ব্যবসায়িকে মাদক দিয়ে ছবি তুলে টাকা আদায় : এএসআই ক্লোজড

    মিরসরাই প্রতিনিধি : মিরসরাইয়ে দুই ব্যবসায়ীকে মাদক দিয়ে ছবি তুলে এক লাখ টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে জোরারগঞ্জ থানা পুলিশের এক এএসআই’র বিরুদ্ধে।

    ঘটনা সূত্রে জানা যায়, রাতের বেলায় ব্যবসা শেষ করে অপর এক বন্ধুর সাথে দেখা করার উদ্দ্যেশে মিরসরাই উপজেলার শুভব্রীজ এলাকায় যাচ্ছিলেন দুই ব্যবসায়ি বন্ধু। পথেই আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর নিয়মিত তল্লাশী। জোরারগঞ্জ থানার এএসআই শওকত আলী দুইজন পুলিশ কন্সটেবলকে সঙ্গে নিয়ে পথচারীদের দেহ তল্লাশী করছেন। এ চক্রে পড়েছেন স্থানীয় ব্যবসায়ি জামশেদ ও নুর হোসেন।

    সাধারণ ব্যবসায়ি হিসেবে পকেটে ব্যবসায়িক টাকা ছাড়া আর কিছু থাকার কথা নয়। তবে পুলিশ কায়দা করে বেশ চাটুকারিতার সাথে যাদুকরের মতোই দুই ব্যবসায়ির পকেট থেকে দুটি ফেনসিডিলের বোতল সংগ্রহ করতে সক্ষম হয়।

    এরপর দুজনকে হাতকড়া পড়িয়ে নেয়া হয় থানায়। সেখানে দুজনকে একটি টেবিলের পেছনে দাড় করিয়ে টেবিলে ফেনসিডিলের বোতল দুটি রেখে ফটোসেশন করা হয়। এরপরই শুরু হয় দেনদরবার। সর্বশেষ টাকা দিয়েই মুক্তি হয় দুই ব্যবসায়ি।

    ঘটনাটি ঘটেছে রবিবার রাতে মিরসরাই উপজেলার জোরারগঞ্জ থানাধীন শুভব্রীজ এলাকায়। ভুক্তভোগী জোরারগঞ্জ থানাধীন মেহেদীনগর গ্রামের ফয়েজ আহম্মদের ছেলে জামশেদ আলম তার বন্ধু নূর হোসেন। এদের মধ্যে জামশেদ উপরোক্ত তথ্যগুলো লিখে সোমবার (১৬সেপ্টেম্বর) মিরসরাই-জোরারগঞ্জ সার্কেলের সহকারী সিনিয়র পুলিশ সুপার বরাবরে লিখিত অভিযোগ দেন।

    লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে আরো জানা যায়, ব্রীজের পাশে দুজনকে দাঁড় করিয়ে জোরারগঞ্জ থানার এএসআই শওকত আলী দুইজন পুলিশ কন্সটেবলকে সঙ্গে নিয়ে দেহ তল্লাশী করে। দেহ তল্লাশী করে কিছু না পেয়ে এক পুলিশ কন্সটেবলকে দিয়ে শুভপুর ব্রীজের নীচ থেকে দুইটি ফেন্সিডিল আনা হয়। এরপর হাতকড়া পরিয়ে রাত সাড়ে ১০টার দিকে তাদের থানায় নিয়ে যান।

    থানায় নিয়ে ফেন্সিডিল দুইটি সামনে রেখে ছবি তুলে এবং মামলার ভয় দেখিয়ে দুই লাখ টাকা দাবি করে এএসআই শকওত আলী। পরে তারা এক লাখ টাকা দেবে বলে রাজি হয়। এরমধ্যে জামশেদ ও নূর হোসেনের পকেটে থাকা ৬৫ হাজার টাকা তাকে দেয়া হয়। পরে বন্ধুদের কাছে থেকে ধার নিয়ে ও ব্যাংকের এটিএম বুথ থেকে এক লাখ টাকা তুলে এএসআই শওকত আলীকে দিলে তারা মুক্তি পান।

    তবে এসব অভিযোগ মিথ্যা দাবী করে তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র বলে মন্তব্য করেছেন জোরারগঞ্জ থানার এএসআই শওকত আলী। তিনি বলেন, জামশেদ আলম ও নুর হোসেন নামে দুইজনকে বেশি রাতে শুভপুর ব্রিজ এলাকায় ঘুরতে দেখে থানায় আনা হয়। এরপর ওসি স্যারের সাথে কথা বলে আবার তাদেরকে ছেড়ে দেয়া হয়। এজন্য কোন টাকা পয়সা লেনদেন হয়নি। আমাকে হয়রানি করতে তারা মিথ্যা অভিযোগ তুলছেন।

    মিরসরাই-জোরারগঞ্জ থানা সার্কেলের সহকারী সিনিয়র পুলিশ সুপার সামছুউদ্দিন মো. ছালেহ আহম্মদ চৌধুরী জানান, জোরারগঞ্জ থানার এএসআই শওকত আলীকে থানা থেকে ক্লোজড করে পুলিশ লাইনে পাঠানো হয়েছে। এবং ঘটনাটি তদন্ত করা হচ্ছে।

    বিএম/আশরাফ/আরএস..