ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু, যাত্রীদের উপচে পড়া ভীড়

    পবিত্র ঈদুল ফিতরের আগাম টিকিট বিক্রিকে কেন্দ্র করে প্রতিবছরই রাজধানীর কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে থাকে উপচে পড়া ভিড়।

    প্রতি বছরের ধারাবাহিকতায় এবারও যেন টিকিট বিক্রির প্রথম দিনে চিরচেনা রূপে কমলাপুর। অবশ্য চলতি বছর প্রথমবারের মতো পাঁচটি ভিন্নস্থানে টিকিট বিক্রি করা হচ্ছে। কিন্তু টিকিট প্রার্থীদের মূল আনাগোনা যেন কমলাপুরকে ঘিরেই।

    পবিত্র ঈদুল ফিতরের রেলওয়ের আগাম টিকিট বিক্রি শুরু হয় বুধবার (২২ মে) সকাল ৯টায়।

    বুধবার সকালের টিকিট পেতে অনেকেই কমলাপুরে অবস্থান নেন আগের দিন রাত দশটা থেকেই। উদ্দেশ্য একটাই বাড়ি ফেরার টিকিট নিশ্চিত করা।
    কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে দেওয়া হবে পশ্চিম অঞ্চল ও উত্তরবঙ্গগামী সব ট্রেনের টিকিট। রাতভর কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে জেগে থাকা মানুষ অপেক্ষায় ছিলেন। সবারই প্রতীক্ষা, কখন শুরু হবে টিকিট বিক্রি।

    কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে টিকিটের লাইনে থাকা গার্মেন্টস কর্মী রহিম বলেন, টিকিটের জন্য রাত জেগে অপেক্ষা করেছি। যদি পাই তাহলেই রাত জাগার কষ্ট সফল হবে।

    গার্মেন্টস কর্মী রহিমের মতে লাইনে অবস্থান নিয়ে আছেন বেসরকারি চাকরিজীবী কাশেম। তিনি বলেন, রাত থেকেই এখানে অবস্থান নিয়েছি। রংপুরের টিকিট কিনবো, টিকিট পেলে কষ্ট সার্থক হবে।

    পুরুষদের পাশাপাশি টিকিট নিতে লাইন ধরে কাউন্টারের সামনে অবস্থান নিয়েছেন নারী যাত্রীরাও। ইডেন কলেজের ছাত্রী লুবনা যাবেন দিনাজপুর। টিকিট পেতে ভোরে অবস্থান নিয়েছেন কাউন্টারের সামনে। ভোরে এলেও জায়গা পেয়েছেন লাইনের পেছনের দিকে। জানালেন, টিকিট না নিয়ে ফিরবেন না। টিকিট পেলেই সার্থক হবে এত কষ্ট।

    এদিকে, টিকিট বিক্রিকে কেন্দ্র করে কমলাপুরে সব ধরনের বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে তৎপর রয়েছে পুলিশ, আনসার ও রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী সদস্যরা।
    রেলওয়ের তথ্য মতে, বুধবার (২২ মে) বিকেল ৫টা পর্যন্ত টিকিট বিক্রি চলবে। আজ দেওয়া হবে ৩১ মে’র টিকিট। একজন যাত্রী একসঙ্গে সর্বোচ্চ চারটি টিকিট কিনতে পারবেন।

    কমলাপুর ছাড়াও বিমানবন্দর স্টেশন থেকে চট্টগ্রাম ও নোয়াখালীগামী সব আন্তঃনগর ট্রেন, তেজগাঁও স্টেশন থেকে ময়মনসিংহ ও জামালপুরগামী সব আন্তঃনগর ট্রেন, বনানী স্টেশন থেকে নেত্রকোনাগামী মোহনগঞ্জ ও হাওড় এক্সপ্রেস ট্রেন এবং ফুলবাড়িয়া (পুরাতন রেলভবন) থেকে সিলেট ও কিশোরগঞ্জগামী সব আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিট বিক্রি শুরু হবে একই সময়ে।

    রেলওয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২৩ মে দেওয়া হবে ১ জুনের টিকিট, ২৪ মে দেওয়া হবে ২ জুনের টিকিট, ২৫ মে দেওয়া হবে ৩ জুনের টিকিট এবং ২৬ মে দেওয়া হবে ৪ জুনের টিকিট।

    ফেরত যাত্রীদের জন্য ২৯ মে দেওয়া হবে ৭ জুনের টিকিট, একইভাবে ৩০ ও ৩১ মে এবং ১ ও ২ জুন দেওয়া হবে যথাক্রমে ৮, ৯, ১০ ও ১১ জুনের টিকিট।
    রেলওয়ে সূত্রে জানা যায়, ঢাকায় প্রতিদিন ২৭ হাজার টিকিট বিক্রি করবে বাংলাদেশ রেলওয়ে।

    এর অর্ধেক পাওয়া যাবে অ্যাপসের মাধ্যমে অনলাইনে। বাকি টিকিট রাজধানীর পাঁচ স্টেশন থেকে সরাসরি বিক্রয় করা হবে। ৯৬টি আন্তঃনগর ট্রেনের পাশাপাশি এবার আট জোড়া বিশেষ ট্রেনও নামানো হবে।

    বিএম/রনী/রাজীব