মৌসুমের শুরুতেই চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে আশঁহীন হাড়িভাঙ্গা আম

    হাড়িভাঙ্গা আম

    রংপুর ব্যুরো:: রংপুরের সুমিষ্টখ্যাত জনপ্রিয় হাড়িভাঙ্গা আমে সয়লাভ হয়ে গেছে হাট-বাজার। চলতি জুন মাসের তৃতীয় সপ্তাহে গাছ থেকে আশঁহীন এই আম পাড়ার কথা থাকলেও অনেক চাষি আগাম আম পাড়তে শুরু করেছেন। এ কারণে রংপুরের হাটে বাজারে মিলছে হাড়িভাঙ্গা আম। বিক্রেতারা ঝুড়ির পসরা সাজিয়ে বসে আছেন। এদিকে মৌসুমের শুরুতেই চড়া দামে হাড়িভাঙ্গার স্বাদ নিতে হচ্ছে ক্রেতাদের।

    বুধবার দুপুরে রংপুর মহানগরীর কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল হাড়িভাঙ্গার হাট গিয়ে দেখা গেছে সেখানে শতাধিক আম বিক্রেতাকে। তারা হাড়িভাঙ্গা আমের পাশাপাশি ফজলি, সাদা ল্যাংড়া, কালো ল্যাংড়া, মিশ্রিভোগ, আম্রপলিসহ বেশ কিছু জাতের আম বিক্রি করছেন খুচরা ও পাইকারি বাজারে।

    রংপুরের মিঠাপুকুরের পদাগঞ্জ, খোড়াগাছ ও বদরগঞ্জ উপজেলা থেকে আসা বেশির ভাগ আম ব্যবসায়ী এখানে পাইকারি দরে আম বিক্রি করেন। সড়কের দুই পাশে তারা আম ভর্তি ঝুড়ির পসরা সাজিয়ে বসে ক্রেতাদের ডাকছেন।

    এছাড়াও নগরীর সিটি বাজার, লালবাগ, দর্শনা মোড়, মর্ডাণ, শাপলা চত্বর, মেডিকেল মোড়সহ বিভিন্ন স্থানে এই হাড়িভাঙ্গা আম বিক্রি হচ্ছে। অনেক বিক্রেতা আবার সাইকেলে ফেরি করে বিক্রি করছেন।

    কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালের আম বিক্রেতা সিরাজুল ইসলাম ও সালাম মিয়া জানান, এবার আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় আমের উৎপাদন কম হয়েছে। কিছু কিছু বাগানে আমের মধ্যে পচনও ধরেছে। এ কারণে অনেকেই আগাম আম পাড়া শুরু করেছে।’
    তাদের ভাষ্য মতে, ‘উৎপাদন কম হওয়াতে এবার আমের দাম একটু বেশি হবে। এখন বাজারে প্রতি মণ হাড়িভাঙ্গা আম তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।’

    এদিকে, রংপুর সিটি বাজারের ফল ব্যবসায়ী জনি মিয়া ও বাবু মিয়া বলেন, ‘সাধারণত জুনের শেষ ভাগে হাড়িভাঙ্গা আম বাজারে পাওয়া যায়। কিন্তু এবার অত্যধিক গরমের কারণে এক সপ্তাহ আগে হাটে বাজারে আম উঠেছে। আর কিছুদিন পর পুরোদমে বাজারে হাড়িভাঙ্গা আম আসতে শুরু হলে দাম কমে আসবে।’

    তারা জানান, ‘বর্তমানে প্রতি কেজি কাঁচা হাড়িভাঙ্গা আম ৮০ থেকে ১০০ টাকাতে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতি কেজি পাকা ও সাইজে বড় আম ১০০ থেকে ১২০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করছেন।’

    শহিদুল ইসলাম শহীদ ও মিলন মিয়া নামের দুই ক্রেতা বলেন, ‘অপেক্ষায় ছিলাম কখন হাড়িভাঙ্গা বাজারে আসবে। এখন কিনতে পেরে ভালো লাগছে। তবে মৌসুমের শুরুতে বলেই বিক্রেতারা বেশি দাম নিচ্ছেন।’

    রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক ড. সরোয়ারুল হক জানান, চলতি বছর রংপুর জেলায় তিন হাজার পাঁচ হেক্টর জমিতে আমের ফলন হয়েছে। এর মধ্যে হাড়িভাঙ্গার ফলন হয়েছে এক হাজার ৪৫০ হেক্টর। গত বছর প্রতি হেক্টরে ফলন হয়েছিল ৯ দশমিক ৪ মেট্রিক টন। সেই হিসেবে শুধু হাড়িভাঙ্গার উৎপাদন হতে পারে ১৫ হাজার মেট্রিক টন।’

    তিনি আরো বলেন, ‘গত মাসের ঝড় ও বাতাসে আমের কিছুটা ক্ষতি হলেও মোটামুটি ভালো ফলন হয়েছে। এবার হাড়িভাঙ্গা আম বিক্রি করে ২০০ কোটি টাকার ব্যবসা করতে পারবে এ জেলার আম চাষিরা।

    বিএম/এসআর/এমআর

     

    আরো খবর:: বাজারে ফরমালিনমুক্ত আম চিনবেন যেভাবে