এমডির জন্য শরবত নিয়ে ওয়াসার সামনে জুরাইনবাসীর অবস্থান

    বিএম ডেস্ক : ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তাকসিম এ খানকে ওয়াসার পানি দিয়ে শরবত বানিয়ে খাওয়াতে ওয়াসা ভবনের সামনে অবস্থান করছেন জুরাইনবাসী।

    মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) সকাল ১১টায় কারওয়ানবাজারে অবস্থিত সংস্থাটির ভবনের সামনে পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী অবস্থান নেয় তারা। কর্মসূচির নেতৃত্ব দিচ্ছেন মিজানুর রহমান।

    জুরাইনের বাসিন্দা মিজানুর রহমান বলেন, ‘আমাদের এলাকার ওয়াসার পানি ড্রেনের পানির মত অপরিষ্কার। এটাতো খাওয়া দূরের কথা, গন্ধে হাতে নেওয়াই যায় না। এ অবস্থায় ওয়াসার এমডি কীভাবে বলেন ওয়াসার পানি শতভাগ সুপেয়, বিশুদ্ধ। তাই আমরা এই পানি দিয়ে শরবত বানিয়ে তাকে খাওয়াতে এসেছি।’

    এদিকে জুরাইনবাসীর এমন কর্মসূচিতে ওয়াসা ভবনের গেটে অতিরিক্ত পুলিশ, আনসার সদস্যরা অবস্থান নিয়েছেন।

    গত ১৭ এপ্রিল টিআইবির পক্ষ থেকে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। ‘ঢাকা ওয়াসা: সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক এক গবেষণা প্রতিবেদনে ওয়াসায় অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়টি উল্লেখ করা হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, ঢাকা ওয়াসার পানির নিম্নমানের কারণে ৯৩ শতাংশ গ্রাহক বিভিন্ন পদ্ধতিতে পানি পানের উপযোগী করে। এর মধ্যে ৯১ শতাংশ গ্রাহকই পানি ফুটিয়ে বা সিদ্ধ করে পান করে। গৃহস্থালি পর্যায়ে পানি ফুটিয়ে পানের উপযোগী করতে প্রতি বছর আনুমানিক ৩৩২ কোটি টাকার গ্যাসের অপচয় হয়।

    টিআইবির এমন প্রতিবেদনের সমালোচনা করে ওয়াসার পানি শতভাগ সুপেয় বলে দাবি করেন সংস্থাটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তাকসিম। তার মন্তব্যের প্রতিবাদ জানায় পুরান ঢাকার জুরাইনবাসী। এর অংশ হিসেবে মঙ্গলবার বেলা ১১টায় তারা কারওয়ানবাজারে অবস্থিত ওয়াসা ভবনের ঠিক বিপরীতে অবস্থান নেন তারা।

    মিজানুর রহমান বলেন, পূর্ব জুরাইনের দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৫৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দারা এ উদ্যোগ নিয়েছেন। আমাদের এলাকার পানি খুবই খারাপ, দুর্গন্ধযুক্ত ও ড্রেনের পানির মতো। ২০১২ সালে আমরা জুরাইনের সাড়ে ৩ হাজার বাসিন্দা গণস্বাক্ষর নিয়ে ওয়াসার এমডি বরাবর অভিযোগ করেছিলাম। সেই অভিযোগের কোনও কাজ হয়নি। এখনও প্রতিদিন ময়লা পানি আসে। আমরা কয়েক বছর ধরে ওয়াসার পানি শুধুমাত্র গোসল, কাপড় ও বাসনকোসন ধোয়ার জন্য ব্যবহার করছি। খাওয়ার জন্য মসজিদের টিউবওয়েলের পানি কিনে খাচ্ছি। প্রতি ১০ লিটার পানির জন্য ২ টাকা দিতে হয়। এ অবস্থায় ওয়াসার এমডি কী মনে করে পানিকে শতভাগ সুপেয় বললেন তা আমাদের বোধগম্য হয়নি। আজ আমরা এসেছি সমাধানের জন্য।

    কর্মসূচির বিষয়ে তিনি আরও বলেন, ‘আমরা যারা একসঙ্গে লাইনে দাঁড়িয়ে পানি আনতে যাই, তাদের অনেকেই ঐক্যবদ্ধ হয়ে এ কর্মসূচি দিয়েছি। প্রতিবাদের অংশ হিসেবে আমরা ওয়াসা ভবনে গিয়ে এমডির জন্য ওয়াসার বিভিন্ন কলের পানি নিয়ে এসেছি। যদি তার ডায়াবেটিস থাকে তাহলে শুধু লেবু দিয়ে শরবত তৈরি করে খাওয়াবো। তিনি খেয়ে বলবেন, পানি কতটুকু সুপেয়।’

    বিএম/রনী/রাজীব