তাড়াশ, সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি : চলনবিলাঞ্চলের চামড়ার বাজারে ব্যাপক ধস নেমেছে। আর লোকসান গুনতে হচ্ছে মৌসুমি ব্যবসায়ীদের।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত ২০-২৫ বছরেও চামড়া নিয়ে এমন বিপর্যয় তারা দেখেননি। চামড়ার দাম কমে যাওয়ায় সব চেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছে এতিম খানা, মাদরাসা ও হতদরিদ্র মানুষেরা। এদিকে চামড়া সংরক্ষণের জন্য খোলা লবণ একাধিক সিন্ডিকেট চক্র মজুদ করে দাম বাড়ানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে।
পবিত্র ঈদুল আযহা উপলক্ষে চলবিলাঞ্চলের সিরাজগঞ্জের তাড়াশ, রায়গঞ্জ, সলঙ্গা,পাবনার ভাঙ্গুড়া, চাটমোহরসহ প্রতিটি উপজেলায় লক্ষাধিক পশু কোরবানি দেওয়া হয়েছে। প্রতি বছর সাধারণত দেখা যায় কোরবানির পরপরই সিরাজগঞ্জ ও নাটোরের চামড়ার আড়তের বড় বড় ব্যবসায়ীরা উপজেলা পর্যায়ে লোক নিয়োগ করতেন চামড়া কেনার জন্য। সেই সাথে মৌসুমী ব্যবসায়ীরা ও প্রতিযোগিতা করে চামড়া কিনতেন। কিন্তু এ বছরের চিত্র ছিল সম্পূর্ণ বিপরীত। ঈদের দিন স্থাণীয় মৌসুমি ব্যবসায়ীরা প্রতিটি গ্রাম,পাড়া-মহল্লায় ঘুরে ঘুরে চামড়া ক্রয় করছেন।
বিভিন্ন উপজেলায় ঘুরে ও খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঈদের দিন সোমবার ও পরের দিন মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত স্তুপ করে রাখা হয়েছে চামড়া। মৌসুমী চামড়া ব্যবসায়ী যারা ছিলেন তারা পানির দরে চামড়া কিনতে থাকেন।
সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলায় সদরে দেখা যায়, একটি এক লাখ টাকা দামের গরুর চামড়া তারা বিক্রি করেছেন মাত্র ৪০০ থেকে ৫০০ টাকায়। আর খাসির চামড়ার দাম ২০ টাকা থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত। এতিমখানা ও মাদরাসার লোকজন জানিয়েছেন, বিক্রির চেয়ে বেশি চামড়া মানুষ তাদের দান করেছেন। কিন্তু সেই চামড়া সংরক্ষণের জন্য যে পরিমাণ খোলা লবণের প্রয়োজন তা বাজারে না মেলায় চড়া দামে তারা কিনতে বাধ্য হচ্ছেন।
তারা আরো জানান, ৫০ কেজি এক বস্তা লবণ তারা কিনছেন ৯ শ টাকা দরে। অথচ এক সপ্তাহ আগেও এ খোলা লবণের দাম ছিল টাকা সাত শ টাকা।
তারা জানান, সঠিক দাম পেলে এতিমখানা ও লিল্লাহ বোর্ডিয়ের শিক্ষার্থীরা উপকৃত হতো। কিন্তু অবস্থা দেখে তা মনে হচ্ছে না। তবে চামড়ার বাজারে ধস নামায় সবচেয়ে বঞ্চিত হয়েছেন হতদরিদ্র মানুষেরা।
তাড়াশ পৌর সদরের মৌসুমী চামড়া ব্যবসায়ী নাজিম উদ্দিন নাজু জানান, তিনি যে দামে চামড়া কিনেছেন তার চেয়েও কম দাম বলছেন আড়ৎদারা। যার ফলে তিনি বিনিয়োগ করে বিপাকে পড়েছেন।
চামড়ার বাজার নিম্নমুখী হওয়ার প্রসঙ্গে নাটোরের চামড়া ব্যবসায়ী সিদ্দিকুর রহমান জানালেন, আন্তর্জাতিক বাজারে চামড়া চাহিদা না থাকায় দেশি চামড়ার বাজারে এ বিপর্যয়। যার ফলে তারা ও অতিরিক্ত চামড়া কেনেননি।
বিএম/প্রদীপ