দুর্বৃত্তদের আগুনে একই পরিবারের ৪ জন দগ্ধ

    বিএম ডেস্ক : নরসিংদীর রায়পুরার একটি গ্রামে দুর্বৃত্তদের দেয়া আগুনে দগ্ধ হয়েছেন একই পরিবারের চারজন।

    মঙ্গলবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। গুরুতর অবস্থায় ওই দগ্ধ চারজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগে ভর্তি করা হয়েছে।

    দগ্ধদের মধ্যে রয়েছে একই পরিবারের তিন বোন। তারা হলো ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী প্রীতি আক্তার (১১), এসএসসি পরীক্ষার্থী মুক্তামনি (১৬), অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী সুইটি আক্তার (১৩)। দগ্ধ অন্যজন তাদের ফুফু খাতুন্নেছা (৬০)।

    দগ্ধ তিনবোনের বড় বোন রত্না আক্তার জানায়, প্রতিবেশী শিপন, কাজলদের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে জায়গা নিয়ে তাদের বিরোধ চলছিল। অনেকদিন আগে রায়পুরায় হত্যা মামলার মিথ্যা আসামি করা হয় তার দুই ভাই সোহাগ ও বিপ্লবের বিরুদ্ধে। এখন তারা পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। এর মাঝে গত ডিসেম্বরে তাদের বাবা শামছুল হক মারা যান। তারপর থেকে ওই প্রতিবেশীরা নানাভাবে হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছেন। সর্বশেষ তারা এ ঘটনা ঘটায়।

    রত্মা বলে, আজ ভোরে সবাই বাসায় ঘুমিয়ে ছিল। তখন পাশের বাড়ির শিপন, কাজল, রবিন, লোকমানসহ কয়েকজন তাদের ঘরে আগুন ধরিয়ে দেয়।

    ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের মেডিকেল অফিসার ডা. এনায়েত কবির বলেন, ‘রায়পুরা থেকে চারজন দগ্ধ রোগী এসেছে। সবার দুই হাতসহ মুখ পুড়ে শ্বাসনালী পুড়ে গেছে। এর মধ্যে খাতুন্নেছার ১২ শতাংশ, প্রীতির ১৫ শতাংশ, মুক্তামনির ১০শতাংশ, সুইটির ১৫ শতাংশ পুড়ে গেছে।’

    এ ব্যাপারে রায়পুরা থানার ওসি মোহসিনুল কাদির সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, এলাকায় পরপর দুইটি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ওই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার আসামি দগ্ধদের দুই ভাই সোহাগ ও বিপ্লব। তারা এখন পলাতক। সেই ঘটনার জের ধরে অন্য কেউ এই ঘটনা ঘটিয়ে থাকতে পারে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

    অন্যদিকে স্থানীয়রা জানায়, জমি সংক্রান্ত বিরোধ নিয়ে লোচনপুর গ্রামের দুলাল মিয়াদের সাথে একই গ্রামের বিপ্লবদের দ্বন্ধ চলে আসছিল। দ্বন্ধের জের ধরে প্রতিপক্ষরা দুলাল মিয়াকে হত্যা করে। এ নিয়ে বিপ্লবদের বিরুদ্ধে হত্যামামলা দায়ের করা হয়। এরপর থেকে অভিযুক্ত বিপ্লব মিয়ার পরিবার গাঁ-ঢাকা দিয়ে ছিলো।

    সোমবার নিজ বাড়িতে ফিরে আসেন বিপ্লব মিয়ার পরিবার। এরপর নিজ বাড়িতেই অগ্নিদগ্ধ হয় বিপ্লব মিয়ার পরিবারের তিন বোন ও ফুফু। তবে কীভাবে আগুন লাগলো তা জানেন না স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ এলাকাবাসী। তাই ধারণা করা হচ্ছে, বাইরে থেকে কেউ এ আগুন লাগিয়েছে।

    বিএম/রনী/রাজীব