করা হচ্ছে।
কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক, পররাষ্ট্র মন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী ইমরান আহমেদ, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খান খসরু এবং সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এই সফরে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গী হয়েছেন।
আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক শাম্মী আহমেদ, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, সাবেক মুখ্য সচিব আব্দুল করিম, বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরের কিউরেটর নজরুল ইসলাম খানও রয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে।
এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সচিব সাজ্জাদুল হাসান, প্রেস সচিব ইহসানুল করিম, সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মিয়া মোহাম্মদ জয়নুল আবেদিন রয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গীদের মধ্যে।
এফবিসিসিআই সভাপতি শফিউল ইসলাম, এমসিসিআই সভাপতি নিহাদ কবির, বিজিএমইএর সভাপতি সিদ্দিকুর রহমানসহ ব্যবসায়ীদের একটি প্রতিনিধিদল প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ব্রুনেই এসেছেন।
সফরের প্রথম দিন হোটেলের বলরুমে প্রবাসী বাংলাদেশিদের এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন শেখ হাসিনা। পরে বাংলাদেশ হাই কমিশনারের দেওয়া নৈশভোজে অংশ নেবেন।
সোমবার প্রধানমন্ত্রী ব্রুনাইয়ের সুলতান বলকিয়ার সরকারি বাসভবন ইস্তানা নুরুল ইমানের চেরাদি লায়লা কেনচানায় রাজ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মিলিত হবেন।
সেখানে সুলতানের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হবে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর। বৈঠক শেষে তাদের উপস্থিতিতে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হবে।
সোমবার বিকালে এম্পায়ার হোটেলে ব্রুনেই ও বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের মধ্যে অনুষ্ঠেয় বৈঠকে যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী।
পরে তিনি জামে আসর মসজিদ পরিদর্শন করবেন এবং সেখানে আসরের নামাজ আদায় করবেন। সুলতানের সরকারি বাসভবনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সন্মানে দেওয়া ভোজসভাতেও তিনি যোগ দেবেন।
মঙ্গলবার সকালে ব্রুনেইয়ের রাজধানীর কূটনৈতিক এলাকা জালান কেবাংসানে বাংলাদেশ হাই কমিশনের নতুন চ্যান্সেরি ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন শেখ হাসিনা। পরে তিনি রয়েল রেজালিয়া জাদুঘর পরিদর্শন করবেন।
সেদিন স্থানীয় সময় বিকাল ৫টায় ঢাকার উদ্দেশে ব্রুনাই ছাড়বেন শেখ হাসিনা। বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যায় ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছানোর কথা রয়েছে তার।