ঔষধি গুনে ভরা দন্ডকলস

    সড়কের ধারে বিভিন্ন ফসলের জমিতে প্রাকৃতিক ভাবে জন্মে এই উদ্ভিদটি। এর সাদা ফুল মুখে নিলে মিষ্টি স্বাদ অনুভূত হয়, আর পাতা তেঁতো স্বাদ যুক্ত।

    আঞ্চলিক ভাষায় বিভিন্ন নামে ডাকা হয় এই ছোট গুল্ম জাতীয় গাছটিকে কোন এলাকায় বলা হয় মধু গাছ আবার কোথাও কানশিকা।তবে এই গাছের আসল নাম দন্ডকলস।

    দিন দিন কমে যাচ্ছে এই উদ্ভিদটি। আগে ব্যাপক হারে সড়কের ধারে পতিত জমিতে বিভিন্ন ফসলের বাগানে দেখা গেলেও এখন তেমন দেখা যায় না। সম্প্রতি রাজীবপুর ঢাকা সড়কের স্লুইসগেট এলাকায় দেখা যায় এই গুল্মজাতীয় উদ্ভিদ দন্ডকলসের।

    দন্ডকলস উদ্ভিদ এ রয়েছে নানা ঔষধী গুন।এর পাতার রস তেঁতো হলেও ফুলের মধু মিষ্টি স্বাদের।

    সর্দি ও কাশি হলে এই গাছের পাঁতা সিদ্ধ করে কালোজিরে দিয়ে খেলে উপশম হয়। কাশি হলে দন্ডকলসের পাতা ও শিকড় রস করে আদা সহ গরম পানি দিয়ে খেলে কাশি কমে যায়।

    ছোট বাচ্চাদের যদি দীর্ঘ সয়ম সর্দি থাকে তাহলে এই গাছের ফুল তুলে সেই ফুল মায়ের বুকের দুধের সাথে কচলিয়ে সেই দুধ খাওয়ালে সর্দি ভাল হয়ে যায়। পাতা বেটে রস করে মায়ের দুধের সাথে মিশিয়ে মাথার তালুতে দিয়ে রাখলেও সর্দি কমে যায়।

    বাচ্চাদর কৃমি হলে দন্ডকলসের পাতা রস করে ১ চামচ করে ৪-৫ দিন খাওয়ালে কৃমি মরে যাবে।

    চুলকানি রোগেও কাজ করে দন্ডকলস এর পাতার রস কাঁচাহলুদের রস ও নারকেল তেল মিশিয়ে শরীরে মেখে রোদে শুকিয়ে গোসল করলে উপকার পাওয়া যায়।

    শিশুদের পাতলা পায়খানা হলে এই পাতার রস করে খাটি মধু মিশিয়ে দুই তিন দিন খাওয়ালে উপকার পাওয়া য়ায়।

    চুলকানি হলেও এই পাতার রস কাঁচাহলুদের রসের সাথে নারকেল তেল মিশিয়ে শরীরে মাখিয়ে কিছুক্ষন রোদে শুকিয়ে গোসল করলে ভাল উপকার পাওয়া যায়। এই ভাবে এক সপ্তাহ পর্যন্ত লাগাতে হবে।

    দন্ডকলস গাছের উচ্চতা ১ থেকে দের মিটার উচ্চতা সম্পন্ন হয়।বেশির ভাগ ক্ষেত্রে কয়েকটি গাছ একত্রে জন্মে ঝোপালো ভাবে। গাছের কান্ড শাখা প্রশাখা সবুজ ফুলের রঙ সাদা। সারা বছরই এ গাছ দেখতে পাওয়া যায় ফুল ফোঁটার আদর্শ সময় মার্চ ও এপ্রিলে।

    রাজীবপুর সরকারি মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের কৃষি শিক্ষক শহিদুর রহমান বলেন গুল্ম জাতীয় উদ্ভিদ দন্ডকলস একসময় গ্রামীন চিকিৎসায় ব্যাপকহারে ব্যাবহার হত। এখনও হারবাল ঔষধ তৈরিতে এগুলো ব্যাবহার হয় ।নতুন প্রজন্মের অনেকেই এই গাছ গুলো সমন্ধে জানে না। ঔষধি গুন সমৃদ্ধ এই গাছ গুলোর বংশবৃদ্ধি ও রক্ষা করা দরকার বলেও জানান তিনি।

    বিএম/রনী/রাজীব