আসামের বিষয়ে বাংলাদেশের দুশ্চিন্তার কোন কারণ নেই : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

    ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসামে বসবাসরত ১৯ লাখ মানুষ নাগরিকপঞ্জি (ন্যাশনাল রেজিস্টার অব সিটিজেন্স-এনআরসি) থেকে বাদ পড়ার বিষয়টি বাংলাদেশের জন্য দুশ্চিন্তার কোনো কারণ মনে করছেন না পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন।

    বিয়য়টিকে ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় বলে মন্তব্য করে মোমেন বলেন, ‘এটা আমাদের কোনো ঝুঁকিতে ফেলবে না। কারণ ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিজেই বলেছেন, এটা ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়। সুতবার বিয়টিকে আমরা সেভাবেই চিন্তা করছি। এটা নিয়ে বাংলাদেশের দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই। এর প্রভাব বাংলাদেশে পড়বে না।’

    শনিবার আসামের প্রকৃত নাগরিকদের নামের তালিকা (এনআরসি) প্রকাশিত হয়েছে। ওই তালিকায় চূড়ান্তভাবে ঠাঁই হয়েছে তিন কোটি ১১ লাখ লোকের। তালিকা থেকে বাদ পড়েছে ১৯ লাখ ছয় হাজার মানুষ। এর মধ্যে ১৭ লাখেরও বেশি বাংলাভাষী। এদেরকে স্থানীয়ভাবে বাংলাদেশি বলে দাবি করা হচ্ছে।

    আসামে বাঙালি খেদাও আন্দোলন পুরনো। এর মধ্যে নাগরিক পঞ্জিকা তৈরির কর্মযজ্ঞ শুরুর পর থেকেই বাংলাদেশে নানা প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। যাদেরকে নাগরিকের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হবে, তাদেরকে নিয়ে কী করা হবে, এ নিয়ে প্রশ্ন থাকলেও নেই জবাব।

    বাদ পড়া নাগরিকদেরকে ভারত বাংলাদেশে দিকে ঠেলে দেয় কি না, এ নিয়েও নানা আলোচনা আছে এই দেশে। জনাধিক্যে ভোগা এই দেশ মিয়ানমার থেকে আসা ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গাকে নিয়ে এমনিতেই আছে নানা ঝামেলায়। এ কারণেই ভারতের বাদ পড়া নাগরিকদের অনুপ্রবেশের শঙ্কা আছে দেশবাসীর মধ্যে।

    বাংলাদেশের উদ্বেগের মধ্যেই সম্প্রতি ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্কর বাংলাদেশ সফরে এসে বিষয়টিকে ‘ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। বলেছেন, এ নিয়ে বাংলাদেশের উৎকণ্ঠার কারণ নেই।

    জয়শঙ্করের বাংলাদেশ সফরের ১০ দিনের মাথায় আসামের চূড়ান্ত নাগরিকপঞ্জি প্রকাশিত হলো। আর জয়শঙ্কর যা বলে গেছেন, এরই মধ্যে তার বিপরীত বক্তব্য এসেছে দেশটির ক্ষমতাসীন বিজেপির শীর্ষস্থানীয় এক নেতার পক্ষ থেকে।

    ভারতীয় ক্ষমতাসীন দলের আইনজ্ঞ সেলের সদস্য বিবেক রেড্ডি নতুন এক ‘সম্ভাবনার’ কথা বলেছেন। সর্বভারতীয় এক নিউজ চ্যানেলকে তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকারকে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এনআরসি নিয়ে যে আশ্বাস দিয়েছেন, সেটাই শেষ কথা বলে মনে করার কোনো কারণ নেই। ভবিষ্যতে অনেক কিছুই হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

    বিএম/এমআর