গরুর মাংস কেনা নিয়ে সংঘর্ষ, পুলিশসহ আহত ৪০

    ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গরুর মাংস বেচাকেনা নিয়ে সংঘর্ষে চার পুলিশ-শিশুসহ কমপক্ষে ৪০ জন আহত হয়েছেন।

    শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের খাঁটিহাতা বিশ্বরোড মোড়ে এই সংঘর্ষ চলে। সদর উপজেলার খাঁটিহাতা ও সরাইল উপজেলার কুট্টাপাড়া গ্রামের লোকজনের মধ্যে এই সংঘর্ষ ঘটে।

    সংঘর্ষের কারণে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় মহাসড়কের দুই পাশে যানবাহন আটকে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। আহতদের সরাইল উপজেলা স্বাস্ব্য কমপ্লেক্সে ও জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

    আহতদের মধ্যে যাদের নাম জানা গেছে তারা হলেন- সাগর (২০), সাব্বির (১৯), খায়ের (৩৫), সুমন (২৮), নয়ন (১০), সেলিম (৪৫), সেলিম (৪৫), আরজিনা (১২), কাউসার (১৮), লিটন (২০), মনু মিয়া (৩০), আনোয়ার (৩০), আাহাদ (২৯), সাগর মিয়া (৩০), আব্দুল হাই (৩৫)।

    এছাড়া সংঘর্ষে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ৪ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। তারা হলেন- উপ-পরিদর্শক(এসআই) প্রেমধন, সহকারি উপ-পরিদর্শক(এএসআই) নিয়ামত উল্লাহ, কন্সটেবল শামসুল ও মাহবুব।

    পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সকালে সদর উপজেলার খাঁটিহাতা বিশ্বরোড মোড়ে এক মাংসের দোকানে সরাইল উপজেলার কুট্টাপাড়া গ্রামের এক ব্যক্তি মাংস কিনতে যান। মাংসে হাড় বেশি দেয়া নিয়ে দোকানির সঙ্গে ওই ব্যক্তির বাক-বিতণ্ডা হয়। তবে ওই ক্রেতা-বিক্রেতার নাম জানাতে পারেনি পুলিশ। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই গ্রামের লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে সদর মডেল থানা ও সরাইল থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে রাবার বুলেট ও টিয়ার গ্যাস ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

    ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী খাটিহাতা গ্রামের আকলাস মিয়া জানান, কোনো কিছু বুঝে উঠার আগেই একদল লোক টেটা, বল্লম নিয়ে খাটিহাতা গ্রামে আক্রমন করে। খাটিহাতা গ্রামবাসীও পাল্টা আক্রমন করে। কিছুক্ষণের মধ্যে পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। গ্রামের পুরুষের পাশপাশি মহিলারাও সংঘর্ষের সমর্থনে এগিয়ে আসে।

    আকলাস মিয়া বলেন, আমরা এই ধরনের রক্তক্ষয়ি সংঘর্ষ চাইনা। শান্তিচাই। যারা অশান্তি সৃষ্টি করেছে তাদের বিচার চাই।

    অন্যদিকে কুট্টাপাড়া গ্রামের আবু সাত্তার জানান, খাটিহাতা গ্রামে বাজার হওয়ায় ওরা কুট্টাপাড়া গ্রামের লোকজনের ওপর প্রভাব খাটায়। এরই অংশ হিসেবে আজ মাংস কেনা-বেচা নিয়ে সংঘর্ষ হয়। আমরা এ ধরনের সংঘর্ষ চাইনা। আমরা শান্তিচাই।

    তিনি এ ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় এনে বিচারের ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।

    সরাইল থানার অফিসার ইনচার্জ মফিজ উদ্দিন ভূইয়া জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সরাইল থানা পুলিশ ৩২ রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে।

    ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ সেলিম উদ্দিন জানান, বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সদর মডেল থানা পুলিশ ১৩০ রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে।

    বিএম/এমআর