রিফাতের বাবার অভিযোগ অস্বীকার মিন্নির

    রিফাত শরীফ হত্যার বিচারকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে হয়রানি এবং তার শ্বশুরকে দিয়ে বানোয়াট কথা বলানো হচ্ছে বলে দাবি করেছেন আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি। সেই সাথে মামলার প্রধান আসামি নয়ন বন্ডের সাথে বিয়ের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন রিফাতের স্ত্রী ও মামলার প্রধান সাক্ষী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি।

    রবিবার (১৪ জুলাই) বেলা ১২টায় রিফাতের স্ত্রী বরগুনায় নয়াকাটায় নিজ বাবার বাড়িতে এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি এ অভিযোগ অস্বীকার করেন।

    রিফাতের সঙ্গে বিয়ের পরও নয়নদের বাড়িতে যাওয়ার অভিযোগ প্রসঙ্গে মিন্নি বলেন, এটা মিথ্যা ও বানোয়াট কথা। আর নয়ন বন্ডের সঙ্গে আমার যে আগে বিয়ে হওয়ার অভিযোগ করা হয়েছে, সেটাও মিথ্যা। কারণ, নয়ন বন্ড আমাকে জোর করে ধরে একটি বাড়িতে নিয়ে একটা কাগজে সই রেখেছিল। এরপর কী করেছে সেটা জানি না। পরে শুনি সেটা বিয়ের কাবিননামা।

    মিন্নি বলেন, বিয়ের দুই মাস পর স্বামীকে হারালে একজন নারীর মানসিক অবস্থা কেমন থাকতে পারে! তার ওপর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনবরত কুৎসা এবং বাজে ছবি পোস্ট দেওয়ার কথা শুনে আমি আরও বিপর্যস্ত। রিফাতকে হত্যার পর থেকেই আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আমাদের বাড়িতে পুলিশ প্রহরার ব্যবস্থা করায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও পুলিশ সুপারকে ধন্যবাদ। আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আকুল আবেদন জানাতে চাই, আমি একজন স্বামীহারা অসহায় নারী। এই সুযোগে আমার বিরুদ্ধে যারা মিথ্যাচার ও ষড়যন্ত্র করছে, তাদের বিচারের আওতায় আনা হোক।

    মিন্নি বলেন, নয়ন বন্ডকে যারা সৃষ্টি করেছেন তারা খুবই ক্ষমতাবান ও অর্থশালী। নেপথ্যের এই ক্ষমতাবানেরা বিচারের আওতা থেকে দূরে থাকতে ও এই হত্যা মামলাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে শ্বশুরকে চাপ দিয়ে মনগড়া ও বানোয়াট কথা বলাচ্ছে।

    রিফাতের স্ত্রী আরো বলেন, শনিবার রাতে বরগুনা প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে শ্বশুর আবদুল হালিম দুলাল শরীফ আমাকে জড়িয়ে যে বক্তব্য দিয়েছেন তার আমি তীব্র প্রতিবাদ জানাই।

    মিন্নি বলেন, গত ২৬ জুন আমার স্বামী রিফাত শরীফকে হত্যার ভিডিও প্রকাশ পেলে তাকে বাঁচানোর জন্য আমি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অস্ত্রের মুখে প্রতিবাদ করেছি। সেই ভিডিও দেখে সারা দেশের মানুষ আমার প্রশংসা করেছে। পরে আমার শ্বশুর নয়ন বন্ডসহ মোট ১২ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। সেই মামলার ১ নং সাক্ষী আমি।

    তিনি আরো বলেন, বর্তমানে আমার শ্বশুর অসুস্থ। তিনি তার একমাত্র সন্তানকে হারিয়ে আরো অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। যখন যা বলেন তার কোন কিছুই পড়ে মনে থাকে না।

    মিন্নি তার বক্তব্যে বলেন, হত্যাকাণ্ডের পর থেকে আসামিরা বিচারকে অন্যদিকে প্রবাহিত করার জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্নভাবে আমাকে হয়রানি করার চেষ্টা করছে।

    উল্লেখ্য, মিন্নির শ্বশুর আবদুল হালিম দুলাল বলেছিলেন, নয়নের সঙ্গে মিন্নির বিয়ে হয়েছিল। সেই বিয়ের কথা গোপন রেখে রিফাতের সঙ্গে মিন্নির বিয়ে দেয় তার পরিবার। এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে মিন্নির জড়িত রয়েছে। তাই তাকে (ছেলের বউ) গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনতে হবে।

    এদিকে আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নির গ্রেপ্তারের দাবিতে আজ বেলা ১১টায় বরগুনা প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন হয়েছে। মানববন্ধনে বক্তারা অভিযোগ করেন, রিফাত হত্যায় তাঁর স্ত্রী মিন্নি জড়িত। ‘বরগুনার সর্বস্তরের জনগণ’-এর ব্যানারে এ মানববন্ধন করা হয়। এতে অংশ নেন রিফাতের বাবা আবদুল হালিম শরীফ।

    বিএম/এমআর