বাসে ছাত্রী হেনস্তাকারী চালক আটক : বিআরটিএ ম্যাজিস্ট্রেটের প্রশংসা

    বিএম ডেস্ক : চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাস্কর্য বিভাগের চতুর্থ বর্ষের এক ছাত্রীকে হেনস্তার অভিযোগে অভিযুক্ত ১ নং রুটের এক বাস চালককে আটক করেছেন বিআরটিএ’র নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এস, এম, মনজুরুল হক।

    ছাত্রীটির অভিযোগ ছিলো, তিনি গতকাল টিউশনে যাওয়ার উদ্দেশ্যে চকবাজার থেকে ১ নং রুটের চট্টমেট্রো ছ ১১-০৫১৫ নাম্বার বাসটিতে উঠেন। বাসে উঠে অন্য কোন সিট না পাওয়ায় তিনি চালকের পাশের ইঞ্জিন বক্সের উপর বসেন।

    তিনি অভিযোগ করেন, বসার পর থেকেই চালক তার সাথে অশালীন আচরণ শুরু করে। চালক কয়েকবার ইচ্ছাকৃতভাবে ছাত্রীটির গায়ে হাত দেয়। ছাত্রীটি এর প্রতিবাদ করে সামনে এগিয়ে বসলেও চালক তার গায়ে আবারও অবাঞ্ছিতভাবে হাত দেয়। এরপর ঐ ছাত্রী সেখান থেকে পাশের সিটে সরে বসলে চালক তার দিকে অশালীন দৃষ্টিতে তাকিয়ে বক্র হাসি দেয়।

    শুধু তাই নয়, এ ছাত্রী যে সিটে বসেছিলেন চালক সেখানে হাত বুলাতে থাকে। এমন বর্ণনা দিয়ে বিশ্বিবদ্যালয়ের ঐ ছাত্রী বিআরটিএ, চট্টগ্রাম এর ফেসবুক পেইজ Magistrates of BRTA Chattogram এ অভিযোগ করেন এবং এ ঘটনার যথাযথ প্রতিকার কামনা করেন। একইসাথে এ ঘটনার বর্ণনা দিয়ে চট্টগ্রামের বহুল পরিচিত কয়েকটি গ্রুপে পাবলিক পোস্ট দেন।

    ঐ পোস্টে ফেসবুক ব্যবহারকারীদের ব্যাপক ক্ষোভ লক্ষ্য করা যায়। পাবলিক বাসে একজন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীর এরকম হেনস্তার শিকার হওয়া খুবই দুঃখজনক।

    এ পরিপ্রেক্ষিতে আজ সকালে বিআরটিএ’র নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এস, এম, মনজুরুল হক একাই অভিযান চালিয়ে উক্ত বাস মালিকের সহায়তায় অভিযুক্ত চালককে আটক করেন।

    চালকের নাম মোঃ আব্বাস, তার বাড়ি ভোলা জেলার বোরহানুদ্দীন উপজেলার মূলাপত্তন গ্রামে। আটকের পর ম্যাজিস্ট্রেট এস, এম, মনজুরুল হক হেনস্তার শিকার বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐ ছাত্রীকে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হতে বললে তিনি তার মা ও বড় ভাইকে নিয়ে সেখানে উপস্থিত হন।

    অভিযোগকারী ছাত্রীর বক্তব্য ও অভিযুক্তের বক্তব্য থেকে ছাত্রী হেনস্তার প্রমাণ মেলে। কিন্তু ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ২ জন সাক্ষীকে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে হাজির করতে না পারায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এস, এম, মনজুরুল হক অভিযুক্ত চালককে নিজে সাজা না দিয়ে নিকটবর্তী চকবাজার থানায় হস্তান্তর করে থানাকে নিয়মিত মামলা দেওয়ার নির্দেশনা দেন।

    পরবর্তীতে হেনস্তার শিকার ছাত্রীটির কাছ থেকে থানায় লিখিত অভিযোগ নিয়ে অভিযুক্ত চালকের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা দায়ের করে তাকে আদালতে চালান করে দেয়া হয়।

    নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের এরকম ত্বরিত পদক্ষেপে হেনস্তার শিকার হওয়া চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীটি অত্যন্ত সন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি জানান বিআরটিএ’র নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এত দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন তা তিনি কল্পনাও করেননি।

    তিনি গণপরিবহনে হেনস্তার শিকার সব নারীকে চুপ করে না থেকে সামনে এগিয়ে আসারও আহবান জানান। আমরা চট্টগ্রামের গণপরিবহনকে নারী ও মেয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য নিরাপদ করার লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছি। ভবিষ্যতেও গণপরিবহনে নারী হেনস্তার বিষয়ে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

    বিএম/আরএসপি..