চট্টগ্রামে পিসিআর ল্যাব স্থাপনে ধনাঢ্যদের এগিয়ে আসতে কড়জোড় মিনতি সুজনের

     

    চট্টগ্রাম মেইলঃ করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষায় অত্যাবশ্যকীয় পিসিআর ল্যাব স্থাপনে এগিয়ে আসতে চট্টগ্রামের ধনাঢ্য ব্যবসায়ীদের প্রতি করজোড়ে অনুরোধ জানিয়েছেন নাগরিক উদ্যোগের প্রধান উপদেষ্টা ও চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন। তিনি আজ বৃহস্পতিবার (১১ই জুন ২০২০ইং) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ অনুরোধ জানান।

    এ সময় জনাব সুজন বলেন চট্টগ্রাম বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম নগরী। বাণিজ্যিক রাজধানী খ্যাত এই নগরীতেই দেশের বৃহত্তম বন্দর, কাস্টমস, ইপিজেড, তেল শোধনাগার, নৌ-বিমান ঘাটি, ইস্পাত শিল্প, জাহাজ ভাঙ্গা শিল্পসহ ছোট বড়ো আরো অনেক শিল্প প্রতিষ্টান অবস্থিত। স্বাভাবিকভাবেই জীবন জীবিকার তাগিদে এখানে প্রচুর লোকের বসবাস। বর্তমানে করোনাভাইরাসের সংক্রমণকালীন সময়ে এতো বিপুল পরিমান জনগোষ্ঠীর নমুনা পরীক্ষায় হিমশিম খাচ্ছে চট্টগ্রামের স্বাস্থ্য বিভাগ। দেখা যাচ্ছে যে নমুনা সংগ্রহ করার পর রিপোর্ট আসতে সর্বোচ্চ সাতদিন থেকে দশদিন পর্যন্ত সময় লাগছে। এতে করে রিপোর্টের যথার্থতা নিয়েও রোগীর মনে সন্দেহ কাজ করছে। আবার প্রায়শই নমুনা খোয়া যাওয়ার মতো ঘটনাও ঘটছে। বিশেষ করে চট্টগ্রামে যে হারে নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে সে হারে পরীক্ষার সুযোগ নেই। প্রতিদিনই তিন চারগুণ নমুনা পরীক্ষা বিহীন অবস্থায় উদ্বৃত্ত থেকে যাচ্ছে। এভাবে নমুনার স্তুপ জমে যাচ্ছে পরীক্ষাগারসমূহে। আবার পরীক্ষায় সময়ক্ষেপণ হওয়ার ফলে নমুনা পরীক্ষা শতভাগ ক্রুটিমুক্ত না হওয়ার সম্ভাবনাও প্রবল। তাছাড়া নমুনা দেওয়ার পর সম্ভাব্য করোনা রোগীরা ঘুরে বেড়াচ্ছেন প্রকাশ্যে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে আক্রান্তদের শরীরে তেমন উপসর্গ না থাকায় অনেকে বুঝতেও পারছেন না তিনি করোনা পজিটিভ কি না। ফলে ওই ব্যক্তি একদিকে নিজের পরিবারসহ অন্যদের সংস্পর্শে গিয়ে সংক্রমণ ছড়াচ্ছেন অন্যদিকে অন্যদেরও সংক্রমিত করছেন। আর এতে করেই বন্দর নগরী চট্টগ্রামে প্রতি দিনই বাড়ছে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ। এ পরিস্থিতিতে চট্টগ্রামবাসীকে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে রক্ষা করতে দ্রুততার সাথে পিসিআর ল্যাব বসিয়ে নমুনা পরীক্ষার আওতা বাড়ানো ছাড়া আর কোন বিকল্প নেই। এক্ষেত্রে চট্টগ্রামের ধনাঢ্য ব্যবসায়ীদের মানবিকতার সাথে এখনই এগিয়ে আসার উপযুক্ত সময় বলে মত প্রকাশ করেন তিনি। তিনি আরো বলেন চট্টগ্রামবাসীর প্রতি আপনাদের অনেক দায়িত্ব ও কর্তব্য রয়েছে যেটা ভূলে গেলে চলবে না। এখনই সময় চট্টগ্রামের মানুষের পাশে দাড়ানোর। তিনি চট্টগ্রামের বিভিন্ন শিল্পগ্রুপের মালিকের প্রতি আহবান জানিয়ে বলেন একটি পিসিআর ল্যাব স্থাপনে সর্বোচ্চ এক কোটি টাকার বেশী লাগার কথা নয়। আর মানবতার হাত প্রসারিত করার লক্ষ্যে এক কোটি টাকা আপনার প্রতিষ্টানের জন্য কিছুই না। দয়া করে আপনারা আর নিশ্চুপ না থেকে উদ্যোগী হয়ে কাজে নেমে পড়বেন এটাই চট্টগ্রামবাসীর প্রত্যাশা। আর যে সকল মহৎ হৃদয়ের ব্যক্তিগণ উদ্যোগী হয়ে পিসিআর ল্যাব স্থাপনে এগিয়ে আসবেন চট্টগ্রামের আপামর জনগন তাদের প্রতি সারাজীবন কৃতজ্ঞতার পাশে আবদ্ধ থাকবে বলেও আশা প্রকাশ করেন জনাব সুজন। এছাড়া বিভিন্ন প্রাইভেট কোম্পানীও বাণিজ্যিক ভাবে পিসিআর ল্যাব স্থাপনে এগিয়ে আসতে পারেন বলেও মত প্রকাশ করেন তিনি। প্রয়োজনে ফি লাগুক তারপরও নমুনা পরীক্ষা হোক সেটাই সর্বস্তরের নাগরিকের প্রত্যাশা। দয়া করে প্রধানমন্ত্রীর দিকে তাকিয়ে থাকবেন না। প্রধানমন্ত্রী সবসময়ই চট্টগ্রামের উন্নয়নের প্রতি আন্তরিক। চট্টগ্রামের উন্নয়নে ইতিহাসের সর্বোচ্চ সংখ্যক বরাদ্ধ প্রদান চট্টগ্রামবাসীর প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিকতাই প্রমাণ করেন। যতবার তিনি চট্টগ্রামে এসেছেন ততবার তিনি উন্নয়নের বার্তা নিয়ে এসেছেন। তিনি চট্টগ্রামের ব্যবসা বাণিজ্য সম্প্রসারণেও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে আন্তরিক। তার দিকনির্দেশনায় চট্টগ্রাম পৃথিবীর একটি আকর্ষনীয় উন্নত নগরীতে পরিণত হবে অচিরেই। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রীর একার পক্ষে সবকিছু সামাল দেওয়া অনেক ক্ষেত্রেই অসম্ভব। তাই আপনারা দয়া করে উদ্যোগী হোন, মানবিক দায়িত্ব নিয়ে এগিয়ে আসুন। চট্টগ্রামবাসীকে বাঁচাতে আপনাদের হৃদয়ের সবটুকু মমত্ব উজাড় করে দিন।

    তিনি বেসরকারি হাসপাতাল মালিকদেরও পিসিআর ল্যাব স্থাপনে এগিয়ে আসার উদ্যোগ নেওয়ার আহবান জানান। অন্তত অর্থের বিনিময়ে হলেও চট্টগ্রামের মানুষের করোনা পরীক্ষার কাজে আপনারা এগিয়ে আসুন। এছাড়া সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক শেভরন হাসপাতালে করোনা নমুনা পরীক্ষা করার কথা থাকলেও অদ্যাবধি তারা সে কার্যক্রম চালু করতে পারেনাই। তিনি দ্রুততম সময়ের মধ্যে শেভরন হাসপাতালকে করোনার নমুনা পরীক্ষা শুরু করারও অনুরোধ জানান।