ধানের ন্যায্যমূল্য নির্ধারণ : শাহাদাতের নেতৃত্বে ডিসিকে স্মারকলিপি দিলো বিএনপি

    চট্টগ্রাম মেইল : কৃষকদের কাছ থেকে ধান কিনে ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করা ও আন্দোলনরত পাটকল শ্রমিকদের যৌক্তিক দাবিগুলো মেনে নেওয়ার দাবিতে কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির পক্ষ থেকে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মো: ইলিয়াছ হোসেনকে স্মারক লিপি প্রদান করা হয়।

    আজ ২১ মে মঙ্গলবার দুপুরে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে নগর বিএনপির সভাপতি ডা: শাহাদাত হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্করের নেতৃত্বে স্মারক লিপিটি প্রদান করা হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি আবু সুফিয়ান, যুগ্ম সম্পাদক ইয়াসিন চৌধুরী লিটন, আব্দুল মান্নান, শাহেদ বক্স, সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুল ইসলাম, বাণিজ্য সম্পাদক হেলাল চৌধুরী, সহ-দপ্তর সম্পাদক মো: ইদ্রিস আলী, সদস্য এডভোকেট এরফানুর রহমান, নগর ছাত্রদল নেতা কুতুব উদ্দিন নয়ন, এন মোহাম্মদ রিমন, শাহরিয়ার আহম্মেদ প্রমুখ।

    স্মারকলিপি গ্রহণ করে জেলা প্রশাসক নেতৃবৃন্দের বক্তব্য ধর্য্যসহকারে শুনেন এবং যথাযথ কর্তৃপক্ষকে অবহীত করবেন বলে আশ্বাস প্রদান করেন।

    স্বারকলিপিতে বলা হয়, বোরো ধানের দাম নিয়ে কৃষকদের মধ্যে চরম অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। উৎপাদিত ধানের মূল্য উৎপাদন খরচের চেয়ে অনেকগুন কম হওয়ায় কৃষকরা হাহাকার করছে। উৎপাদন খরচ থেকে তিন শো টাকা কমে প্রতি মন ধান বিক্রি করতে হচ্ছে কৃষকদের। প্রতি বিঘা জমিতে কৃষকের ক্ষতি হচ্ছে দুই হাজার টাকা। ধানের ন্যায্য মূল্য না পাওয়ায় টাঙ্গাইল, জয়পুরহাট ও নেত্রকোণাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে কৃষকরা পাকা ধানক্ষেতে আগুন দিচ্ছে, পাকা ধানে মই দিচ্ছে, সড়কে ধান ছিটিয়ে প্রতিবাদ করছে।

    সরকার প্রতি মন ধান কেনার জন্য ১ হাজার ৪০ টাকা প্রদান করলেও কৃষকের হাতে যাচ্ছে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা। বাকী টাকা যাচ্ছে সরকারের আনুকুল্য পাওয়া মধ্যস্বত্বভোগীদের পকেটে। এ নিয়ে সরকারের কোন মাথা ব্যথা নেই। ধানের দাম কমার জন্য উদ্ভুত সংকটে সরকার উদাসীন। এ বিষয়ে তাদের কোন দায় নেই বলে কৃষিমন্ত্রী সাফ জানিয়ে দিয়েছেন।

    সরকারের গণবিরোধী নীতির কারণেই কৃষকরা উৎপাদিত ধানের ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অথচ কৃষকরাই বাংলাদেশের আত্মা ও দেশের প্রাণ। কৃষকদের রক্ষা করতে না পারলে দেশে দুর্যোগ নেমে আসবে। তারা উৎপাদন বন্ধ করে দিলে দেশে দুর্ভিক্ষ নেমে আসবে, ১৭ কোটি মানুষ না খেয়ে মরবে। আমরা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি চট্টগ্রাম মহানগর শাখা, মধ্যস্থতাকারি সুবিধাভোগীদের কাছ থেকে ধান ক্রয় না করে সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে ধান কিনে ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করা ও মধ্যস্বত্বভোগী সিন্ডিকেটের দৌরত্ম বন্ধ করার জন্য সরকারকে আপনার মাধ্যমে আহ্বান জানাচ্ছি।

    পাশাপাশি জাতীয় মজুরী কমিশন বাস্তবায়ন ও বকেয়া মজুরীসহ ৯ দফা দাবিতে বাংলাদেশ রাষ্ট্রায়াত্ত্ব বিভিন্ন পাটকল শ্রমিকরা আন্দোলন করছে। দেশের ২৬ টি পাটকলে একযোগে লাগাতার ধর্মঘট শুরু হলেও সরকার তাদের যৌক্তিক দাবি মেনে নিচ্ছে না। ১০ থেকে ১৫ সপ্তাহ মুজুরী না পেয়ে শ্রমিকরা অর্ধাহার ও অনাহারে মানবেতর জীবন-যাপন করছে। ২০১৫ সালের মুজুরী কমিশন রোয়েদাদ এখনও বাস্তবায়ন করা হয়নি। অথচ রমজান মাস শুরু হয়েছে। এ মাসে নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্য পণ্য কেনার সামর্থ তাদের নেই। কর্মচারীদের চার মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে। শ্রমজীবি মানুষের স্বার্থের প্রতি সরকারের কোন ভ্রুক্ষেপ নেই। বরং তাদের ওপর শোষণের মাত্রা আরও তীব্র হয়েছে।

    শ্রমিকরা পাটজাত দ্রব্য উৎপাদন করছে বিনিময়ে তারা মুজুরী থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। দেশে বৈষম্য ও বঞ্চনা প্রকট আকার ধারণ করেছে। আমরা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি চট্টগ্রাম মহানগর শাখার পক্ষ থেকে পাটকল শ্রমিকদের যৌক্তিক দাবিগুলি সরকারকে মেনে নেয়ার জন্য আপনার মাধ্যমে আহ্বান জানাচ্ছি।

    বিএম/রাজীব..