৩২ রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে ৪১ এনজিও প্রত্যাহার

    কক্সবাজার প্রতিনিধি : পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, ‘রোহিঙ্গা সমস্যা সৃষ্টির পর ১৩৯টি এনজিও রোহিঙ্গা ক্যাম্পে তাদের কার্যক্রম শুরু করেছিল। এদের মধ্যে অপকর্মে লিপ্ত থাকায় তালিকা করে ৪১টি এনজিওকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।’

    শনিবার (৩১ আগস্ট) দুপুরে দক্ষিণ সুরমায় সিলেট সিটি করপোরেশনের মেডিক্যাল বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কার্যক্রমের উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ কথা বলেন।

    আব্দুল মোমেন বলেন, ‘এখনও বিভিন্ন এনজিও একই কাজ করছে। সে ধরনের তথ্য প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যদিও বিভিন্ন দেশি ও বিদেশি এনজিও নানাভাবে তদবির করছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়ার।

    এর আগে এনজিও ব্যুরোর বরাত দিয়ে কক্সবাজার আরআরআরসি অফিসের দায়িত্বশীল একজন উর্ধ্বতন কর্মকতা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

    তিনি জানিয়েছেন, প্রাথমিক তদন্তে এসব এনজিও’র বিরুদ্ধে প্রত্যাবাসন বিরোধী, বির্তকিত ও রাষ্ট্রের স্বার্থ বিরোধী কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগে রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পে কর্মরত মোট ১৩৯ টি এনজিও’র মধ্যে এই ৪১ টি এনজিও’র কার্যক্রম সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।

    উক্ত কর্মকর্তা জানান, সকল এনজিও এবং আইএনজিও সম্পর্কে বহুমুখী তদন্ত চলছে। সপ্তাহখানেকের মধ্যে তদন্তের চুড়ান্ত প্রতিবেদন পেলে রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পে কর্মরত আরো বেশ কিছু এনজিও’কে প্রত্যাহার ও তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হবে।

    প্রত্যাহার করা এনজিও গুলোর নাম জানতে চাইলে উক্ত কর্মকর্তা নাম প্রকাশে অস্বীকৃতি জানান। তবে ইতিমধ্যে উক্ত ৪১ টি এনজিও’কে রোহিঙ্গা শরনার্থী ক্যাম্প এরিয়া থেকে তাদের কর্মকান্ড ২৪ ঘন্টার মধ্যে সম্পূর্ণরূপে গুটিয়ে আনার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

    প্রসংগত, এর আগে আরো ৬ টি এনজিও’কে ক্যাম্প থেকে প্রত্যাহার এবং কক্সবাজারের লোকাল এনজিও মুক্তি’র ৬ টি প্রকল্প বন্ধ করে দিয়েছিলো এনজিও ব্যুরো।

    উল্লেখ্য, রাখাইনে মিয়ানমারের সেনাদের নির্যাতন হতে জীবন বাঁচাতে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট থেকে বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের ঢল নামে। কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফে আশ্রয় নেন বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী। নতুন-পুরনো মিলিয়ে এখন ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা কক্সবাজারে অবস্থান করছে। মানবিক কারণে বাংলাদেশ তাদের আশ্রয়ের পাশাপাশি সার্বিক সুযোগ-সুবিধা দিয়ে যাচ্ছে।

    দেশি-বিদেশি এনজিওর পাশাপাশি বাংলাদেশ সরকার তাদের খাদ্য, অস্থায়ী বাসস্থান, চিকিৎসা, বস্ত্র, লেখাপড়া, বিনোদনসহ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করেছে। পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের নিরাপদে রাখাইনে ফেরত পাঠাতে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে সরকার। কিন্তু রোহিঙ্গাদের অনেকেই জড়িয়ে পড়ছে অপরাধে। তাদের কাছ থেকে আগ্নেয়াস্ত্র ও ইয়াবা উদ্ধার হচ্ছে।

    বিএম/ইসলাম/আরএসপি..