আনপ্রেডিকটেবল! অনিশ্চয়তার খেলা ক্রিকেটে এই শব্দটি সবচেয়ে বেশ সম্ভবত পাকিস্তানের গায়েই সাঁটানো হয়েছে। টালমাটাল দল নিয়ে বিশ্বকাপে আসা পাকিস্তান ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে হারলো বাজেভাবে। স্বাগতিক ইংল্যান্ডকে হারালো দারুণ খেলে। বৃষ্টির ভাসিয়ে নিয়ে গেল শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচ। আর অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে নেমে মুহূর্তে মুহূর্তে রঙ পাল্টে শেষ পর্যন্ত হেরে গেল ৪১ রানে।
টন্টনে ডেভিড ওয়ার্নারের সেঞ্চুরিতে পাকিস্তানকে ৩০৮ রানের লক্ষ্য ছুঁড়ে দেয় অস্ট্রেলিয়া। তাঁদের দেওয়া টার্গেট তাড়া করতে নেমে শুরুতেই হোঁচট খায় পাকিস্তান। দলীয় ২ রানের মাথায় ফাখার জামানকে সাজঘরে ফেরান প্যাট কামিন্স। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে পাকিস্তান। দ্বিতীয় উইকেট জুটি যোগ করে ৫৪ রান। ৩০ রান করা বাবরকে ফেরান কল্টার নাইল।
সেখান থেকে দলকে টেনে তুলেন ওপেনার ইমাম-উল-হক ও মোহাম্মদ হাফিজ। দুইজনের দায়িত্বশীল ব্যাটিং যেন পাকিস্তানকে জয়ের কাজটা সহজ করে দিচ্ছিল। সেই জুটি থেকে আসে ৮০ রান। ফিফটি তুলেই আউট হন ইমাম। কামিন্সের বাউন্স মারতে গিয়ে কিপার ক্যারির হাতে ক্যাচ তুলে দেন ইমাম (৫৩)। তারপর থেকেই ছন্দপতন ঘটে পাকিস্তানের।
১০ রান যোগ করতেই ফিঞ্চের বলে স্লগ সুইপ করে স্টার্কের হাতে ক্যাচ তুলে আউট হন হাফিজ (৪৬)। তার বিদায়ের পর কোন রান না করেই আউট হন মালিক। আসিফ আলীও টিকতে পারেননি ক্রিজে। পাকিস্তানের যখন ১৬০ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে বিপদে তখন জয়ের আশা দেখাচ্ছিলেন হাসান আলী। ক্রিজে নেমেই ঝড়ো ব্যাটিং করেন হাসান।
১৫ বলে ৩২ রানের ইনিংস খেলে আউট হন হাসান। তারপরেই ব্যাট হাতে দলকে জয়ের কাছাকাছি নিয়ে যান ওয়াহাব রিয়াজ ও সরফরাজ আহমেদ। ব্যাট হাতে টন্টনে ঝড় তোলেন ওয়াহাব। এক পর্যায়ে ম্যাচটি পাকিস্তান জিতবে বলে মনে হলেও ম্যাচটি আবারো নিজেদের দখলে নিয়ে আসেন স্টার্ক। ৪৫ রান করা ওয়াহাবকে আউট করার পর আউট করেন আমিরকেও। বল হাতে তিনটি উইকেট লাভ করেন প্যাট কামিন্স।
শেষ উইকেটে ম্যাক্সওয়েলের দারুণ ফিল্ডিংয়ে অপরপ্রান্তে থাকা সরফরাজকে রান আউট করে ম্যাচটি জিতে যায় অস্ট্রেলিয়া।
এর আগে টস জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন সরফরাজ। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ব্যাট হাতে সেঞ্চুরি হাঁকান ডেভিড ওয়ার্নার। খেলেন ১০৭ রানের ইনিংস। এছাড়াও অধিনায়ক ফিঞ্চের ৮২ রানের কল্যাণে ৩০৭ রান করে অস্ট্রেলিয়া। অজিদের রানটা আরেকটু বেশি হতো যদি না আমির শেষদিকে জ্বলে উঠতেন। বল হাতে একাই পাঁচ উইকেট শিকার করেন এ বাঁহাতি পেসার।
স্কোর:
অস্ট্রেলিয়া ৩০৭/১০ (৪৯)
অ্যারন ফিঞ্চ ৮২ (৮৪)
ডেভিড ওয়ার্নার ১০৭ (১১১)
স্টিভ স্মিথ ১০ (১৩)
গ্লেন ম্যাক্সওয়েল ২০ (১০)
শন মার্শ ২৩ (২৬)
উসমান খাজা ১৮ (১৬)
অ্যালেক্স কারি ২০ (২১)
নাথান কোল্টা-নেইল ২ (৩)
প্যাট কামিন্স ২ (৬)
মিচেল স্টার্ক ৩ (২)
কেন রিচার্ডসন ১ (১)
বোলার:
মোহাম্মদ আমির ১০-২-৩০-৫
শাহীন আফ্রিদি ১০-০-৭০-২
হাসান আলী ১০-০-৬৭-১
ওয়াহাব রিয়াজ ৮-০-৪৪-১
মোহাম্মদ হাফিজ ৭-০-৬০-১
শোয়েব মালিক ৪-০-২৬-০
পাকিস্তান ২৬৬/১০ (৪৫.৪)
ইমাম-উল হক ৫৩ (৭৫)
ফখর জামান ০ (৩)
বাবর আজম ৩০ (২৮)
মোহাম্মদ হাফিজ ৪৬ (৪৯)
শরফরাজ আহমেদ ৪০ (৪৮)
শোয়েব মালিক ০ (২)
আসিফ আলী ৫ (৮)
হাসান আলি ৩২ (১৫)
ওয়াহাব রিয়াজ ৪৫ (৩৯)
মোহাম্মদ আমির ০ (১)
শাহীন আফ্রিদি ১ (৬)
বোলার:
প্যাট কামিন্স ১০-০-৩-৩
মিচেল স্টার্ক ৯-১-৪৩-২
ঝেই রিজার্ডসনস ৮.৪-০-৬২-২
নাথান কোল্টার-নেইল ৯-০-৫৩-১
গ্লেন ম্যাক্সওয়েল ৭-০-৫৮-০
অ্যারন ফিঞ্চ ২-০-১৩-১
অস্ট্রেলিয়া ৪১ রানে জয়ী।
সেরা খেলোয়াড় : ডেভিড ওয়ার্নার
বিএম/এমআর