ফেনীর সেই মাদ্রাসা ছাত্রীর ৮০ ভাগ পুড়ে গেছে

    বিএম ডেস্ক : ফেনীর সেনাগাজীতে গতকাল মাদ্রাসার পরীক্ষাকেন্দ্রে নুসরাত জাহান নামের গায়ে আগুন লাগিয়ে দেওয়া শিক্ষার্থীর শরীরের প্রায় ৮০ ভাগ পুড়ে গেছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।

    ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটের সমন্বয়ক সামন্ত লাল সেন জানান, তার শরীরে ৮০ শতাংশের মত বার্ন। তাকে আইসিইউতে রাখা হয়েছে, একটি মেডিকেল বোর্ডও গঠন করা হয়েছে।

    তিনি বলেন, আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি কিন্তু তার অবস্থা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক। উন্নতমানের চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে নিয়ে যাওয়া হবে কিনা সে প্রশ্নের জবাবে সামন্ত লাল সেন জানান, এখনো সেবিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। যদি সরকারি সিদ্ধান্ত হয় তাহলে তাকে বিদেশে নেয়া হতে পারে।

    যেভাবে গায়ে আগুন দেয়ার ঘটনাটি ঘটে

    শনিবার সকালে ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাত জাহান আরবি প্রথম পত্র পরীক্ষা দিতে গেলে এ ঘটনা ঘটে।

    নুসরাতের ভাই মাহমুদুল হাসান গতকাল বলেন, নুসরাত কয়েকদিন আগে তার মাদ্রাসার অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির মামলা করেছিল। সেই ঘটনার জেরে ওই অধ্যক্ষের পক্ষের শিক্ষার্থীরা আমার বোনকে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা করেছে।

    চিকিৎসকের সামনে পুলিশের জবানবন্দিতে নুসরাতও জানিয়েছেন যে, পরীক্ষার কেন্দ্রের বাইরে তাকে কয়েকটি মুখোশ পরা মেয়ে ডেকে নিয়ে যায় এবং অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে মামলাটি তুলে নিতে বলে। নুসরাত তাতে অস্বীকৃতি জানানোয় তারা তার শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়।

    পরিবারের অভিযোগ, ওই মেয়েরাই নুসরাতকে মিথ্যা বলে, পরিকল্পিতভাবে হত্যার উদ্দেশ্যে শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।

    গত ২৭শে মার্চ ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলা তার বোনকে নিজ কক্ষে ডেকে নিয়ে শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেছে এমন অভিযোগে পুলিশের কাছে মামলা করে নুসরাতের পরিবার।

    পরে পুলিশ ওই মামলার জেরে অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলাকে গ্রেফতার করে এবং আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠায়।

    এই ঘটনার পর পর মাদ্রাসায় ওই শিক্ষকের পক্ষে বিপক্ষে শিক্ষার্থীরা আলাদাভাবে আন্দোলন শুরু করে।

    বিএম/রনী/রাজীব