জামালপুরের ৩৫০ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পানির নিচে

    জামালপুরে বন্যার পানির নিচে তলিয়ে গেছে অন্তত চার শতাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।

    বুধবার (১৭ জুলাই) সন্ধ্যা পর্যন্ত যমুনা ও ব্রহ্মপুত্র নদ-নদীর পানি বাহাদুরাবাদঘাট পয়েন্টে বিপদসীমার ১৬৩ সেন্টিমিটার ওপরে প্রবাহিত হয়েছে।

    জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম জানান, সারা জেলায় ২৯৮টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ মাদ্রাসা ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ প্রায় ৩৫০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

    জেলা ত্রাণ ও পুণর্বাসন অফিস সূত্র জানায়, ৭টি উপজেলার ৬৮ ইউনিয়নের মধ্যে ৪৭টি ইউনিয়নসহ ৩টি পৌরসভা প্লাবিত হয়েছে। এতে পাঁচ লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। ৪৭৫টি বাড়ি সম্পূর্ণরূপে ও ১ হাজার ৫৯০টি বাড়ি আংশিক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে করে প্রায় ৫৯ কিলোমিটার পাকা রাস্তা ও ৫০ কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা সম্পূর্ণরূপে বিলিন হয়েছে। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তরা মানুষসহ গৃহপালিত পশু গরু, মহিষ, ছাগল, হাঁস, মুরগি পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। এসব এলাকায় বন্যা কবলিত মানুষ উচু বাঁধে, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আশ্রয় নিয়েছে। আবার অনেকেই খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবন যাপন করছেন।

    অপরদিকে জেলার ইসলামপুর, মাদারগঞ্জ, দেওয়ানগঞ্জ ও বকশীগঞ্জে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। বন্যার্তদের মাঝে প্রতিটি প্যাকেটে ১০ কেজি মিনিকেট চাল, এক কেজি মসুর ডাল, ১ কেজি সয়াবিন তেল, ১ কেজি চিনি, এক কেজি চিড়া, এক কেজি লবণ ও ৫০০ গ্রাম নুডুলস বিতরণ করা হয়। এছাড়া ইসলামপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মিজানুর রহমানের তত্ত্বাবধানে বন্যার্তদের মাঝে রান্না করা খিচুড়ি নিয়মিত পরিবেশন করা হচ্ছে। বানভাসী মানুষের পাশে দাড়িয়েছেন পুলিশের ইসলামপুর সার্কেলের এএসপি মো. সুমন মিয়া, ওসি আব্দুল্লাহ আল মামুন, দেওয়ানগঞ্জ মডেল থানার ওসি মায়নুল ইসলাম।

    মাদারগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণাঞ্চল উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে কয়েক শত পানিবন্দী পরিবারের মাঝে শুকনো খাবার চিড়া, মুড়ি, গুড়সহ ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হয়। উপজেলা নির্বাহী অফিসার আমিনুল ইসলাম, মাদারগঞ্জ মডেল থানার সহকারী পুলিশ সুপার সামিউল আলিম, ওসি রফিকুল ইসলাম, বিআরডিবি’র চেয়ারম্যান অরুণ কুমার সাহা, ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তাসহ প্রশাসনিক কর্মকর্তাগণ।

    জেলার ৭টি উপজেলায় গঠিত হয়েছে ৮০টি মেডিকেল টিম। এ টিম বন্যাকবলিত এলাকায় সার্বক্ষণিক কাজ করবেন।

    এ ব্যাপারে জামালপুর সিভিল সার্জন ডা. গৌতম রায় জানান, এরই আমরা প্লাবিত উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে তিন সদস্য বিশিষ্ট ১টি করে মোট ৮০টি মেডিকেল টিম গঠন করেছি। তারা ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় স্বার্বক্ষণিক কাজ করছেন।

    বিএম/এমআর