খাদ্যে ভেজালকারী, মাদক কারবারি, ধর্ষণ ও সন্ত্রাস জঙ্গিবাদেরই উৎস
    অপরাধীদের আইনি সহায়তা না দিতে আইনজীবিদের প্রতি সুজনের আহবান

    চট্টগ্রাম মেইল : চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন বলেন, ইয়াবা আমাদের দেশের তরুন যুবসমাজকে গ্রাস করেছে। প্রতিদিন যেমন ইয়াবা ধরা হচ্ছে তেমনি প্রতিদিন হাজার হাজার পিস ইয়াবা তরুনরা গ্রহণ করছে।

    তাছাড়া ইয়াবার করাল গ্রাসে আসক্ত হয়ে সম্প্রতি দেশে উদ্বেগজনকহারে ধর্ষণের মাত্রা বেড়ে গেছে। শিশু থেকে শুরু করে নারীরাও ধর্ষণের শিকার হচ্ছে প্রতিনিয়তই। প্রতিদিন গণমাধ্যমে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের ধর্ষণের খবর পাওয়া যাচ্ছে। বিভিন্নভাবে নির্যাতিত হচ্ছে শিশু ও নারীরা। এভাবে চলতে থাকলে সামাজিক কাঠামো ধ্বংস হয়ে যেতে পারে।

    অন্যদিকে বর্তমান সরকার জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিলেও আইন শৃংখলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে আড়ালে থেকে জঙ্গী কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার পায়তারা করছে একটি মহল।

    সুজন বলেন, সাধারণত অপরাধীরা অপরাধ করে তা আড়াল করার জন্য আদালতের দ্বাড়স্থ হয়। সেক্ষেত্রে আইনজীবিদের ভূমিকা কিন্তু ব্যাপক। আইনজীবিরা যদি উক্ত অপরাধীদের আইনি সহায়তা না দেয় তাহলে অপরাধীদের অপরাধ করার প্রবণতা কমে আসবে। ফলে এ সমস্ত জঘন্য অপরাধীদের আইনি সহায়তা না দেওয়ার জন্য তিনি আইনজীবি সমিতির নেতৃবৃন্দের প্রতি আহবান জানান।

    এছাড়াও উপরোক্ত অপরাধী কতৃক যারা ক্ষতিগ্রস্ত তাদেরকে বিনামূল্যে আইনি সহায়তা প্রদান করার জন্য নেতৃবৃন্দের প্রতি তিনি অনুরোধ জানিয়েছে সুজন।

    তিনি আজ বুধবার দুপুরে জনদুর্ভোগ লাঘবে জনতার ঐক্য চাই শীর্ষক নাগরিক উদ্যোগের নের্তৃবৃন্দদের সাথে নিয়ে চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবি সমিতির নেতৃবৃন্দের সাথে সমিতির কার্যালয়ে দেখা করতে গেলে এসব আহবান জানান।

    সুজন বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশে খাদ্রদ্রব্যে ভেজালের পরিমাণও উদ্বেগজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। মাত্রাতিরিক্ত হারে ভেজালের ফলে শিশু থেকে শুরু করে আবাল বৃদ্ধ বনিতা বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। অল্প বয়সেই মানুষ কিডনী লিভার এবং ক্যান্সারের মতো জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। ফলে ডাক্তার ও হাসপাতালে একদিকে যেমন সময়ের অপচয় হচ্ছে অন্যদিকে বিপুল পরিমান অর্থ ব্যয় হচ্ছে। এতে সর্বস্বান্ত হচ্ছে জনসাধারণ। প্রতিনিয়ত ভেজাল খাদ্যদ্রব্য গ্রহণের ফলে প্রজন্মে পর প্রজন্ম রোগে শোকে কষ্ট পাচ্ছে। এসব ভেজাল খাদ্য বিপণন ও পরিবেশকদের বিরুদ্ধেও আইনী সহায়তা না করে কঠোর অবস্থানে থাকার আহবান জানান সুজন।

    মতবিনিময় সভায় আইনজীবি সমিতির নের্তৃবৃন্দরা নাগরিক উদ্দ্যেগের চিহ্নিত সমস্যাগুলো মনোযোগ দিয়ে শুনেন। বলেন, একটি দেশে জনগন যতই সচেতন এবং প্রতিবাদ মূখর হবে সেখানে অপরাধ কমিয়ে আসতে বাধ্য। তবে মাত্রাতিরিক্ত হারে উল্লেখিত অপরাধের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় তারাও উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

    নেতৃবৃন্দ বলেন, আমরা আইন পেশার মতো একটি পেশাকে জীবনের ব্রত হিসেবে ধারন করেছি একজন নাগরিকের উপকার সাধন করার জন্য। যাতে কোন নাগরিক কোন প্রকার মিথ্যা মামলায় কিংবা বিনা অপরাধে অপরাধী না হয়। সংবিধানের প্রদত্ত নির্দেশনা মোতাবেক কাজ করে আইনজীবিগণ। সংবিধান সকল নাগরিকের সমান অধিকার নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর। ঠিক তেমনি ভাবে একজন অপরাধীও আইনের সকল সুবিধা পাওয়ার অধিকার আছে যে পর্যন্ত তিনি আদালত কর্তৃক দোষী সাব্যস্ত না হচ্ছেন।

    আদালত কর্তৃক দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পূর্বে কোন অপরাধীকে আইনের ভাষায় আমরা অপরাধী বলতে পারি না। কোন আইনজীবি যদি এসব অপরাধীদের মামলা পরিচালনা না করে সেক্ষেত্রে রাষ্ট্র নিজ উদ্যোগে আইনজীবি নিয়োগ করে। তাই আমাদেরকে হয়তো কোন কোন ক্ষেত্রে এসব অপরাধীদের মামলা পরিচালনা করতে হয়।

    নেতৃবৃন্দ ভেজাল প্রতিরোধে বিশেষ ক্ষমতা আইন ২৫/সি ধারা সংশোধন করে সর্বোচ্চ সাজা প্রদান করার জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানান। এছাড়া যারা ক্ষতিগ্রস্ত তাদের জন্য সরকার বিনামূল্যে আইনি সহায়তা প্রদান করছেন বলে নাগরিক উদ্যোগের নেতৃবৃন্দকে অবহিত করেন। নেতৃবৃন্দ মনে করেন শুধু আইন দিয়ে এসমস্ত অপরাধীদের অপরাধ দমন করা সম্ভব নয়। এজন্য দরকার সামাজিক আন্দোলন। যেটা করে যাচ্ছেন নাগরিক উদ্যোগ। নাগরিক উদ্যোগ সহ সম্মিলিত সবার সহযোগীতায় সমাজে অপরাধ কমে আসলে বলে আইনজীবি সমিতির নেতৃবৃন্দ মত প্রকাশ করেন।

    এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা আইনজীবি সমিতির সাবেক সভাপতি ও জেলা পিপি এডভোকেট সিরাজুল ইসলাম, আইনজীবি সমিতির সভাপতি এডভোকেট এ.এস.এম বদরুল আনোয়ার, সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব খান, হাজী মোঃ ইলিয়াছ, মোঃ কামাল মেম্বার, আব্দুর রহমান মিয়া, ইসহাক চৌধুরী, হাজী হোসেন কোম্পানী, সাইদুর রহমান চৌধুরী, নিজাম উদ্দিন, এজাহারুল হক, মোসাদ্দেক হোসেন বাহাদুর, নাছির উদ্দিন, মোঃ শাহজাহান, জাহেদ আহমদ চৌধুরী, জাহাঙ্গীর আলম, স্বরূপ দত্ত রাজু, রকিবুল আলম সাজ্জী, মোঃ ওয়াসিম, মোজাম্মেল হক সুমন, শিশির কান্তি বল,শেখ সরওয়ার্দী এলিন, মনিরুল হক মুন্না, হাসান মুরাদ, আব্দুল মাবুদ আসিফ, সাফায়েত হৃদয়, জোবায়েদুল ইসলাম ফাহিম, রিয়েল দত্ত প্রমূখ।

    বিএম/রাজীব সেন প্রিন্স..