চট্টগ্রামে মাদ্রাসায় লাশ উদ্ধারের ঘটনায় মামলা : অধ্যক্ষসহ আটক ৫

    মাদ্রাসা ছাত্রের ঝুলন্ত লাশ মাদ্রাসায় তালা

    চট্টগ্রাম মেইল : চট্টগ্রামের বায়েজিদ থানা অক্সিজেন কুয়াইশ সংযোগ সড়কের কওমী মাদ্রাসা থেকে ছাত্রের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধারের ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়।

    আজ শুক্রবার দুপুর ১টার সময় নিহত ছাত্র হাবিবুর রহমানের পিতা আনিসুর রহমান বাদি হয়ে বায়েজিদ থানায় মামলাটি দায়ের করেন। এ মামলায় মাদ্রাসা অধ্যক্ষসহ দুজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত বেশ কয়েকজনকে আসামি করা হয়।

    মামলা দায়েরের আগেই এ ঘটনায় মাদ্রাসা অধ্যক্ষসহ ৫ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। শুক্রবার সকালে বায়োজিদ বোস্তামী থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে ৫ জনকে আটক করেন। আটককৃতরা হলেন- মাদ্রাসাটির অধ্যক্ষ আবু দাদরা, শিক্ষক মো. তারেক আহমেদ, জোবায়ের, মো. আনাস, ও আব্দুস সামাদ।

    বায়েজিদ বোস্তামি থানার ওসি আতাউর রহমান খন্দকার শুক্রবার বলেন, মাদ্রাসা অধ্যক্ষ আবু দারদা, হাফেজ তারেকসহ পাঁচজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন হাতে পেলে তদন্ত রিপোর্টের ভিত্তিতে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

    বুধবার রাত ১১টার সময় অক্সিজেন এলাকার কুয়াইশ সংযোগ সড়কে ওমর ফারুক আল ইসলামীয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানার মসজিদ থেকে হাবিবুরের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। উদ্ধারকালে মাদ্রাসার চতুর্থ তলার একটি কক্ষে জানালার গ্রিলের সাথে বাঁধা গামছা হাবিবুরের গলায় পেছানো ছিল। তাছাড়া তার হাটুতে জখমের চিহ্ন পায় পুলিশ।

    খাগড়াছড়ির দিঘীনালা উপজেলার মধ্য বোয়ালখালী পশ্চিম পাড়ার আনিসুর রহমানের ছেলে হাবিবুর রহমান মাদ্রাসার ছাত্রাবাসেই থাকতেন বলে জানিয়েছে স্বজনরা।

    বৃহস্পতিবার দুপুরে চমেক হাসপাতাল মর্গে ছেলের মরদেহের পাশে বিলাপ করতে করতে হাবিবুরের বাবা আনিসুর রহমান গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, নিহতের চার দিন আগে তাঁর ছেলেকে মাদ্রাসার শিক্ষক তারেক আহমেদ মারধর করলে ছেলে মাদ্রাসা থেকে বাসায় চলে আসে। পরদিন তাকে বুঝিয়ে পুনরায় মাদ্রাসায় পাঠানো হয়। বুধবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে মাদ্রাসা থেকে ফোন করে জানানো হয়, হাবিবুরকে মাদ্রাসায় পাওয়া যাচ্ছে না।

    এই খবর শুনে আত্মীয়স্বজন মিলে বিভিন্ন জায়গায় হাবিবুরের খোঁজ করা হয়। তবে কোথাও তাকে পাওয়া যায়নি। বৃহস্পতিবার রাত নয়টার দিকে মাদ্রাসা থেকে ফোন করে জানায় হাবিবুর মাদ্রাসার একটি কক্ষে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। পরে সেখানে গিয়ে দেখেন, পুলিশ লাশ উদ্ধার করছে।

    তিনি বলেন, আমার ছেলে আত্মহত্যা করতে পারেনা, তাকে নির্যাতন করে পরিকল্পিতভাবে হত্যার পর গলায় গামছা পেছিয়ে জানালার গ্রিলের সাথে ঝুঁলিয়ে রাখা হয়েছে। কর্তৃপক্ষ আত্মহত্যা বলে প্রচার করছে।

    বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নিহত মাদ্রাসা ছাত্র হাবিবুর রহমানকে খাগড়াছড়ির দিঘীনালার গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আনিসুর রহমান।

    বিএম/রাজীব সেন…

    আরো খবর : মাদ্রাসায় ঝুলন্ত ছাত্রের লাশ : পরিবারের দাবি নির্যাতনের পর হত্যা