কাউনিয়ায় খাদ্য গুদামে ধান ক্রয় শুরু হয়নি : কৃষকরা হতাশ

    রংপুরের কাউনিয়ায় কৃষকেরা এবার সোনালি ধান ঘরে তুলেছেন। আর এই ধানের ন্যায্যমূল্য না পেয়ে কৃষকেরা তা পানির দরে বিক্রি করে পরিবারের খরচ মিটাচ্ছেন। অনেক কৃষক ধারদেনা পরিশোধ করতে কম মূল্যে ধান বিক্রি করছেন। এতে লোকশান গুনছেন তারা।

    সরকারিভাবে ২৫ এপ্রিল থেকে ধান-চাল সংগ্রহ অভিযান শুরুর ঘোষণা দিলেও এখন পর্যন্ত কাউনিয়া উপজেলা খাদ্যগুদামে ধান ক্রয় শুরু হয়নি। আর সহসাই ধান ক্রয় শুরু হচ্ছে না বলে খাদ্য গুদাম সূত্র জানা গেছে। ফলে হতাশায় ভুগছেন কৃষকেরা। আর সংগ্রহ বাবদ বরাদ্দ কম থাকায় কৃষকেরা তাদের ধান গুদামে ঢুকাতে পারবে কি না তা নিয়ে চিন্তিত আছে।

    উপজেলা কৃষি অফিসার সাইফুল ইসলাম বলেন, এ বছর ৭ হাজার ৬শত হেক্টর জমিতে প্রায় ৪৫ হাজার ৬০০ মে.টন ধান উৎপন্ন হয়েছে। তবে উৎপাদনের তুলনায় আর যে পরিমাণ ধান সংগ্রহ করা হবে তা চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল।

    উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রণ কার্যালয় সূত্র জানায়, এ বছর খাদ্যগুদামে প্রতি কেজি ধান ২৬ টাকা দরে ২৩৩ টন ধান ও প্রতি কেজি ৩৬ টাকা দরে ১৯০৪ টন চাল সংগ্রহ করা হবে। ইতিমধ্যে চালকল মালিকদের কাছ থেকে চাউল ক্রয় শুরু করা হয়েছে।

    তবে কৃষকদের তালিকা প্রণয়ন ও উপজেলা ক্রয় কমিটির সভা না হওয়ায় সহসাই ধান ক্রয় কার্যক্রম শুরু হচ্ছে না। আর এখনো ধান সংগ্রহ না করায় কৃষক পরিবারে হতাশা দেখা দিয়েছে।

    কৃষকদের অভিযোগ খাদ্য গুদাম কর্মকর্তাকে সন্তুষ্ট করতে পারে মিল মালিকরা, কৃষকরা তো পারে না। তাই উপজেলা খাদ্য অধিদপ্তর চালকল মালিকদের বাঁচাতে ব্যস্ত, কৃষকদের বাঁচাতে নয়।

    নাজিরদহ গ্রামের শিক্ষিত ও সামর্থবার কৃষক কামরুজ্জামান বলেন, এবছর বোরো ধানের বাম্পার ফলনে কৃষক আনন্দিত। তবে ধানের মূল্য কম হওয়ায় তাদের সে আনন্দ অনেকটাই ম্লান হচ্ছে। সরকার একমাস আগে ধান ক্রয় শুরুর নির্দেশ দিয়েছে। কিন্তু খাদ্য বিভাগ যেন মিল মালিকগণকে বাঁচাতে মরিয়া। অথচ ওই মিল মালিকরা ধান চাষ করেন না। তারা কৃষকের কাছ থেকে কম দামে ধান ক্রয় করে বেশি দামে সরকারের কাছে বিক্রি করেন। এতে কৃষক ধানের ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হন। তিনি বলেন, কৃষক বাঁচাতে সরকার সদয়, কিন্তু উপজেলা খাদ্য বিভাগ নয়।

    উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা মো: রইচ উদ্দিন বলেন, নিয়ম মেনে চাল ক্রয় শুরু করা হয়েছে। আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই কৃষকদের ধান ক্রয়ের কার্যক্রম শুরু হবে।

    উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও খাদ্য ক্রয় কমিটির সভাপতি মোছাঃ উলফৎ আরা বেগম বলেন, কৃষকদের তালিকা প্রনয়নের কাজ শেষ হয়েছে। আগামী রোববার সভায় সিদ্ধান্তের পর সোম বা মঙ্গলবার থেকে ধান ক্রয় কার্যক্রম শুরু করা হবে।

    বিএম/সোহেল রশীদ/রনী