হবিগঞ্জে সভাপতি জাহির, সম্পাদক আলমগীর
    আওয়ামী লীগে দূষিত রক্ত রাখব না-ওবায়দুল কাদের

    হুশিয়ারি দিলেন সেতুমন্ত্রী
    ফাইল ছবি

    আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে সারা দেশে চলমান শুদ্ধি অভিযান সফল করব। এখন দরকার ক্লিন ইমেজের পার্টি। আমরা আওয়ামী লীগে দূষিত রক্ত রাখব না। বিশুদ্ধ রক্ত সঞ্চালন করব।

    নেতাদের কর্মীবান্ধব হতে হবে। ঘরের ভেতর ঘর করা যাবে না। পকেট কমিটি করা যাবে না। আওয়ামী লীগে খারাপ লোকের দরকার নাই। দলে কোনো টেন্ডারবাজ, চাঁদাবাজ, জমি দখলকারী, সংখ্যালঘু নির্যাতনকারী, দুর্নীতিবাজ, সন্ত্রাসী ও মাদক কারবারির দরকার নেই।’ গতকাল বুধবার দুপুরে হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

    প্রধান অতিথির বক্তব্যে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘দল ভারী করতে খারাপ লোককে দলে আনা যাবে না। মনে রাখতে হবে, শেখ হাসিনা আপনাদের নেতা ও এমপি বানিয়েছেন নিজের পকেটের উন্নয়নের জন্য নয়, জনগণের ভাগ্য উন্নয়নের জন্য। কর্মীরা যেন নেতার কাছে এসে তাদের কথা বলতে পারে। তারা যেন ভয় না পায়। তাদের দুঃখের কথা শুনতে হবে।’

    তিনি আরো বলেন, ‘বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুলের বক্তব্য শুনে এটাই মনে হয়, বানরে সংগীত গায়, শিলা পাথরে ভাসে। বিএনপি নাকি মাইনরিটি (সংখ্যালঘু) বান্ধব সরকার ছিল। ২০০১ সালে বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল তখন যেভাবে মাইনরিটি নির্যাতন, ধর্ষণ ও লুণ্ঠন করেছে তা শুধু একাত্তরের বর্বরতার সঙ্গে তুলনীয়। সেই সময় নিষ্ঠুরতায় বিএনপি নতুন রেকর্ড করে। শেখ হাসিনা মাইনরিটিদের সবচেয়ে আপনজন।’

    হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে নিমতলায় এর আগে সেতুমন্ত্রী জাতীয় পতাকা উত্তোলন, পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. আবু জাহিরের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুল মজিদ খানের সঞ্চালনায় সম্মেলনে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ।

    বিশেষ অতিথি ছিলেন দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য নুরুল ইসলাম নাহিদ, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট মাহবুব আলী এমপি, অ্যাডভোকেট মিসবা উদ্দিন সিরাজ, অধ্যাপক রফিকুর রহমান, শাহনেওয়াজ মিলাদ গাজী এমপি, শেখ নেছার আহমেদ এমপি।

    প্রধান বক্তা মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, “পাকিস্তান জিন্দাবাদ স্লোগান জিয়াউর রহমান চালু করেছিলেন। আর যে স্লোগানে দেশ স্বাধীন হয়েছিল সেই ‘জয় বাংলা’ স্লোগানকে নিষিদ্ধ করেছিলেন। যারা ‘জয় বাংলা’ স্লোগান বুকে ধারণ করতে পারে না তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করতে পারে না। তারা জয় বাংলাতে ভয় পায়।”

    নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, ‘আগামী দিনের যে বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখি তা আওয়ামী লীগকেই গড়ে তুলতে হবে। এই সরকার উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার জন্য কাজ করছে।’

    জেলা আওয়ামী লীগের নতুন কমিটি : জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন শেষে জেলা পরিষদ মিলনায়তনে কাউন্সিল অধিবেশনের জন্য প্রস্তুতি থাকলেও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সম্মেলনস্থলেই নতুন কমিটি ঘোষণা করেন। তিনি প্রধান অতিথির বক্তৃতা রাখার আগে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে আগ্রহী প্রার্থীদের তালিকা নিয়ে চলে যান সার্কিট হাউসে।

    প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আলোচনা করার পর ফের মঞ্চে এসে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন। বক্তব্য শেষে বর্তমান কমিটিকে বিলুপ্ত করে নতুন কমিটির নাম ঘোষণা করেন। এতে বর্তমান সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. আবু জাহির এমপিকে সভাপতি এবং সহসভাপতি অ্যাডভোকেট আলমগীর চৌধুরীকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করা হয়। একই সঙ্গে বর্তমান সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুল মজিদ খানকে জাতীয় কমিটির সদস্য করা হয়।

    জেলা আওয়ামী লীগের সর্বশেষ কাউন্সিল ও সম্মেলন হয়েছিল ২০১৩ সালের ১৩ জুন। কাউন্সিলে গোপন ভোটে অ্যাডভোকেট মো. আবু জাহির সভাপতি এবং অ্যাডভোকেট মো. আব্দুল মজিদ খান সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলেন।