স্বাধীনতার পর চট্টগ্রামে প্রথমবার থানা কমিটি করতে যাচ্ছে নগর ছাত্রলীগ

    স্বাধীনতার পর চট্টগ্রামে প্রথমবার থানা কমিটি করতে যাচ্ছে নগর ছাত্রলীগ

    বিএম স্পেশাল ডেস্ক : দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে নগর ছাত্রলীগের থানা কমিটি গঠনের গুঞ্জনে চাঙ্গা হতে শুরু করেছে ঝিমিয়ে পড়া ইউনিটগুলো, এমন দাবী করেছে চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগ।

    যুগের পর যুগ কমিটি বিহীন থাকার ফলে সাংগঠনিকভাবে বেহাল দশা থেকে উত্তরণের জন্য খুব শীঘ্রই নগরীর ১৬ টি থানা কমিটি শীঘ্রই এবং ধাপে ধাপে নগরীর ৪১ টা ওয়ার্ডে কমিটি গঠন করতে যাচ্ছে সংগঠনটি।

    এদিকে থানা কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে নগরে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে সংগঠনটির সাবেক ও বর্তমান নেতাকর্মীদের মাঝে। অচল অবস্থা কাটিয়ে ওয়ার্ড থানা কমিটিগুলো দিতে পারলে সংগঠন এগিয়ে যাবে বলে মনে করছেন সংগঠনটির একাধিক নেতাকর্মী।

    তবে সংগঠনটির একটি অংশ অভিযোগ করেন কমিটি গঠনের এ প্রাক-প্রস্তুতি সম্পর্কে তাদের সাথে আলোচনা করা হয়নি। ছাত্রলীগের যে অংশটি অভিযোগ করেছে তারা সবাই নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও চট্টগ্রাম সিটি মেয়র আ.জ.ম নাছিরের অনুসারী।

    অন্যদিকে সাবেক মেয়র প্রয়াত এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর অনুসারী হিসেবে পরিচিত নগর ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটির দাবী যারা এসব অভিযোগ করছেন তারা কখনোই সাংগঠনিক কর্মসূচীতে উপস্থিত ছিলেন না।

    এ ব্যাপারে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি ইমরান আহমেদ ইমু জানান- আমরা এর আগে বেশ কয়েক বার নগরের থানা-ওয়ার্ড-কলেজ কমিটিগুলো করার উদ্যোগ নিয়েছিলাম। কিন্তু প্রতিবারই নগর আওয়ামী লীগের সিনিয়র কয়েকজন নেতার হস্তক্ষেপে কমিটি গঠন প্রক্রিয়া ভেস্তে যায়।

    সর্বশেষ নগরীর সিনিয়র নেতাদের সাথে আলোচনা করে চলতি বছরের জানুয়ারী মাসে আমরা থানা কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করি। কমিটি গঠনের এ প্রাক-প্রস্তুতি সম্পর্কে জানে না এমন অভিযোগ যারা করছে সিটি মেয়র আ জ ম নাছিরসহ তাদের সাথে বৈঠক করেছি।

    ইমু জানান, আমরা তাদের থেকে থানা কমিটি করার জন্য নামের তালিকা চেয়েছি। কিন্তু দীর্ঘ ৬ মাস অতিবাহিত হলেও তারা এখনো পর্যন্ত কোনো নামের তালিকা দিতে পারে নি। এরই মাধ্যমে প্রমাণ হয় ওয়ার্ড থানা গুলোতে টিকে থাকার মতো তাদের নিজস্ব কোনো কর্মী বলয় নেই। সুতরাং, এ অবস্থায় ত আমরা বসে থাকতে পারি না। তাই শীঘ্রই আমরা কমিটিগুলো গঠনের প্রস্তুতি নিয়েছি। যা প্রায় শেষ পর্যায়ে।

    সিটি মেয়র আ.জ.ম নাছিরের অনুসারী হিসেবে পরিচিত মহানগর ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মিথুন মল্লিকের কাছে কমিটি গঠনের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, আমাদের সাথে আলোচনা হয়নি কথাটি পুরোপুরি সত্যি নয়। মহানগর ছাত্রলীগের সাথে আমাদের আলোচনা হয়েছে তবে ফলপ্রসু হয়নি।

    তাছাড়া এ মুহূর্ত্যে আমরা থানা কমিটি নয়, আমার চাই মহানগর ছাত্রলীগের মেয়াদ উত্তীর্ণ কমিটি ভেঙে নতুন কমিটি গঠন করতে। এ ব্যাপারে আমাদের একটা প্রতিনিধি দল কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাথেও দেখা করে এসেছে। নতুন নেতৃত্ব আসার পর তারা ওয়ার্ড-থানা-কলেজ কমিটিগুলো দিবে।

    বর্তমান মহানগর ছাত্রলীগের অধীনে কমিটি না চাইলে তাদের সাথে কেন বৈঠক করেছে জানতে চাইলে তিনি জানায়- তাদের সাথে বৈঠক করেছি সমন্বয় করার জন্য। এরপরেই চট্টগ্রাম কলেজের যে কমিটি দিয়েছিল সেখানে আমাদের কর্মীদের অবমূল্যায়ন করা হয়েছে তাই আমরা তাদের সাথে আর কোন বৈঠক বা নাম জমা দেয়ার প্রয়োজন আছে বলে মনে করিনি।

    থানা কমিটিগুলো হয়ে গেলে তাদের প্রতিক্রিয়া কি হবে এমন প্রশ্নে তিনি যখনেরটা তখন দেখা যাবে বলে ভবিষ্যতের উদ্দেশ্যে ছেড়ে দেন।

    মহানগর ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া দস্তগীর জানান- তারা যদি বলে থাকে মহানগর ছাত্রলীগ মেয়াদ উত্তীর্ণ তাহলে বলতে হয় মহানগর আওয়ামী লীগও মেয়াদ উত্তীর্ণ। তাহলে মহানগর আওয়ামী লীগ কেমনে ওয়ার্ড থানা কমিটিগুলো করার জন্য সম্মেলন দিচ্ছে এমন পাল্টা প্রশ্ন ছুড়ে দেন নগর ছাত্রলীগের এ শীর্ষ ছাত্রনেতা।

    তিনি বলেন, আমরা সংগঠনের তৃণমূলের কর্মীদের অভিশাপ নিতে পারব নাহ। যে কোন মূল্যে আমরা কমিটিগুলো গঠন করে দিব। আমরা ত সমন্বয়ই করতে চেয়েছি। সেজন্য নাছির ভাইয়ের অফিসে ঘন্টার পর ঘন্টা বৈঠক করেছি। নাছির ভাই এ বিষয়ে মিথুন মল্লিক, ওয়াহেদ রাসেল ও রেজাউল আলম রনিকে আমাদের সাথে সমন্বয় করতে বললে তাদের সাথে আমরা নগরীর স্টেডিয়াম সংলগ্ন গ্রিডি গার্ডসে আলোচনায় বসি এবং থানা কমিটি করার জন্য তাদের লিস্ট চাই।

    গত ৬ মাস তারা আমাদের ঘুরিয়েছে। আমরা আর একটি মুহূর্ত্যও অপেক্ষা করতে চাই নাহ। শীঘ্রই আমরা সংগঠনের ত্যাগী কর্মীদের দিয়ে কমিটিগুলো গঠন করব।
    এদিকে ওয়ার্ড থানা কলেজ কমিটিগুলো গঠন করে সংগঠনের অচল অবস্থা কাটিয়ে উঠবে এমন প্রত্যাশা সংগঠনটির তৃণমূল নেতাকর্মীদের।

    বিএম স্পেশাল ডেস্ক :