শবে বরাতের নামাজের নিয়ম

    বাংলাদেশ মেইল ::

    আজ পবিত্র শবে বরাত। নিচে শবে বরাতে নামাজের নিয়ম দেয়া হলো –

    সন্ধ্যায় : এই রাতে মাগরিব নামাজের পর হায়াতের বরকত, ঈমানের হেফাযত এবং অন্যের মুখাপেক্ষী না হওয়ার জন্য দুই রাকাত করে মোট ৬ রাকাত নফল নামায পড়া উত্তম।

    এই ৬ রাকাত নফল নামাজের নিয়ম : প্রতি রাকাতে সূরা ফাতিহা এরপর যে কোন একটি সূরা পড়তে হবে। দু রাকাত নামায শেষে করে সূরা ইয়াছিন বা সূরা ইখলাছ শরীফ ২১ বার তিলায়াত করতে হবে।

    শবে বরাতের নফল নামাজ

    ১। দুই রাকাত তহিয়াতুল অযুর নামাজের নিয়ম : প্রতি রাকাতে আল হামদুলিল্লাহ ( সূরা ফাতিহা) পড়ার পর, ১ বার আয়াতুল কুরসী এবং তিন বার ক্বুলহু আল্লাহ শরীফ (সূরা এখলাছ)।

    ফযীলত : প্রতি ফোটা পানির বদলে সাতশত নেকী লিখা হবে।

    ২। দুই রকাত নফল নামাজের নিয়ম : ১নং নামাযের মত, প্রতি রাকাতে সূরা ফাতিহা পড়ার পর, ১ বার আয়াতুল কুরসী এবং ১৫ বার করে সূরা এখলাছ শরীফ, অতঃপর সালাম ফিরানোর পর ১২ বার দুরূদ শরীফ।

    ফযীলত : রুজিতে রবকত, দুঃখ-কষ্ট হতে মুক্তি লাভ করবে, গুনাহ হতে মাগফিরাতের বখসিস পাওয়া যাবে।

    ৩। ৮ রাকাত নফল নামাজ, দু রাকাত করে পড়তে হবে নিয়ম : প্রতি রাকাতে সূরা ফাতিহার পর , সূরা এখলাছ ৫ বার করে। একই নিয়মে বাকি সব।

    ফযীলত : গুনাহ থেকে পাক হবে , দু’আ কবুল হবে এবং বেশী বেশী নেকী পাওয়া যাবে।

    ৪। ১২ রাকাত নফল নামাজ, দু রাকাত করে নিয়ম : প্রতি রাকাতে সূরা ফাতিহার পর, ১০ বার সূরা এখলাছ এবং এই নিয়মে বাকি নামায শেষ করে , ১০ বার কালিমা তওহীদ, ১০ বার কালিমা তামজীদ এবং ১০ বার দুরূদ শরীফ।

    ৫। ১৪ রাকাত নফল নামাজ, দু রাকাত করে নিয়ম : প্রতি রাকাত সূরা ফাতিহার পর যে কোন একটি সূরা পড়ুন।

    ফযীলত : যে কোন দু’আ চাইলে তা কবুল হবে।

    ৬। চার রাকাত নফল নামাজ, ১ সালামে পড়তে হবে নিয়ম : প্রতি রাকাতে সূরা ফাতিহা পর ৫০ বার সূরা এখলাছ শরীফ।

    ফযীলত : গুনাহ থেকে এমনভাবে পাক হবে যে সদ্য মায়ের গর্ভ হতে ভূমিষ্ঠ হয়েছে।

    ৭। ৮ রাকাত নফল নামাজ, ১ সালামে নিয়ম : প্রতি রাকাতে সূরা ফাতিহার পর ১১ বার সূরা এখলাছ শরীফ।

    ফজিলত : এর ফজিলতে সর্ম্পকে বর্ণিত আছে যে, হযরতে সৈয়্যদাতুনা ফাতেমা রাদিআল্লাহু আনহুমা এরশাদ করেছেন, আমি ওই নামাজ আদায় কারীর সাফায়াত করা ব্যতীত জান্নাতে কদম রাখব না। রোযার ফজিলত হুজুর সালল্লাহু তা’আলা আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেছেন, যে শাবানে ১ দিন রোযা রেখেছে, তাকে আমার সাফায়াত হবে। আরো একটি হাদীস শরীফে আছে যে, হুজুর সালল্লাহু তাআলা আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি শাবানের ১৫ তারিখে রোযা রাখবে, তাকে জাহান্নামের আগুন ছোঁবে না। এছাড়াও পড়তে পারেন ‘সালাতুল তাসবীহ এর নামাজ। এই নামাজের অনেক অনেক ফজিলত রয়েছে।

    রাসূলুল্লাহ সালল্লাহু তা’আলা আলাইহি ওয়া সাল্লাম স্বীয় চাচা হযরত আব্বাস রাদিআল্লাহু আনহুকে এই নামায শিক্ষা দিয়েছিলেন এবং বলেছিলেন যে, এই নামায পড়লে আল্লাহ আয-যাওযাল আপনার আউয়াল আখেরের সগীরা কবীরা জানা অজানা সকল গুণাহ মাফ করে দিবেন।

    হে চাচা জান! আপনি যদি পারেন, তবে দৈনিক একবার করে এই নামায পড়বেন। যদি দৈনিক না পারেন, তবে সপ্তাহে একবার পড়বেন। যদি সপ্তাহে না পারেন, তবে মাসে একবার পড়বেন। যদি মাসে না পারেন, তবে বছরে একবার পড়বেন। যদি এটাও না পারেন, তবে সারা জীবনে একবার হলেও এই নামায পড়বেন ( তবুও ছাড়বেন না)।

    শবে বরাতের নামাজের নিয়ত : কথায় আছে- নিয়তেই বরকত। তাই যেকোনও ভালো কাজ করার আগে নিজের নিয়ত স্থির করতে হবে। আপনি যে নামাজ পড়ার উদ্দেশ্যে দাড়িয়েছেন মনের মধ্যে এমন ভাব আনলেই আপনার নিয়ত হয়ে যাবে। আরবি, বাংলা যে কোন ভাষাতেই নিয়ত করতে পারেন। বাংলায় নিয়ত করলে এই ভাবে করতে পারেন: “শবে বরাতের দুই রাকাত নফল নামাজ/ সালাত কিবলামুখী হয়ে পড়ছি, আল্লাহু আকবর”।

    – মাওলানা জসিম উদ্দিন