ছাত্রলীগের দুই নেত্রীর মধ্যে কোপাকুপি

    বাংলাদেশ মেইল: রাজধানীর ইডেন মহিলা কলেজে এক নেত্রীকে কুপিয়ে আহত করেছেন আরেক নেত্রী। হলে বহিরাগত ছাত্রী রাখা নিয়ে শনিবার ভোরে ছাত্রলীগের দুই নেত্রীর মধ্যে সংঘর্ষের সময় উভয়ের মধ্যে কোপানোর এ ঘটনা ঘটে। একই সংঘর্ষে আরো কয়েকজন আহত হয়েছেন। ঘটনার পর কলেজ ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

    হলের শিক্ষার্থীরা জানান, ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মাহবুবা নাসরিন রূপা বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা হলের ২১৯ নং কক্ষে নাবিলা নামের একজন বহিরাগত শিক্ষার্থীকে (প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের) টাকার বিনিময়ে রাখতেন। তাকে রাখাকে কেন্দ্র করে হলে অন্য নেত্রীদের সঙ্গে তার কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে রূপা তার অনুসারীদের নিয়ে অন্য নেত্রীদের ওপর হামলা করেন। এ সময় রূপা সাবিকুন্নাহার তামান্নার হাতে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপ দেন।

    মাহবুবা নাসরিন রূপা ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক। তার বাড়ি ঝিনাইদহ জেলায়। সাবিকুন্নাহার তামান্না ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য, তার বাড়ি বরগুনা জেলায়।

    সংঘর্ষের বিষয়ে জানতে চাইলে ইডেন কালেজ ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক রূপা সাংবাদিকদের বলেন, আমরা এমন কোনো সমর্থক তৈরি করিনি, যারা শিক্ষার্থীদের মারধর করবে। ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আঞ্জুমান আরা অনুর সর্মথকরা বঙ্গমাতা হলে গিয়ে আমার কর্মীদের ওপর হামলা করেছে। পরে হলের ২০৮ নম্বর কক্ষে গিয়ে আমার আইফোন এবং সাত হাজার পাঁচশত টাকা ছিনতাই করে নিয়ে যায়।

    নাবিলার ব্লকের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ছাত্রী বলেন, ইডেনে প্রচুর সিট বাণিজ্য হয়, এটা সবার জানা। তবে চাঞ্চল্যকর তথ্য হলো, আজকের ঘটনার মূল হোতা সেই নাবিলা মেয়েটি একজন বহিরাগত। সে টাকার বিনিময়ে হলে থাকে এবং হলের মেয়েদের শাসন করে বেড়ায়। আমরা শুধু নিজেদের সেফটির জন্য এসব বলিনা।

    জানা যায়, নাবিলাকে হলে রাখা নিয়ে অনেকদিন যাবৎ সমস্যা হচ্ছিল। শনিবার ভোরে ইডেন কলেজ শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আঞ্জুমান আরা অনুর নেতৃত্বে তার অনুসারীরা ওই হলের ২১৯ নম্বর কক্ষে গিয়ে নাবিলাকে বের হয়ে যেতে বলে এবং তাকে হুমকি দেয়। অনুর অনুসারীদের একজন ছিলেন সাবিকুন্নাহার তামান্না। এসময় তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। খবর পেয়ে ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক রুপা দৌড়ে যান ২১৯ নম্বর কক্ষে। রুপা সেখানে গেলে তাদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা সৃষ্টি হয়। কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে সাবিকুন তামান্নাকে ছুরি দিয়ে কোপ দেয় রুপা। পরে অন্যপক্ষ রুপার গ্রুপের কর্মীদের ওপর পাল্টা হামলা করে।

    এ ঘটনায় বহিরাগত নাবিলাকে লালবাগ থানায় হল প্রশাসনের মাধ্যমে সোপর্দ করা হয়। অন্যদিকে রুপার রুম ভাঙচুর করে তাকে মেরে হল থেকে বের করে দেয়ারও অভিযোগ উঠেছে।