যুক্তরাজ্যের নির্বাচন
    জরিপে এগিয়ে লেবার পার্টি, ঝুলন্ত পার্লামেন্টের আশংকা

    বাংলাদেশ মেইল || ডেস্ক :

    আগামী ১২ ডিসেম্বরের সাধারণ নির্বাচনকে ঘিরে প্রচারণায় ব্যস্ত রয়েছে যুক্তরাজ্যের রাজনৈতিক দলগুলো। যুক্তরাজ্যের জাতীয় নির্বাচনের জরিপে কনজারবেটিভ পার্টির সমর্থন ক্রমাগত কমছে। বিপরীতে বেড়ে যাচ্ছে লেবার পার্টির সমর্থন। প্রচারণায় ক্রমেই এগিয়ে যাচ্ছেন লেবার নেতা জেরেমি করবিন। এক বিশেষ জরিপের পর ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য ইন্ডিপেনডেন্ট বলছে, শেষ পর্যন্ত বরিস জনসনের দল সর্বোচ্চ সংখ্যক আসন পেলেও ঝুলন্ত পার্লামেন্টের আশঙ্কা রয়েছে।

    ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে ভোটার নিবন্ধন। চলমান নির্বাচনি প্রচারণা ও বিতর্কে ইসলাম বিদ্বেষ ও ইহুদি বিদ্বেষের অভিযোগ উঠেছে কনজারভেটিভ ও লেবার পার্টির মতো বড় দলগুলোর বিরুদ্ধে।

    সর্বশেষ জরিপে প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের দল কনজারভেটিভ পার্টি লেবার পার্টি থেকে মাত্র ৬ পয়েন্ট এগিয়ে আছে। সপ্তাহখানে আগের জরিপে কনজারভেটিভরা ১৩ পয়েন্ট এগিয়ে ছিল। জরিপগুলোতে ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে বিরোধী লেবার পার্টির মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস পাওয়া যাচ্ছে।

    স্বনামধন্য জরিপ সংস্থা বিএমজি রিসার্চের জরিপে দেখা গেছে, জেরেমি করবিন ক্রমাগত ভোটারদের সমর্থন আদায়ে সক্ষম হচ্ছেন যা অন্যান্য দলগুলোর জন্য ঝুঁকির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

    জরিপ বিশেষজ্ঞরা বলছেন হাউজ অব কমন্সে সংখ্যাগরিষ্ঠতা ধরে রাখা এবং জানুয়ারিতে ব্রেক্সিট বাস্তবায়ন করতে চাইলে অন্তত ৬ পয়েন্ট এগিয়ে থাকতেই হবে বরিস জনসনকে। বিএমজির জরিপ প্রধান রবার্ট স্ট্রুদার বলেন, ১২ ডিসেম্বরকে সামনে রেখে লেবার পার্টির জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পাবে এমন আলামত স্পষ্ট হতে শুরু করেছে। তিনি বলেন, ‘আমরা যে পরিবর্তন দেখছি তাতে করে কনজারভেটিভ পার্টি সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলেও পার্লামেন্ট হবে ঝুলন্ত।’

    এমন এক সময়ে এই জরিপের ফলাফল সামনে এলো, যখন সমালোচনায় জর্জরিত জনসন। অবিবাহিত মা এবং কর্মজীবী পুরুষদের নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করা থেকে শুরু করে অ্যান্ড্রু নিলকে নিয়ে কথা বলেও সমালোচনার শিকার হয়েছেন তিনি। এছাড়া লন্ডন ব্রিজে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনাতেও চাপের মুখে রয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী।

    দ্য ইন্ডিপেনডেন্ট-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কনজারভেটিভ দলের স্ট্র্যাটেজিস্টরা মঙ্গলবার লন্ডনে অনুষ্ঠিতব্য ন্যাটো সম্মেলনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অংশগ্রহণ নিয়েও একটু চিন্তিত। কারণ ট্রাম্প কখন কী বলে বসেন, সে ব্যাপারে কিছুই বলা যায় না। শুক্রবার বরিস জনসন নিজেই ট্রাম্পকে আহ্বান জানিয়েছিলেন যেন তিনি নির্বাচনে হস্তক্ষেপ না করেন।

    বিএমজি জরিপে দেখা যায়, লিবারেল ডেমোক্রেটরা তাদের সমর্থন হারাচ্ছে। ইতোমধ্যে পাঁচ পয়েন্ট পিছিয়ে গেছে তারা। ব্রেক্সিট পার্টি মাত্র চার শতাংশ সমর্থন নিয়ে আছে সবার নিচে। আর তাদের থেকে একটু এগিয়ে পাঁচ শতাংশ সমর্থন গ্রিনদের। জো ‍সুইনসনের দল লিবারেল ডেমোক্রেট আরও বেশি জনপ্রিয়তা আশা করছিলো। তবে জরিপের তথ্য অনুযায়ী লেবার পার্টিই এগিয়ে চলছে। গত সপ্তাহের ৩৯ শতাংশ থেকে এখন তাদের স্কোর ৪৬ শতাংশ।

    লিবারেল ডেমোক্রেটদের জনপ্রিয়তা হারানোয় কনজারভেটিভরা শঙ্কিত কারণ এতে করে লেবার পার্টি এগিয়ে যাচ্ছে এবং ব্রেক্সিট নিয়ে চূড়ান্ত গণভোটের সম্ভাবনা প্রবল হচ্ছে। স্ট্রুদার বলেন, লেবার ভোটাররা ফিরছেন। ২০১৭ সালে যারা তাদের ভোট দিয়েছেন, তাদের মধ্যে ৭৩ শতাংশ এবারও একই পথে হাঁটতে চায়। এক সপ্তাহ আগেই এই সংখ্যা ছিলো ৬৭ শতাংশ।

    অন্যদিকে কনজারভেটিভদের সমর্থন খুব বেশি বাড়ছে না। তাদের প্রতি ব্রেক্সিট দলগুলোর সমর্থন রয়েছে। তবে কনজারভেটিভ নিয়ন্ত্রিত আসন থেকে নাইজেল ফারাজ নিজেদের প্রত্যাহারের ঘোষণা দেওয়ার পর পরিস্থিতি অন্যরকম হয়েছে। যুক্তরাজ্য ত্যাগ করতে চাওয়াদের মধ্যে ৭০ শতাংশ সমর্থন রয়েছে তাদের। লেবার পার্টি তাদের মধ্যে ১৭ শতাংশকে নিজেদের দিকে টানতে পেরেছে।