৫ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবী, পুলিশকে জানালে পরিবারসহ পুড়িয়ে মারার হুমকি
    অর্ধশত বছরের বিখ্যাত ‘মা কালি সুইটস’ বন্ধ করে দিয়েছে সন্ত্রাসীরা

    চট্টগ্রামের চন্দ্রনাইশ উপজেলার কালিহাটে চাঁদা না দেওয়ায় অর্ধশত বছরের বিখ্যাত ‘মা কালি সুইটস’ বন্ধ করে দিয়েছে এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা। তাছাড়া পুলিশকে বিষয়টি জানানোর চেষ্টা করলে পুরো পরিবারকে আগুনে পুড়িয়ে মারার হুমকি দিচ্ছে সন্ত্রাসীরা। ঠিক এমন অভিযোগ করেছে এলাকার স্থানীয়রা।

    স্থানীয়রা জানায়, চন্দনাইশ উপজেলায় বরমা ইউনিয়ন কালিহাটের বহু প্রাচীন ও সুপরিচিত মা কালি সুইটস যা অনেকের কাছে হরি কাকার মিষ্টির দোকান নামেও পরিচিত। কিছুদিন আগে হঠাৎ করে নাজিম, লোকমান, সৌরভসহ এলাকার কিছু চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজ দোকানের মালিক হরিপদ দে এর কাছে ৫ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবী করে আসছিল। বারবার হুমকি দিয়ে বলছে এই দেশে ডান্ডি/ডেন্ডারা চাঁদা না দিয়ে ব্যাবসা করতে পারবে না।

    হামলার পর বন্ধ মা কালী সুইটস

    তারই পরিপ্রেক্ষিতে তারা গত ৮ মে দোকানে চাঁদার টাকা নিতে গেলে মালিক বয়স্ক হরিপদ দেকে না পেয়ে দোকানের ক্যাশে থাকা তার ছেলে সুজিত দেবসহ দোকানের কর্মচারীদের মারধর করেন স্থানীয় বখাটেরা। পরে ৫লক্ষ টাকা চাঁদা দিতে না পারায় তারা তাকে মেরে দোকান থেকে বের করে দিয়ে দোকান বন্ধ করে দেন। যা আজ ৬দিন অতিবাহিত হলেও এখনো বন্ধ রয়েছে অর্ধশত বছরের পুরনো ঐতিহ্যবাহি মিষ্টান্ন ভান্ডারটি।

    স্থানীয়রা জানায় শুধু দোকানই বন্ধ করেনি। বখাটেরা রীতিমত হুমকি দিয়ে আসছে এ ঘটনা পুলিশ কে জানানো হলে পুরো পরিবার কে ঘরে বন্ধ করে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হবে। এছাড়া পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা না দিলে শ্মশানের জায়গা নির্ধারণ করতে এক সপ্তাহ সময় বেধে দেয় হরিপদের পরিবারকে।

    বখাটেদের দিনরাত হুমকিতে ভয়ে কাতর পঁচাত্তর বছর বয়সী হরিপদ দেব এখন নিজ সন্তানদেরও চিনতে পারছেন না। সারাক্ষণই হাউমাউ করে কাঁদছেন তিনি। থানায় প্রতিকার চেয়ে কোন সুফল পাননি তারা। সিদ্ধান্তহীনতায় রয়েছেন প্রাণে বেঁচে থাকার জন্য কলকাতায় চলে যাবেন কী না সেটা ভাবছেন। তবে প্রতিকার ও সুষ্ঠ একটি সমাধানের লক্ষ্যে পুরো ঘটনাটি বর্ণনা করে বাজার কমিটি বরাবর একটি স্মারকলিপি দিয়েছে হরিপদের পরিবার।

    বরমা বাজারের সভাপতি জানান, বুধবার (৮ মে) রাতে হরিপদ মিষ্টির স্বত্বাধিকারীর ছেলে সুজিত দেবসহ দোকানের কর্মচারীদের মারধর করেছে বলে শুনেছি। তাদের অভিযোগে জানতে পেরেছি স্থানীয় নাজিম উদ্দীন, মো. লোকমান ও সৌরভ উদ্দীন প্রকাশ টিটুসহ একদল বখাটে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদার দাবী করে ঘটনাটি ঘটিয়েছে।

    চাঁদাবাজরা আওয়ামী লীগের পরিচয় ব্যবহার করলেও চন্দনাইশ থানা আওয়ামী লীগের নেতারা জানিয়েছেন তারা আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত না। তারা বলেছেন,সন্ত্রাসীদের কোন দল নেই তাদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হোক।

    বাজার কমিটিকে স্মারকলিপি প্রদান

    এই অবস্থায় অত্র ইউনিয়নে চেয়ারম্যান ও মেম্বারের নিরব ভূমিকায় দেখে এলাকার অন্যরাও আতংকিত।

    বরমা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম ফোনে বলেন, স্বাধীনতারও আগের সময়ে বাজারে স্থাপন হয় মা কালি সুইটসের মিষ্টির দোকানটি। যে ঘটনাটি শুনছি এটা বেশ দুঃখজনক। তিনি ভুক্তভোগীদের আইনি সহায়তা দেবার আশ্বাস দেন।

    চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করার জন্য প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করেছে স্থানীয় জনসাধারণ।

    বিএম/রনী/রাজীব