বাজেট : চট্টগ্রাম চেম্বারের প্রতিক্রিয়া

    চট্টগ্রাম মেইল : জাতীয় সংসদে ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরের বাজেট উপস্থাপনের প্রেক্ষিতে দি চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি’র পরিচালকমন্ডলীর পক্ষ থেকে সহ-সভাপতি সৈয়দ জামাল আহমেদ এক তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় চট্টগ্রাম-ঢাকা দ্রুতগতির ট্রেন ও বে-টার্মিনাল নির্মাণ পরিকল্পনাকে সাধুবাদ জানিয়ে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বাস্তবায়নের দাবী জানিয়েছেন।

    তিনি বলেন-এসএমই খাতের উন্নয়ন, নারী উদ্যোক্তা সৃষ্টি, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ ও রাজস্ব আহরণের আওতা বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখবে প্রস্তাবিত বাজেট। ১৩ জুন উত্থাপিত বাজেট উপলক্ষে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারস্থ বঙ্গবন্ধু কনফারেন্স হলে তিনি এ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।

    চেম্বার সহ-সভাপতি বলেন- ৮.২% জিডিপি অর্জন করা গেলে দেশের উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে। প্রস্তাবিত বাজেটের কারণে বাজারে বেশীরভাগ দ্রব্যমূল্যের কোন পরিবর্তন হবার সম্ভাবনা নেই। সরকার ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে অব্যাহত সুযোগ সুবিধার পাশাপাশি কিছু নতুন সুযোগ সৃষ্টি করেছে। স্থানীয় সরকার, সড়ক ও রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং বিদ্যুৎ খাতে সর্বোচ্চ বরাদ্দের ফলে অবকাঠামোগত উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে ও দেশী-বিদেশী বিনিয়োগ বৃদ্ধি পাবে।

    তিনি বলেন-ব্যক্তিগত করমুক্ত সীমা গত ৪ বছর ধরে অপরিবর্তিত রয়েছে। আমরা এই সীমা বৃদ্ধি করার দাবী জানাচ্ছি। ঠিকাদারী ও সরবরাহ বিলে উৎসে কর হ্রাস করা হয়েছে, অগ্রিম কর প্রদানের ক্ষেত্রে সীমা ৪ লক্ষ থেকে ৬ লক্ষ টাকা এবং এসএমই খাতে টার্নওভার ৩৬ লক্ষ থেকে ৫০ লক্ষে উন্নীত করা হয়েছে যা ইতিবাচক। হস্তশিল্প রপ্তানিকে করমুক্ত রাখার সময়সীমা ৫ বছর বৃদ্ধি করা হয়েছে। তৈরীপোশাক শিল্পে হ্রাসকৃত করহার সুবিধা অব্যাহত রাখা দেশের প্রধান রপ্তানি খাতকে উৎসাহিত করবে।

    এছাড়া সারচার্জের ক্ষেত্রে ২ কোটি ২৫ লক্ষ টাকার সীমা ৩ কোটি টাকা পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে। দেশীয় কৃষি যন্ত্রপাতি, আসবাবপত্র, চামড়াজাত পণ্য, গৃহস্থালী পণ্য ইত্যাদি কর অবকাশ সুবিধা প্রদানের প্রস্তাব করা হয়েছে। পুঁজিবাজারে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের সুবিধার্থে ডিভিডেন্ড হতে আয়ের করমুক্ত সীমা ২৫ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত বৃদ্ধি করা, স্টক ডিভিডেন্ডের পরিবর্তে ক্যাশ ডিভিডেন্ডকে উৎসাহিত করার জন্য স্টক ডিভিডেন্ডের উপর ১৫% কর প্রদান পুঁজি বাজার উন্নয়নে সহায়ক হবে।

    নতুন ভ্যাট আইনে নিবন্ধন, তালিকাভুক্তি, রিটার্ণ দাখিল, কর পরিশোধ ইত্যাদি অনলাইনে সম্পাদনের সুযোগ রাখা হয়েছে। তবে এক্ষেত্রে বিদ্যমান মূল্য ঘোষণা পদ্ধতির পরিবর্তে বিনিময় বা ন্যায্য বাজার মূল্যের ভিত্তিতে কর পরিশোধের যে ব্যবস্থা রাখা হয়েছে তার সুনির্দিষ্ট ব্যাখ্যা প্রয়োজন।

    এ আইনে ৫০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত টার্নওভারে মূসক অব্যাহতি ও মূসক নিবন্ধন সীমা ৮০ লক্ষ টাকা থেকে ৩ কোটি টাকা করা এবং স্থানীয় ব্যবসায়ী পর্যায়ে ৫% মূসক হার ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক ব্যবসায়ীদের জন্য সহায়ক হবে। তবে ইলেকট্রনিক ফিসকেল ডিভাইস এবং সেলস ডাটা কন্ট্রোলার স্থাপন বাধ্যতামূলক করার বিষয় পুনর্বিবেচনা করা প্রয়োজন কারণ আমাদের দেশের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা এখনো ততটা প্রস্তুত নয়।

    নারী উদ্যোক্তা পরিচালিত শো রুমের ক্ষেত্রে মূসক অব্যাহতি অর্থনীতিতে তাঁদের সম্পৃক্ততা উৎসাহিত করবে। স্মার্ট ফোনের আমদানি শুল্ক বৃদ্ধি করা ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নকে ক্ষতিগ্রস্থ করবে। ঔষধ শিল্পে ব্যবহৃত কাঁচামালের শুল্ক রেয়াত সুবিধা এবং মেডিক্যাল গ্যাস প্রস্তুতকারী কাঁচামালের উপর ডিউটি হ্রাস করায় সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্য খাতে ব্যয় কমবে।

    প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় বজ্রপাত প্রতিরক্ষা সামগ্রী আমদানি শুল্ক হ্রাস করা হয়েছে। শিল্প খাতে আমদানিকৃত নমুনা দ্রুত ছাড়করণের ক্ষেত্রে ডিমিনিমাস বিধিমালা সহায়ক হবে।

    এছাড়া স্বর্ণ আমদানিতে শুল্ক হ্রাস করা কালোবাজারী রোধ এবং রাজস্ব আহরণ বৃদ্ধি করবে। দেশীয় শিল্প রেফ্রিজারেটর, এয়ারকন্ডিশন ইত্যাদিতে মূসক অব্যাহতি বহাল রাখা এসব শিল্পের সম্প্রসারণে ভূমিকা রাখবে বলে আমরা মনে করি।

    চেম্বার সহ-সভাপতি গণপরিবহন ছাড়া ব্যক্তি মালিকানাধীন গাড়ীর ক্ষেত্রে ১০% সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহার করার আহবান জানান।

    বিএম/রাজীব হাসান রাজন,রাজীব, তাইফুল